সংবাদ শিরোনাম ::
রায়পুরায় রেলওয়ের পুকুর দখলের চেষ্টা
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময় : ০৮:৩৩:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩ ৪২ বার পড়া হয়েছে
রায়পুরা (নরসিংদীর) সংবাদদাতা:
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের খানা বাড়ি রেলস্টেশন এলাকায় রেলওয়ের সরকারি পুকুর দখলের চেষ্টা করছেন স্থানীয় জামিল সৈকত নামে প্রভাবশালী ব্যক্তি।
পুকুরে মাছ চাষ বন্ধ করে সেখানে গাছ লাগিয়ে বেড়া দিয়ে পুকুরটি দখলের চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছেন পুকুরের মালিক মাছ চাষী সিদ্দিক মিয়া।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মির্জানগর ইউনিয়নে খানাবাড়ি স্টেশন অবস্থিত। স্টেশনের পাশ দিয়ে রেলওয়ের নিজস্ব জায়গার উপর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে রায়পুরা-নরসিংদী আঞ্চলিক সড়ক। এর পাশেই উত্তর মিজার্নগর মৌজায় খুটি নং-২৫৫/৯ ও ২৫৬/১ এ খতিয়ান নং-১১৫১। একাধিক দাগে প্রায় ০.৪৬ একর জায়গায় রেলওয়ের পুকুর অবস্থিত। ওই পুকুরে দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছেন মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামের আবুল কাশেম এর ছেলে ছিদ্দিক। হঠাৎ করে বাধ সাজে একই এলাকার প্রভাবশালী আব্দুস ছামাদ এর ছেলে মোঃ জামিল সৈকতের। ভোগদখলে থাকা ও মাছ চাষী ছিদ্দিক মিয়াকে না জানিয়ে জামিল সৈকত ও তার লোকজনেরা রাতের আধাঁরে পুকুরের চারপাশে চারাগাছ ও বেঁড়া লাগিয়ে দখলের চেষ্টা করেন। পরে ভুক্তভোগী ছিদ্দিক মিয়া রায়পুরা থানায় উপস্থিত হয়ে জামিল সৈকতকে প্রধান আসামী করে ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
এবিষয়ে ছিদ্দিক মিয়া প্রতিনিধিকে জানান, আমার বাব-দাদার জমির উপর পুকুরটি। রেলওয়ের প্রয়োজনে আমাদের জমি একুয়ার করে। কিন্তু জমিটি দীর্ঘদিন ধরে পতিত ছিল। গত ৫ বছর পূর্বে মাটি কেটে পুকুর নির্মাণ করে মাছ চাষ করে আসছি। বর্তমানে পুকুরটিতে বিভিন্ন প্রকার প্রায় ৪/৫ লক্ষ টাকার মাছ আছে। কিন্তু আমাকে বা আমাদের পরিবারকে জানিয়ে রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের মেনেজ করে গোপনে লিজ নিয়ে আসে পূর্বকান্দি গ্রামের জামিল সৈকত। এরপর থেকেই পুকুরটি তার দখলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে সে দলবল নিয়ে আক্রমন কর আসছে। পরে আমি বিষয়টি রেলওয়ে বিভাগীয় কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। পরে এ বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় ভূ সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ সফি উল্লা আগামী ১৭ আগস্ট সকাল ১১ টায় জামিল সৈকতকে বিভাগীয় অফিসে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রধান করেন। আমার বাব-দাদার জমি আমাকে লিজ না দিয়ে পূর্বকান্দি গ্রামের জামিল সৈকত নামে ভূমিদস্যুকে লিজ দিয়ে এখানে বিরোধ সৃষ্টি করেছেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তর মির্জানগর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ জামিল সৈকত একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার ভয়ে গ্রামের লোকজন সহজে মুখ খুলতে সাহস পায়না। সে পূর্বে জামাত-শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। রায়পুরা উপজেলা ছাত্র শিবিরের একজন প্রথম সারির নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় অনেকটা গা ডাকা দিয়ে ছাত্র শিবিরের রাজনীতি থেকে সরে এসে নিজ গ্রামে ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের লোকজন নিয়ে সামাজিক সংগঠন তৈরি করেন। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে মির্জানগর বাজার ও আশপাশ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে নিরীহ মানুষের ভূমি দখল সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকেন বলে জানা যায়।
এবিষয়ে জানতে জামিল সৈকত এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অপরদিকে পুকুর দখলকে কেন্দ্র করে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এবং এসব বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ জোড়ালো ভূমিকা রাখবেন বলে এমটাই প্রত্যাশা করেন এলাকাবাসী।