ঢাকা ০৭:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ: অপসরন চেয়ে সারা দেশে চলছে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ  আজ মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা: রাজশাহীতে দেবীর চরণে ভক্তের শ্রদ্ধা রাউজানে মন্ডপে মন্ডপে চলছে দূর্গাপূজা রায়গঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ৫ জনকে কারাদন্ড টেকনাফে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অস্ত্রদিয়ে ফাঁসানো নিরপরাধ শহিদুল্লাহর মুক্তির দাবি নেতাদের শিক্ষক উন্নয়নের জন্য ইউনেস্কো-হামদান পুরস্কার পেয়েছে ‘গুড নেইবারস বাংলাদেশ’ বেলকুচিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভন্ড কবিরাজের বাড়িতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযান   বিশ্ব শিক্ষক দিবসে নিজ সহকর্মিদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন গুণী শিক্ষক শওকত আলী বদির ক্যাশিয়ার ফারুককে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হলেন র‍্যাব সদস্যরা

জাপাকেও বশীভূত করলেন পিটার হাস

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৩:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩ ৪০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুজন কংগ্রেসম্যান যখন বাংলাদেশ সফর করছেন সেই সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। গতকাল দুই কংগ্রেসম্যান রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এই ফাঁকে পিটার ডি হাস ছুটে যান জাপা চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা মাসরুর মাওলার গুলশানের বাসভবনে। সেখানে তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। পিটার ডি হাস বাংলাদেশে আসার পরেই বিরামহীন সময় কাটাচ্ছেন। তার জন্য কোন ফুসরত নাই। এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য যেখানে যাওয়া দরকার, যা করা দরকার সবকিছু তিনি করেছেন। যেমন- মানবজমিনের মত একটি ট্যাবলেট পত্রিকা অফিস সফর করতে তিনি কার্পণ্য করেননি। মায়ের ডাকের মত বিতর্কিত সংগঠনের নেতার বাসভবনে যেতেও তিনি কুণ্ঠা বোধ করেননি। আর পিটার হাসের এই অপ্রতিরোধ্য যাত্রাকে ঠেকাবে কে?

জাতীয় পার্টির সঙ্গে তার বৈঠকটিও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মাসরুর মাওলা বলেছেন, এটি একটি ফলো-আপ বৈঠক। বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টির চিন্তা কি তা জানতে চান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব সম্পর্কে তার অভিমত ব্যক্ত করেন।,

জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটি এখন সংসদে প্রধান বিরোধী দলও বটে। আর এইরকম একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক হতেই পারে। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোভাব কি, এটি নিয়ে আলাদা করে বৈঠক করার প্রয়োজন আছে কিনা তা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া পিটার ডি হাস সকলের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যাখ্যা করছেন কেন? নির্বাচনের এখনো ৪ মাসের বেশি সময় রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এধরনের বৈঠক কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সেই প্রশ্নটিও উঠেছে।,

বিভিন্ন মহল মনে করছেন যে, আওয়ামী লীগকে একঘরে করার জন্য মার্কিন দূতাবাস একটি গোপন মিশন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে এবং সেই মিশনের অংশ হিসেবেই এ জাতীয় পার্টির সাথে বৈঠক করা হয়েছে।,

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ইতিমধ্যে বিএনপি সহ ৩৪টি রাজনৈতিক দলগুলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উচ্চারণ করেছে এবং তারা বলেছে যে, এই দাবি আদায় ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ যে ইসলাম পর্ষদ রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করেছিল সেই দলগুলো আস্তে আস্তে পিছু হটতে শুরু করেছে। বিশেষ করে খেলাফত আন্দোলন বরিশাল সিটি নির্বাচনের পর এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জামায়াতে ইসলামকে নিয়েও আওয়ামী লীগের কৌশল ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। কারণ জামায়াতে ইসলাম এখন নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা করেছে। তাছাড়া জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতার কথা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয়েছে। বিশেষ করে ভারত এই বিষয়টি মোটেও পছন্দ করেনি। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জামাতকেও নির্বাচনের মাঠে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতে পারছে না।,

আওয়ামী লীগের হাতে এখন আছে তাদের মহাজোট। যে মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি যদি নির্বাচন বর্জন করে তাহলে পরে নির্বাচন বানচাল করে একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার মিশন বেশ সফল হবে। তাহলে কি সেই মিশনেই এখন মার্কিন রাষ্ট্রদূত? পিটার ডি হাস কি জাপাকে বশীভূত করে ফেললেন? এটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। তবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের কিছুদিন ধরেই নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় এমন কথাও বলছিলেন। যেহেতু জাতীয় পার্টির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসরুর মাওলা বলেছেন যে, এটি ফলো-আপ বৈঠক। কাজেই এই ফলো-আপ বৈঠকে কি মার্কিন রাষ্ট্রদূত জাপাকেও জাতীয় নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে আনার জন্য বশীভূত করলেন?

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জাপাকেও বশীভূত করলেন পিটার হাস

আপডেট সময় : ০৭:৫৩:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুজন কংগ্রেসম্যান যখন বাংলাদেশ সফর করছেন সেই সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। গতকাল দুই কংগ্রেসম্যান রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এই ফাঁকে পিটার ডি হাস ছুটে যান জাপা চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা মাসরুর মাওলার গুলশানের বাসভবনে। সেখানে তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। পিটার ডি হাস বাংলাদেশে আসার পরেই বিরামহীন সময় কাটাচ্ছেন। তার জন্য কোন ফুসরত নাই। এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য যেখানে যাওয়া দরকার, যা করা দরকার সবকিছু তিনি করেছেন। যেমন- মানবজমিনের মত একটি ট্যাবলেট পত্রিকা অফিস সফর করতে তিনি কার্পণ্য করেননি। মায়ের ডাকের মত বিতর্কিত সংগঠনের নেতার বাসভবনে যেতেও তিনি কুণ্ঠা বোধ করেননি। আর পিটার হাসের এই অপ্রতিরোধ্য যাত্রাকে ঠেকাবে কে?

জাতীয় পার্টির সঙ্গে তার বৈঠকটিও ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মাসরুর মাওলা বলেছেন, এটি একটি ফলো-আপ বৈঠক। বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টির চিন্তা কি তা জানতে চান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব সম্পর্কে তার অভিমত ব্যক্ত করেন।,

জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দলটি এখন সংসদে প্রধান বিরোধী দলও বটে। আর এইরকম একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক হতেই পারে। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোভাব কি, এটি নিয়ে আলাদা করে বৈঠক করার প্রয়োজন আছে কিনা তা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া পিটার ডি হাস সকলের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যাখ্যা করছেন কেন? নির্বাচনের এখনো ৪ মাসের বেশি সময় রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এধরনের বৈঠক কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সেই প্রশ্নটিও উঠেছে।,

বিভিন্ন মহল মনে করছেন যে, আওয়ামী লীগকে একঘরে করার জন্য মার্কিন দূতাবাস একটি গোপন মিশন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে এবং সেই মিশনের অংশ হিসেবেই এ জাতীয় পার্টির সাথে বৈঠক করা হয়েছে।,

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ইতিমধ্যে বিএনপি সহ ৩৪টি রাজনৈতিক দলগুলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উচ্চারণ করেছে এবং তারা বলেছে যে, এই দাবি আদায় ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ যে ইসলাম পর্ষদ রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করেছিল সেই দলগুলো আস্তে আস্তে পিছু হটতে শুরু করেছে। বিশেষ করে খেলাফত আন্দোলন বরিশাল সিটি নির্বাচনের পর এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জামায়াতে ইসলামকে নিয়েও আওয়ামী লীগের কৌশল ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। কারণ জামায়াতে ইসলাম এখন নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা করেছে। তাছাড়া জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতার কথা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয়েছে। বিশেষ করে ভারত এই বিষয়টি মোটেও পছন্দ করেনি। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জামাতকেও নির্বাচনের মাঠে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতে পারছে না।,

আওয়ামী লীগের হাতে এখন আছে তাদের মহাজোট। যে মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি যদি নির্বাচন বর্জন করে তাহলে পরে নির্বাচন বানচাল করে একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার মিশন বেশ সফল হবে। তাহলে কি সেই মিশনেই এখন মার্কিন রাষ্ট্রদূত? পিটার ডি হাস কি জাপাকে বশীভূত করে ফেললেন? এটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। তবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের কিছুদিন ধরেই নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় এমন কথাও বলছিলেন। যেহেতু জাতীয় পার্টির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসরুর মাওলা বলেছেন যে, এটি ফলো-আপ বৈঠক। কাজেই এই ফলো-আপ বৈঠকে কি মার্কিন রাষ্ট্রদূত জাপাকেও জাতীয় নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে আনার জন্য বশীভূত করলেন?