আওয়ামী লীগের হাত ফসকে বেড়িয়ে যাচ্ছে জাপা
- আপডেট সময় : ১০:৩১:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩ ৩০ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টি কি আওয়ামী লীগের বলয় থেকে বেড়িযে যাচ্ছে? ক্রমশ এই প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে ওঠছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এখন বিএনপির ভাষায় কথা বলছেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, বিএনপি আগের দিন যা বলছে, তা পরদিন সংবাদ সম্মেলন বা গণমাধ্যমের সামনে এসে জি এম কাদের সে একই কথা বলছেন। গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ডিসি-এসপিরা আওয়ামী লীগের বাপ-মা। তার এই বক্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের আজ বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রশাসন দিয়ে সব কর্তৃত্ব করতে চাচ্ছে, প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। তার এই বক্তব্যের সূত্র ধরেই অনেকে মনে করছেন, জাতীয় পার্টি এখন আস্তে আস্তে সরকারের বলয় থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আগামী নির্বাচনের সময় তারা কি করবেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের ভাবনা কি? সেই সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, এই বৈঠকটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এই বৈঠকের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের বলয় থেকে বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে, যেটি আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে’।
জাতীয় পার্টিতে এখন জি এম কাদেরের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। রওশন এরশাদ অসুস্থ এবং তার সঙ্গে যারা ছিলেন, তাদেরকে মোটামুটি কোণঠাসা করে ফেলেছেন জি এম কাদের। ফলে জাতীয় পার্টি এখন পুরোপুরিভাবেই স্বাতন্ত্র অবস্থান নিচ্ছে বলেই জাতীয় পার্টির অনেক নেতা মন্তব্য করেছেন। বিশেষ করে রওশন এরশাদ সুস্থ থাকা অবস্থায় যেভাবে জাতীয় পার্টিতে আওয়ামী লীগের একটি প্রভাব ছিল এবং যখনই জি এম কাদের বাড়াবাড়ি করতেন বা সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চাইতেন, তখনই রওশন এরশাদ সামনে আসতেন এবং সরকারকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন। এখন সে অবস্থা নেই। তাছাড়া যারা বিভিন্ন সময়ে রওশন এরশাদের পাশে ছিলেন, তারা দলে কোণঠাসা হওয়ার প্রেক্ষিতে জি এম কাদেরকে জাতীয় পার্টিতে চ্যালেঞ্জ করার মতো আর কেউ নেই’।
জাতীয় পার্টিতে জি এম কাদের একটি বার্তা দিচ্ছেন যে, তাদেরকে আওয়ামী লীগের বি-টিম, এই পরিচয় থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। তাহলেই একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেন, এটি দলের অনেক নেতা-কর্মীরা বিশ্বাস করছেন। তাছাড়া ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের একলা চলো নীতির ফলে জাতীয় পার্টির একটি বড় অংশই আওয়ামী লীগের উপর ক্ষুব্ধ। ২০০৯ এবং ২০১৪- এর মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির হিস্যা ছিল। কিন্তু এবার জাতীয় পার্টির হিস্যা না থাকার কারণে, জাতীয় পার্টির মধ্যে অনেকের আওয়ামী লীগের ব্যাপারে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাইছেন জি এম কাদের। আর এ কারণেই এখন জি এম কাদের আওয়ামী লীগের বি-টিম থেকে বিএনপির বি-টিম’এ পরিণত হওয়ার চেষ্টা করছেন।’
বিএনপি যে ভাষায় কথা বলছে, বিএনপি যে বিষয় নিয়ে কথা বলছে, সে একই ভাষায় এবং একই বিষয় নিয়ে কথা বলছেন জি এম কাদের। এখন দেখার বিষয় যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়? সেই সময় যদি জাতীয় পার্টি বিএনপির হাত ধরে নির্বাচন বয়কটের পথে হাটে, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে পড়তে পারে।’