ঢাকা ০২:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শাহজাদপুরে অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ জন আটক ৭ নভেম্বর না আসলে বাংলাদেশ বিলীন হয়ে যেত: বাউবি উপাচার্য বেলকুচির সেন ভাঙ্গাবাড়ী বাজার মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন “জয় বাংলা” স্লোগান দেওয়ায় সাবেক পিপি-কে গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ উলিপুরে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র মেরামতের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ খাজা শাহ্ এনায়েতপুরী (রহ:) এর ১১০ তম ওরছ শরীফের দাওয়াত পত্র বিতরণ  রাজশাহীর মাঠে স্পীড স্কেটিংয়ে বগুড়ার স্কেটারদের ৩টি স্বর্ণপদক সহ ৮ পদক অর্জন এনায়েতপুরে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি উপলক্ষে আলোচনা সভা গাজীপুরে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভিজিট  পালিত ছেলেকে হারানো ছেলের আসনে বসিয়েছি, সে রোহিঙ্গা নয়: আব্দু সালাম

বিশ্বের ২৫% মানুষ পানির সংকটে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩ ৫৮ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে সমস্ত সংকট আবির্ভাব হচ্ছে তার মধ্যে সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানির যে সংকট তা নিয়ে ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউআরআই) প্রতিষ্ঠানটি এক নতুন তথ্য সামনে এনেছে। বর্তমান বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব সংকট বাড়ছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম এই সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানির সংকট। প্রতিষ্ঠানটির নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের জনসংখ্যার এক-চতুথাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ চরম পানিসংকটের মধ্যে রয়েছে।’

জলবায়ু পরিবর্তনের গতি ত্বরান্বিত হওয়ায় এই সংকট যে দিনকে দিন বাড়ছে, সেই চিত্র এই প্রতিবেদনে বিস্তারিত উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬০ সালে পানির যে পরিমাণ চাহিদা ছিল, বর্তমানে তা দ্বিগুণ হয়েছে।’

এই প্রতিবেদনের লেখক ও ডব্লিউআরআইয়ের পানি কর্মসূচির প্রধান সামান্থা কুজমা বলেন, ‘কোনো বিতর্ক ছাড়াই বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো পানি। তবে আমরা এই সম্পদকে এখনো এমন কোনো ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে নিয়ে যাইনি, যাতে বোঝা যাবে যে এটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরেই পানি নিয়ে গভীরবভাবে কাজ করছি। হতাশার বিষয় হলো, ১০ বছর ধরেই আমি এই অবস্থাই দেখে আসছি। এর কোনো পরবির্তন হয়নি।’

খাদ্য, বন, পানি, জ্বালানি, শহর ও জলবায়ু নিয়ে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ডব্লিউআরআই। প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকুডাক্ট ওয়াটার রিস্ক অ্যাটলাসের ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, এখন যে সংখ্যক মানুষ পানির সংকটে রয়েছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ এর সঙ্গে আরও ১০০ কোটি মানুষ যুক্ত হবেন।

ওয়ার্ল্ডোমিটারসের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বিশ্বে এখন ৮০০ কোটি মানুষের বসবাস। অ্যাকুডাক্ট ওয়াটার রিস্ক অ্যাটলাস প্রতিবেদন আমলে নিলে, বর্তমানে ২০০ কোটি মানুষ পানিসংকটে রয়েছেন। আর ২০৫০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে হবে ৩০০ কোটি।’

বর্তমানের পানিসংকট নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, পানির চরম সংকটে থাকা মানুষ বলতে এমন মানুষদের বোঝানো হয়েছে, যাঁদের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ পানি আসে পরিশোধিত উৎস থেকে। অর্থাৎ ব্যবহৃত পানি আবারও ব্যবহার উপযোগী করে তাঁরা কাজে লাগিয়ে থাকেন।

অ্যাকুডাক্ট ওয়াটার রিস্ক অ্যাটলাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ২৫ শতাংশ মানুষ পানির চরম সংকটে রয়েছেন, তাঁদের বসবাস মাত্র ২৫টি দেশে। পৃথিবীর দুটি অঞ্চলের মানুষ বেশি পানির সংকটে রয়েছেন। এই দুটি অঞ্চল হলো মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় থাকা পাঁচটি দেশ হলো বাহরাইন, সাইপ্রাস, কুয়েত, লেবানন ও ওমান। বলা হচ্ছে, স্বল্প সময়ের জন্য খরা দেখা দিলেও এই দেশগুলোতে ব্যবহার্য পানি প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসে।’

এই পাঁচটি দেশের বাইরে যে পাঁচটি ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলো হলো সৌদি আরব, চিলি, স্যান ম্যারিনো, বেলজিয়াম ও গ্রিস।

বিভিন্ন কারণে ব্যবহারযোগ্য পানির চাহিদা বাড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো। তবে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কোনো নীতিমালা না নেওয়া এবং এই খাতে কম বিনিয়োগও পানিসংকেটর কারণ বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বলা হচ্ছে, পানিসংকটে থাকা দুটি অঞ্চল উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি গিয়ে আরও খারাপ হবে। প্রতিবেদনে এ ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে, সুপেয় পানিসংকটের কারণে রাজনৈতিক সংকট ও সহিংসতা দেখা দেবে। অর্থাৎ, পরিস্থিতি দিনকে দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।,

ডব্লিউআরআইয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলে ২০৫০ সাল নাগাদ পানির চাহিদা ১৬৩ শতাংশে পৌঁছাবে। এ প্রসঙ্গে সামান্থা কুজমা বলেন, সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাব, সেখানে পানির চাহিদা আকাশচুম্বী। এই চাহিদা গৃহস্থালিতে ব্যবহারের জন্য এবং কৃষিকাজের জন্য।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বিশ্বের ২৫% মানুষ পানির সংকটে

আপডেট সময় : ০৯:৪২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে সমস্ত সংকট আবির্ভাব হচ্ছে তার মধ্যে সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানির যে সংকট তা নিয়ে ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউআরআই) প্রতিষ্ঠানটি এক নতুন তথ্য সামনে এনেছে। বর্তমান বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব সংকট বাড়ছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম এই সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানির সংকট। প্রতিষ্ঠানটির নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের জনসংখ্যার এক-চতুথাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ চরম পানিসংকটের মধ্যে রয়েছে।’

জলবায়ু পরিবর্তনের গতি ত্বরান্বিত হওয়ায় এই সংকট যে দিনকে দিন বাড়ছে, সেই চিত্র এই প্রতিবেদনে বিস্তারিত উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬০ সালে পানির যে পরিমাণ চাহিদা ছিল, বর্তমানে তা দ্বিগুণ হয়েছে।’

এই প্রতিবেদনের লেখক ও ডব্লিউআরআইয়ের পানি কর্মসূচির প্রধান সামান্থা কুজমা বলেন, ‘কোনো বিতর্ক ছাড়াই বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো পানি। তবে আমরা এই সম্পদকে এখনো এমন কোনো ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে নিয়ে যাইনি, যাতে বোঝা যাবে যে এটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরেই পানি নিয়ে গভীরবভাবে কাজ করছি। হতাশার বিষয় হলো, ১০ বছর ধরেই আমি এই অবস্থাই দেখে আসছি। এর কোনো পরবির্তন হয়নি।’

খাদ্য, বন, পানি, জ্বালানি, শহর ও জলবায়ু নিয়ে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ডব্লিউআরআই। প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকুডাক্ট ওয়াটার রিস্ক অ্যাটলাসের ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, এখন যে সংখ্যক মানুষ পানির সংকটে রয়েছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ এর সঙ্গে আরও ১০০ কোটি মানুষ যুক্ত হবেন।

ওয়ার্ল্ডোমিটারসের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বিশ্বে এখন ৮০০ কোটি মানুষের বসবাস। অ্যাকুডাক্ট ওয়াটার রিস্ক অ্যাটলাস প্রতিবেদন আমলে নিলে, বর্তমানে ২০০ কোটি মানুষ পানিসংকটে রয়েছেন। আর ২০৫০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে হবে ৩০০ কোটি।’

বর্তমানের পানিসংকট নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, পানির চরম সংকটে থাকা মানুষ বলতে এমন মানুষদের বোঝানো হয়েছে, যাঁদের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ পানি আসে পরিশোধিত উৎস থেকে। অর্থাৎ ব্যবহৃত পানি আবারও ব্যবহার উপযোগী করে তাঁরা কাজে লাগিয়ে থাকেন।

অ্যাকুডাক্ট ওয়াটার রিস্ক অ্যাটলাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ২৫ শতাংশ মানুষ পানির চরম সংকটে রয়েছেন, তাঁদের বসবাস মাত্র ২৫টি দেশে। পৃথিবীর দুটি অঞ্চলের মানুষ বেশি পানির সংকটে রয়েছেন। এই দুটি অঞ্চল হলো মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় থাকা পাঁচটি দেশ হলো বাহরাইন, সাইপ্রাস, কুয়েত, লেবানন ও ওমান। বলা হচ্ছে, স্বল্প সময়ের জন্য খরা দেখা দিলেও এই দেশগুলোতে ব্যবহার্য পানি প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসে।’

এই পাঁচটি দেশের বাইরে যে পাঁচটি ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলো হলো সৌদি আরব, চিলি, স্যান ম্যারিনো, বেলজিয়াম ও গ্রিস।

বিভিন্ন কারণে ব্যবহারযোগ্য পানির চাহিদা বাড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো। তবে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কোনো নীতিমালা না নেওয়া এবং এই খাতে কম বিনিয়োগও পানিসংকেটর কারণ বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বলা হচ্ছে, পানিসংকটে থাকা দুটি অঞ্চল উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি গিয়ে আরও খারাপ হবে। প্রতিবেদনে এ ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে, সুপেয় পানিসংকটের কারণে রাজনৈতিক সংকট ও সহিংসতা দেখা দেবে। অর্থাৎ, পরিস্থিতি দিনকে দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।,

ডব্লিউআরআইয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলে ২০৫০ সাল নাগাদ পানির চাহিদা ১৬৩ শতাংশে পৌঁছাবে। এ প্রসঙ্গে সামান্থা কুজমা বলেন, সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাব, সেখানে পানির চাহিদা আকাশচুম্বী। এই চাহিদা গৃহস্থালিতে ব্যবহারের জন্য এবং কৃষিকাজের জন্য।’