ঢাকা ০৩:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তপূর্বক অপসারণের দাবী রাজশাহীতে বৈষম্যমুক্ত নগরের দাবিতে আলোচনা সভা  বেলকুচিতে হত্যাকান্ডের বিচার ও পি আর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ সমাবেশ রামেকে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলার অভিযোগ  খাজা মেডিকেল প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ আমজাদ হোসেনের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প  কাউন্দিয়া ইউনিয়নের মূর্তিমান আতঙ্কের অপর নাম’কুখ্যাত ভূমিদস্যু সাইফুল আলম খান চেয়ারম্যান সাংবাদিকের গলায় জুতোর মালা; বিএমএসএফ’র তদন্ত কমিটি গঠন; তিনদিনের মধ্যে বিচার দাবি  পরকিয়ায় আত্মহত্যার দায়ভার স্বামী-শ্বাশুড়ীর উপর চাপানোর অভিযোগ বেলকুচিতে ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের জন্য দোয়া ও আহতের আরগ্য কামনায় ছাত্র সমাবেশ

জাপা’কেও নির্বাচনের ট্রেনে তুলছে ভারত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫১:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৩ ৬৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে যাবে কি যাবে না? সেটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হতে পারে। এই ফর্মুলা নিয়েই আওয়ামী লীগ এখন এগুচ্ছে। আর সেই রকম একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জাতীয় পার্টিকে। কিন্তু জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে বুঝতে পারছে না সরকার। জি এম কাদের সকালে এক রকম আচরণ, বিকেলে অন্য রকম আচরণ করছেন। তিনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিএনপি নেতাদের ভাষায় কথা বলছেন’। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি একাধিকবার সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন এবং বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ,সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়- এমন বার্তাও দিয়েছেন। কাজেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ পর্যন্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে কিনা- তা অনেকটাই নির্ভর করছে জাতীয় পার্টির উপর। আর এই কারণেই জাতীয় পার্টিকে এখন নির্বাচনের মহাসড়কে নিয়ে আসার দায়িত্বটি পালন করছে ভারত।’

জাতীয় পার্টির একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ভারত সফরে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই প্রতিনিধি দলের ভারত সফরের পরেই জাতীয় পার্টির উপলব্ধি পাল্টে যাবে এবং জাতীয় পার্টি নির্বাচনের পথে হাঁটবে। দিল্লিতে জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে বাংলাদেশের আগামী রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। ভারত যে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দেবে, তা মোটামুটি নিশ্চিত এবং জাতীয় পার্টি এখন যে সেই পরামর্শ এড়িয়ে যেতে পারবে না, সে ব্যাপারেও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সহমত পোষণ করছেন। তারা মনে করেন, জাতীয় পার্টির এখন যে সাংগঠনিক অবস্থা, শক্তি, তাতে ভারতের পরামর্শের বাইরে যাওয়ার অবস্থা তাদের নেই। তাছাড়া জি এম কাদেরের সঙ্গে ভারতের অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে বলেও বিভিন্ন মহল মনে করছেন।’

উল্লেখ্য যে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগেও জাতীয় পার্টি একই নাটক করেছিল। সেই সময় জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাওয়ার কথা বললেও হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ আকস্মিক ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন বয়কটের ডাক দেন এবং সকল প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। সেই নির্বাচনে নানান নাটকীয়তার পর জাপার একাংশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তখন যারা নির্বাচন বর্জন করেছিলেন, তাদের মধ্যে জি এম কাদের অন্যতম। গত এক বছর ধরে জি এম কাদের সরকার বিরোধী একটি অবস্থান নিয়েছেন। তার সাথে সুশীল সমাজ, বিএনপি এবং পশ্চিমা দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের দ্বারাই প্রভাবিত হয়ে তিনি নির্বাচন বিরোধী অবস্থানে গিয়েছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। আর সে কারণেই জাতীয় পার্টির দিল্লি সফরের পর রাজনীতিতে কি পরিবর্তন হয়, তা দেখার বিষয়’।

তবে জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করার কোনো ঘোষণা দেয়নি। বরং জি এম কাদের বারবারই বলেছেন, তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে একা নির্বাচন করবে এবং সবগুলো আসনে প্রার্থিতা দেবে। জাতীয় পার্টির ইতিমধ্যে দুইশ’র শি প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে, এমন বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় পার্টির একজন নেতা। কিন্তু তারপরও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে সন্দেহ, অবিশ্বাস কাটছে না। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতার সরকার বিরোধী বক্তব্য এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে সংশয় তাদেরকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।’

কিছুদিন আগেই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং সেই সাক্ষাতের পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান যে সমস্ত বক্তব্যগুলো দিয়েছেন, তার সবই নির্বাচন বর্জনমুখী। এরকম বাস্তবতায় জাপা প্রতিনিধিদের ভারত সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, এই সফরের পরই বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে, যে রূপরেখায় জাতীয় পার্টি বড় অংশীদার হবে। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে, এমন একটি বার্তাও পাওয়া যাচ্ছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জাপা’কেও নির্বাচনের ট্রেনে তুলছে ভারত

আপডেট সময় : ০৭:৫১:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে যাবে কি যাবে না? সেটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হতে পারে। এই ফর্মুলা নিয়েই আওয়ামী লীগ এখন এগুচ্ছে। আর সেই রকম একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জাতীয় পার্টিকে। কিন্তু জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে বুঝতে পারছে না সরকার। জি এম কাদের সকালে এক রকম আচরণ, বিকেলে অন্য রকম আচরণ করছেন। তিনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিএনপি নেতাদের ভাষায় কথা বলছেন’। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি একাধিকবার সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন এবং বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ,সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়- এমন বার্তাও দিয়েছেন। কাজেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ পর্যন্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে কিনা- তা অনেকটাই নির্ভর করছে জাতীয় পার্টির উপর। আর এই কারণেই জাতীয় পার্টিকে এখন নির্বাচনের মহাসড়কে নিয়ে আসার দায়িত্বটি পালন করছে ভারত।’

জাতীয় পার্টির একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ভারত সফরে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই প্রতিনিধি দলের ভারত সফরের পরেই জাতীয় পার্টির উপলব্ধি পাল্টে যাবে এবং জাতীয় পার্টি নির্বাচনের পথে হাঁটবে। দিল্লিতে জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে বাংলাদেশের আগামী রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। ভারত যে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দেবে, তা মোটামুটি নিশ্চিত এবং জাতীয় পার্টি এখন যে সেই পরামর্শ এড়িয়ে যেতে পারবে না, সে ব্যাপারেও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সহমত পোষণ করছেন। তারা মনে করেন, জাতীয় পার্টির এখন যে সাংগঠনিক অবস্থা, শক্তি, তাতে ভারতের পরামর্শের বাইরে যাওয়ার অবস্থা তাদের নেই। তাছাড়া জি এম কাদেরের সঙ্গে ভারতের অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে বলেও বিভিন্ন মহল মনে করছেন।’

উল্লেখ্য যে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগেও জাতীয় পার্টি একই নাটক করেছিল। সেই সময় জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাওয়ার কথা বললেও হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ আকস্মিক ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন বয়কটের ডাক দেন এবং সকল প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। সেই নির্বাচনে নানান নাটকীয়তার পর জাপার একাংশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তখন যারা নির্বাচন বর্জন করেছিলেন, তাদের মধ্যে জি এম কাদের অন্যতম। গত এক বছর ধরে জি এম কাদের সরকার বিরোধী একটি অবস্থান নিয়েছেন। তার সাথে সুশীল সমাজ, বিএনপি এবং পশ্চিমা দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের দ্বারাই প্রভাবিত হয়ে তিনি নির্বাচন বিরোধী অবস্থানে গিয়েছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। আর সে কারণেই জাতীয় পার্টির দিল্লি সফরের পর রাজনীতিতে কি পরিবর্তন হয়, তা দেখার বিষয়’।

তবে জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করার কোনো ঘোষণা দেয়নি। বরং জি এম কাদের বারবারই বলেছেন, তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে একা নির্বাচন করবে এবং সবগুলো আসনে প্রার্থিতা দেবে। জাতীয় পার্টির ইতিমধ্যে দুইশ’র শি প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে, এমন বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় পার্টির একজন নেতা। কিন্তু তারপরও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে সন্দেহ, অবিশ্বাস কাটছে না। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতার সরকার বিরোধী বক্তব্য এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে সংশয় তাদেরকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।’

কিছুদিন আগেই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং সেই সাক্ষাতের পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান যে সমস্ত বক্তব্যগুলো দিয়েছেন, তার সবই নির্বাচন বর্জনমুখী। এরকম বাস্তবতায় জাপা প্রতিনিধিদের ভারত সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, এই সফরের পরই বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের একটি রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে, যে রূপরেখায় জাতীয় পার্টি বড় অংশীদার হবে। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে, এমন একটি বার্তাও পাওয়া যাচ্ছে।’