বিএনপির নির্বাচনের সিদ্ধান্তের উপর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন
- আপডেট সময় : ০৯:৩২:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩ ৩০ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কারা পাবে-এই নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে সারাক্ষণ আলাপ-আলোচনা চলছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের ছোট ছোট অফিসেও মনোনয়নই আওয়ামী লীগের প্রধান আলোচ্য বিষয়। বিরোধী আন্দোলন মোকাবেলা করেই শেষ পর্যন্ত দেশে নির্বাচন হবে-এমন বিশ্বাস আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মীদের। আর কে মনোনয়ন পাবে, না পাবে ইত্যাদি নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় উঠছে সারাক্ষণই। আওয়ামী লীগের মনোনয়নের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। খুব কম নেতাকেই আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের সবুজসঙ্কেত দেয়া হয়েছে’।
তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন আসনের প্রার্থীদের সবুজসঙ্কেত দেয়া হবে, তাদেরকে নির্বাচনী এলাকায় কাজ শুরু করার জন্য বলা হবে। তবে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কারা পাবেন, এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে দুই ধরনের ভাবনা রয়েছে। এক ধরনের ভাবনায় বলা হচ্ছে, যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে আসে তাহলে মনোনয়ন হবে অন্য রকম। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের অর্ধেক বর্তমান এমপি মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন। তখন আওয়ামী লীগ জনপ্রিয়, বিতর্কহীন এবং ভালো ইমেজ সম্পন্ন ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেবে। যে রকম মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল বরিশালে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, যারা জনগণের সঙ্গে সম্পর্কহীন, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন এবং যারা এমপি হয়ে বিভিন্ন রকম অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না এবং সেই তালিকায় প্রায় অর্ধেক বর্তমান এমপি মনোনয়ন থেকে বাদ পড়বে বলেই আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এছাড়াও সেক্ষেত্রে মনোনয়ন দেওয়া হবে এমন কিছু বিশিষ্ট জনকে, যাদের জাতীয়ভাবে পরিচিত আছে এবং সুনাম রয়েছে।’
আর যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের ধারা পরিবর্তন হবে। সেক্ষেত্রে দুই ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, সেক্ষেত্রে বর্তমানে যারা এমপি আছেন, তাদের বড় ধরনের পরিবর্তন করা হবে না। শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট অভিযোগে যারা অভিযুক্ত এবং যাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড দেশে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে, এরকম কিছু ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে মোটামুটি আগের প্রার্থীদেরকে রাখা হবে। আবার অন্য একটি সূত্র বলছে, বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে আওয়ামী লীগ দলের ত্যাগী, পরীক্ষিতদেরকে এমপি হিসেবে জাতীয় সংসদে নিয়ে আসার একটি সুবর্ণ সুযোগ পাবে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনের মাধ্যমেই দলকে হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারী মুক্ত করবে। বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় যারা দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত, ত্যাগী, যারা দুঃসময়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন, তাদেরকে মনোনয়ন দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, সারাদেশে কয়েক দফা জরিপের ফলে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে বিভিন্ন আসনে কার জনপ্রিয়তা কতটুকু, সে সম্পর্কে বিজ্ঞান ভিত্তিক সঠিক ধারণা রয়েছে। এখন নির্ভর করছে নির্বাচন কিভাবে অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে আওয়ামী লীগ আবার মহাজোটের আদলে নির্বাচন করবে, যেমনটি নির্বাচন করেছিল ২০০৮ সালে’। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ৫০ থেকে ৬০টি আসন ছেড়ে দিতে হবে। আর যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে হয়তো আওয়ামী লীগ এককভাবে নির্বাচনে যাবে এবং সেই নির্বাচনে পুরনো বিতর্কিতরা প্রার্থী হবে, নাকি তৃণমূলের ত্যাগীরা জায়গা পাবে, সেটি এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয়’।