ঢাকা ০৯:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
টেকনাফে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অস্ত্রদিয়ে ফাঁসানো নিরপরাধ শহিদুল্লাহর মুক্তির দাবি নেতাদের শিক্ষক উন্নয়নের জন্য ইউনেস্কো-হামদান পুরস্কার পেয়েছে ‘গুড নেইবারস বাংলাদেশ’ বেলকুচিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভন্ড কবিরাজের বাড়িতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযান   বিশ্ব শিক্ষক দিবসে নিজ সহকর্মিদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন গুণী শিক্ষক শওকত আলী বদির ক্যাশিয়ার ফারুককে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হলেন র‍্যাব সদস্যরা কাজিপুরের চরাঞ্চলের বিদ্যুতে শুভংকরের ফাঁকি ! চাহিদা ১০ বরাদ্দ মাত্র ২ মেগাওয়াট!  স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ  কাজিপুরে ধর্ষণের অভিযোগে অফিস সহকারি গ্রেপ্তার বেলকুচিতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল বদল বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চায়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৪০:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩ ৩০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: এতোদিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নিয়ে রাজনৈতিক কৌশল ছিল, একটি অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতায় আনা। কিন্তু ভারতের সাম্প্রতিক তৎপরতা এবং ভারতের অব্যাহত চাপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নিয়ে কৌশল পরিবর্তন করেছে বলে জানিয়েছে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র। যুক্তরাষ্ট্র এখন মনে করছে, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে হবে। ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছে।’

প্রথমত, তারা মনে করছে, বাংলাদেশে যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হোক না কেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে। এ ব্যাপারে ভারতেরও কোনো দ্বিমত নেই। ভারত বলেছে, নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। কাজেই এ ব্যাপারে ভারতও দৃষ্টি রাখবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে একসাথে কাজ করবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছে। আর এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে, সেক্ষেত্রে সরকার বড় ধরনের চাপে পড়বে, নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। এ কারণেই এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুর পাল্টেছে এবং বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য পরামর্শ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

দ্বিতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত দু’বছর ধরে বাংলাদেশ নিয়ে নানা রকম নিরীক্ষা করছে, নানা রকম সুপারিশ করেছে এবং বিভিন্ন ধরনের চাপ প্রয়োগ করছে। এর মূল লক্ষ্য হলো, বর্তমান সরকারকে দুর্বল করে দেওয়া। আর এ কারণে বিএনপিকে নেপথ্যে থেকে সহযোগিতা করছে-এমন অভিযোগও কেউ কেউ করেছেন। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কোন দলকে সমর্থন করে না। বরং তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় দেখতে চায় এবং এমন একটি নির্বাচন চায়, যে নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে। আর এরকম একটি বাস্তবতার প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপের কারণে বিএনপি অনেকটাই চাঙ্গা হয়েছে। তারা বলেছে, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না। এখানেই রাজনৈতিক কৌশলটি ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

তৃতীয়ত, বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তে অটল থাকে, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না, এরকম একটি মন্তব্য করবে এবং শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনকে তারা স্বীকৃতি দেবে না। ফলে নির্বাচন হতে পারবে না, যেভাবে ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থানের সাথে সরাসরি দ্বিমত পোষণ করছে ভারত। ভারত মনে করে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হতে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে, তাদেরকে দিয়েই নির্বাচন করতে হবে। কোন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো না করলো- সেটি কোন বড় বিষয় নয়। একটি গণতান্ত্রিক দেশে যেকোনো দল যেকোনো বাস্তবতায় নির্বাচন বর্জন করতে পারে। কাজেই একটি দল নির্বাচন বর্জন করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, এমন ভাবার কোন কারণ নেই।’

 

এ রকম একটি অবস্থান নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ বিষয়ে দরকষাকষি করেছে ভারত এবং ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশে যদি স্থিতিশীলতা নষ্ট হয় এবং শেখ হাসিনার সরকারকে দুর্বল করা হয়, তাহলে ক্ষতি হবে সকলের। ভারতের এই অনঢ় এবং দৃঢ় অবস্থানের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের কৌশল পাল্টাতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে।,

একাধিক সূত্র বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে এসে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করছে। তারা মনে করছে, যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যদি অন্য কোনো প্রভাব বিস্তার না করা হয়, তাহলে সেই নির্বাচনটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে এবং আওয়ামী লীগের ওপর বড় ধরনের চাপ আসবে। এ কারণেই বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করার কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন দেখার বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশল কতটুকু সফল হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল বদল বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চায়

আপডেট সময় : ০৮:৪০:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: এতোদিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নিয়ে রাজনৈতিক কৌশল ছিল, একটি অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতায় আনা। কিন্তু ভারতের সাম্প্রতিক তৎপরতা এবং ভারতের অব্যাহত চাপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নিয়ে কৌশল পরিবর্তন করেছে বলে জানিয়েছে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র। যুক্তরাষ্ট্র এখন মনে করছে, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে হবে। ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে কয়েকটি বিষয়ে একমত হয়েছে।’

প্রথমত, তারা মনে করছে, বাংলাদেশে যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হোক না কেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে। এ ব্যাপারে ভারতেরও কোনো দ্বিমত নেই। ভারত বলেছে, নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। কাজেই এ ব্যাপারে ভারতও দৃষ্টি রাখবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে একসাথে কাজ করবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছে। আর এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে, সেক্ষেত্রে সরকার বড় ধরনের চাপে পড়বে, নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। এ কারণেই এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুর পাল্টেছে এবং বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য পরামর্শ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

দ্বিতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত দু’বছর ধরে বাংলাদেশ নিয়ে নানা রকম নিরীক্ষা করছে, নানা রকম সুপারিশ করেছে এবং বিভিন্ন ধরনের চাপ প্রয়োগ করছে। এর মূল লক্ষ্য হলো, বর্তমান সরকারকে দুর্বল করে দেওয়া। আর এ কারণে বিএনপিকে নেপথ্যে থেকে সহযোগিতা করছে-এমন অভিযোগও কেউ কেউ করেছেন। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কোন দলকে সমর্থন করে না। বরং তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় দেখতে চায় এবং এমন একটি নির্বাচন চায়, যে নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে। আর এরকম একটি বাস্তবতার প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপের কারণে বিএনপি অনেকটাই চাঙ্গা হয়েছে। তারা বলেছে, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না। এখানেই রাজনৈতিক কৌশলটি ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

তৃতীয়ত, বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তে অটল থাকে, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না, এরকম একটি মন্তব্য করবে এবং শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনকে তারা স্বীকৃতি দেবে না। ফলে নির্বাচন হতে পারবে না, যেভাবে ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থানের সাথে সরাসরি দ্বিমত পোষণ করছে ভারত। ভারত মনে করে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হতে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে, তাদেরকে দিয়েই নির্বাচন করতে হবে। কোন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো না করলো- সেটি কোন বড় বিষয় নয়। একটি গণতান্ত্রিক দেশে যেকোনো দল যেকোনো বাস্তবতায় নির্বাচন বর্জন করতে পারে। কাজেই একটি দল নির্বাচন বর্জন করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, এমন ভাবার কোন কারণ নেই।’

 

এ রকম একটি অবস্থান নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ বিষয়ে দরকষাকষি করেছে ভারত এবং ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশে যদি স্থিতিশীলতা নষ্ট হয় এবং শেখ হাসিনার সরকারকে দুর্বল করা হয়, তাহলে ক্ষতি হবে সকলের। ভারতের এই অনঢ় এবং দৃঢ় অবস্থানের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের কৌশল পাল্টাতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে।,

একাধিক সূত্র বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে এসে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করছে। তারা মনে করছে, যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যদি অন্য কোনো প্রভাব বিস্তার না করা হয়, তাহলে সেই নির্বাচনটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে এবং আওয়ামী লীগের ওপর বড় ধরনের চাপ আসবে। এ কারণেই বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করার কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন দেখার বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশল কতটুকু সফল হয়।