ঢাকা ০৪:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য হলেন ২৫ গণমাধ্যম কর্মী রাজনৈতিক দলের সাথে মামলায় জড়িয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি না করার আহবান জোড়া কবরে শুয়ে রইলেন তারা, নিভে গেল দুই পরিবারের বেঁচে থাকার স্বপ্ন সলঙ্গা থানা ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়কের নামে থানায় অভিযোগ  প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তপূর্বক অপসারণের দাবী রাজশাহীতে বৈষম্যমুক্ত নগরের দাবিতে আলোচনা সভা  বেলকুচিতে হত্যাকান্ডের বিচার ও পি আর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ সমাবেশ রামেকে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলার অভিযোগ  খাজা মেডিকেল প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ আমজাদ হোসেনের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প 

কাঁদাপানি পেরিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের ৩২ বছরেও হয়‌নি বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৫৮:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩ ১৬২ বার পড়া হয়েছে

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ৩২ বছরেও হয়‌নি বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা। বর্ষা মৌসুমে কাঁদা মাটিতে আছার খেতে খেতে আর শুষ্ক মৌসুমে জমির আইল ধরে পৌঁছাতে হয় বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বছরের পর বছর এত কষ্ট করে পাঠদানের জন্য বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করলেও, কর্তৃপক্ষ ৩০০ ফিট রাস্তা করে দিতে পারেননি গত ৩২ বছরেও! এ অবস্থা সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। অবশ্য ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াকুব আলী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ ও গ্রামবাসীর কাছে ৩০০ ফুট রাস্তার জন্য আবেদন নিবেদন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং একুশ শতকেও দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাস্তা ছাড়াই অন্যের বাড়ি, পুকুর পাড়, জমির আইল দিয়েই পাঠ যেতে হচ্ছে বিদ্যালয়ে।

তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে ৩৩ শতক জমি নিয়ে দিঘরিয়া-২ রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। পরবর্তী‌তে ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ করা হয়। এর আগে ২০০৩ সালে এলজিইডির বাস্তবায়নে ১৩ শতক জায়গার উপর একটি পাকা দ্বিতল ভবন নির্মান হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১০৫ জন শিক্ষার্থী র‌য়ে‌ছ এবং পাঁচ জন শিক্ষক তা‌দের পাঠদান করাচ্ছেন। বারুহাস-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়ক থেকে দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাওয়ার ৩০০ ফুট রাস্তা নির্মান করা হয়নি। ফলে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃৃষ্টিতে জমির মধ্যে পানি জমে থাকায় কোমলম‌তি ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা পড়ছে চরম বিপাকে। কখনো কখনো প‌ড়ে ভিজে যায় শিক্ষার্থীদের পোশাক ও বই-খাতা। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে এলেও পুরো বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকে এমনটাই জানান, দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াকুব আলী। দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেরিনা খাতুন, আসিফ, মরিয়ম খাতুনসহ একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টির সময় আসতে খুবই কষ্ট হয়। কখনো কখনো বই-খাতা ভিজে যায়, তাছাড়া মানুষের বাড়ির ভেতর দিয়ে গে‌লে গালাগাল করে, যে‌তে দি‌তে চায় না। স্থানীয়রা জানান, কাঁদা পানির মধ্যে দিয়ে স্কুলে যেতে চায় না শিক্ষার্থীরা। কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনা ও সঠিক তদারকি না থাকায় দীর্ঘদিনেও স্কুলটিতে যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সন্তাদের স্কুলে পাঠাতে ভরসা পায় না অনেক অভিভাবক।দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, অনেক চেষ্টা করেছি এ রাস্তা নির্মান করার জন্য কিন্তু কোন ফল পাইনি। স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে আবার কেউ বা স্কুলই ছে‌ড়ে দি‌চ্ছে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণ করা না হলে বাকি শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা সম্ভব হবে না। ঝুঁঁকি নিয়ে অভিভাবকরাও তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চায় না। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফ আলী বলেন, জায়গাটা নিয়ে একটু ঝামেলা আছে। এক পক্ষ জায়গা দিতে চাচ্ছে কিন্তু আরেক পক্ষ রাস্তা দিতে চায় না। তবে বিষয়টি উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কাঁদাপানি পেরিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের ৩২ বছরেও হয়‌নি বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা

আপডেট সময় : ১২:৫৮:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ৩২ বছরেও হয়‌নি বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা। বর্ষা মৌসুমে কাঁদা মাটিতে আছার খেতে খেতে আর শুষ্ক মৌসুমে জমির আইল ধরে পৌঁছাতে হয় বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বছরের পর বছর এত কষ্ট করে পাঠদানের জন্য বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করলেও, কর্তৃপক্ষ ৩০০ ফিট রাস্তা করে দিতে পারেননি গত ৩২ বছরেও! এ অবস্থা সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। অবশ্য ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াকুব আলী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, ইউনিয়ন পরিষদ ও গ্রামবাসীর কাছে ৩০০ ফুট রাস্তার জন্য আবেদন নিবেদন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং একুশ শতকেও দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাস্তা ছাড়াই অন্যের বাড়ি, পুকুর পাড়, জমির আইল দিয়েই পাঠ যেতে হচ্ছে বিদ্যালয়ে।

তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে ৩৩ শতক জমি নিয়ে দিঘরিয়া-২ রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। পরবর্তী‌তে ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ করা হয়। এর আগে ২০০৩ সালে এলজিইডির বাস্তবায়নে ১৩ শতক জায়গার উপর একটি পাকা দ্বিতল ভবন নির্মান হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১০৫ জন শিক্ষার্থী র‌য়ে‌ছ এবং পাঁচ জন শিক্ষক তা‌দের পাঠদান করাচ্ছেন। বারুহাস-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়ক থেকে দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাওয়ার ৩০০ ফুট রাস্তা নির্মান করা হয়নি। ফলে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃৃষ্টিতে জমির মধ্যে পানি জমে থাকায় কোমলম‌তি ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা পড়ছে চরম বিপাকে। কখনো কখনো প‌ড়ে ভিজে যায় শিক্ষার্থীদের পোশাক ও বই-খাতা। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে এলেও পুরো বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকে এমনটাই জানান, দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াকুব আলী। দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেরিনা খাতুন, আসিফ, মরিয়ম খাতুনসহ একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টির সময় আসতে খুবই কষ্ট হয়। কখনো কখনো বই-খাতা ভিজে যায়, তাছাড়া মানুষের বাড়ির ভেতর দিয়ে গে‌লে গালাগাল করে, যে‌তে দি‌তে চায় না। স্থানীয়রা জানান, কাঁদা পানির মধ্যে দিয়ে স্কুলে যেতে চায় না শিক্ষার্থীরা। কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনা ও সঠিক তদারকি না থাকায় দীর্ঘদিনেও স্কুলটিতে যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সন্তাদের স্কুলে পাঠাতে ভরসা পায় না অনেক অভিভাবক।দিঘরিয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, অনেক চেষ্টা করেছি এ রাস্তা নির্মান করার জন্য কিন্তু কোন ফল পাইনি। স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে আবার কেউ বা স্কুলই ছে‌ড়ে দি‌চ্ছে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণ করা না হলে বাকি শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা সম্ভব হবে না। ঝুঁঁকি নিয়ে অভিভাবকরাও তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চায় না। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফ আলী বলেন, জায়গাটা নিয়ে একটু ঝামেলা আছে। এক পক্ষ জায়গা দিতে চাচ্ছে কিন্তু আরেক পক্ষ রাস্তা দিতে চায় না। তবে বিষয়টি উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।