বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে সিআইএ
- আপডেট সময় : ০৯:৫৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩ ৩৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলা পোর্টাল ডেস্ক: জাতির পিতাকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর ভারতের গণমাধ্যমে নানা ধরনের প্রতিবেদন প্রকশিত হয়। এর মধ্যে একটি ছিলো বোম্বের ‘বামপন্থী’ সাপ্তাহিক ক্ল্যারিটি। ২৩ আগস্ট ১৯৭৫ সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত নিবন্ধের শিরোনাম ‘বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে সিআইএ’। এ বিষয়ে দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্যাক্সবি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে জানিয়েছেন, ওই নিবন্ধের শুরুটা হয়েছে এভাবে : বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মুজিব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার ব্যাপারে আমেরিকার যোগসাজশের সন্দেহটা এতটাই দৃঢ়ভিত্তিক যে, এটা এখন প্রায় সন্দেহাতীত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই নিবন্ধে ফরাসি কমিউনিস্ট দৈনিক লা হিউমানেতে-এ প্রকাশিত খবরের ওপর নির্ভর করা হয় এবং ওয়ার্ল্ড পিস কাউন্সিলের জেনারেল সেক্রেটারি রমেশচন্দ্রই হলেন এই খবরের উৎস। ক্ল্যারিটির নিবন্ধের উপসংহারে বলা হয়, ভারত যেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তল্পিবাহক হতে অস্বীকার করেছে, তখন এটাই স্বাভাবিক যে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াবে আর অন্য দিকে সিআইএর ‘ডার্টি ট্রিকস স্কোয়াডে’র প্রতিও তাদের সায় থাকবে। এই তারবার্তায় মন্তব্য করা হয় যে ক্রমবর্ধমানভাবে এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে যে ভারতে সংবাদপত্রের ওপর যে সেন্সরশিপ জারি রয়েছে, তা তাদের বামপন্থী সিপিআই/মস্কোপন্থী প্রকাশনাগুলোর জন্য প্রযোজ্য নয়। আর এটা বলা নিষ্প্রয়োজন যে এ কারণে সোভিয়েত ইউনিয়নের পোয়াবারো হয়েছে।’
১৯৭৫ সালের ২৫ আগস্ট দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্যাক্সবি ‘যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রমণে বামপন্থী প্রেসের লাইসেন্স’ শীর্ষক একটি তারবার্তা প্রেরণ করেন। এতে তিনি লিখেছেন,
২৩ আগস্ট বোম্বের বামপন্থী ছোট্ট সাপ্তাহিক ক্ল্যারেটি তার প্রথম পৃষ্ঠায় বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে সিআইএকে জড়িত করে নিবন্ধ ছেপে লিংক ও ব্লিৎজ-এর সঙ্গেই যোগ দিল। এই পত্রিকা দুটো বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িয়ে প্রবন্ধ ছেপেছে। যদিও আমাদের বলা হয়েছে যে ভারত সরকার কতিপয় মার্কিনবিরোধী নিবন্ধের প্রকাশনা নিষিদ্ধ করেছে কিন্তু এটা এখন স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে যে অন্তত কতিপয় বামপন্থী সাময়িকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনার লাইসেন্স ভোগ করছেন। তবে এটা লক্ষণীয় যে ভারতের অধিকাংশ দৈনিক, যার মধ্যে কলকাতার সংবাদপত্রও রয়েছে, তারা আর বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দায়দায়িত্বের অভিযোগ-সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করছে না। আমরা বোম্বের কনসাল জেনারেলকে ক্ল্যারিটি পত্রিকার কাছে একটি প্রতিবাদ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছি। ২২ আগস্ট অতিরিক্ত ডেপুটি চিফ অব মিশন প্রতিরক্ষামন্ত্রী শরণ সিংয়ের কাছে ব্লিৎজ সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন। এবং আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ব্লিৎজ, ক্ল্যারিটি ও লিংক-এর মতো যারাই যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িয়ে নিবন্ধ বা প্রতিবেদন ছাপবে, তাদের কাছেই আমরা প্রতিবাদ জানাব। যদিও আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বাধ্য হচ্ছি যে কংগ্রেস-সিপিআই সম্পর্ক এবং রুশ-ভারত সম্পর্কের কারণে ভারত সরকার তাদের নিজেদের সেন্সরশিপ পুরোপুরি বহাল করবে না।