ঢাকা ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তপূর্বক অপসারণের দাবী রাজশাহীতে বৈষম্যমুক্ত নগরের দাবিতে আলোচনা সভা  বেলকুচিতে হত্যাকান্ডের বিচার ও পি আর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ সমাবেশ রামেকে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলার অভিযোগ  খাজা মেডিকেল প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ আমজাদ হোসেনের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প  কাউন্দিয়া ইউনিয়নের মূর্তিমান আতঙ্কের অপর নাম’কুখ্যাত ভূমিদস্যু সাইফুল আলম খান চেয়ারম্যান সাংবাদিকের গলায় জুতোর মালা; বিএমএসএফ’র তদন্ত কমিটি গঠন; তিনদিনের মধ্যে বিচার দাবি  পরকিয়ায় আত্মহত্যার দায়ভার স্বামী-শ্বাশুড়ীর উপর চাপানোর অভিযোগ বেলকুচিতে ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের জন্য দোয়া ও আহতের আরগ্য কামনায় ছাত্র সমাবেশ

তবে কি পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহই কাল হলো ওয়াগনার প্রধানের

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৩০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩ ৩১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা পোর্টাল ডেস্ক: রাশিয়ায় একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এ মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা ধোঁয়াশা। অনেক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রিগোশিনের নিহত হওয়ার খবর আসলেও আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়া কিংবা অন্য কোনো পক্ষ থেকে প্রিগোশিনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়নি। অনেকেই মনে করছেন এ বিমান দুর্ঘটনা পুতিনের একটি সাজানো নাটক মাত্র। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা বলেও মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞকেরা।’

মূলত রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সাথে যে নাটকীয় লড়াইয়ে লিপ্ত হয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ, সেই বিদ্রোহই প্রাণ নিয়েছে ওয়াগনার প্রধানের এমনটাই ধারণা করছেন তারা।’

ইউক্রেনে যেভাবে যুদ্ধ পরিচালিত হচ্ছিলো তা নিয়ে প্রিগোশিনের সঙ্গে রুশ সামরিক বাহিনীর সামরিক নেতাদের প্রকাশ্যে মতবিরোধ চলছিলো দীর্ঘ সময় ধরে। সেই বিরোধই একটা সময় বিদ্রোহে রূপ নেয়।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে প্রিগোশিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসলেও রাশিয়ান সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধকৌশল এবং আরো নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধ লেগেই ছিল। এর প্রেক্ষিতেই তার যোদ্ধারা ইউক্রেন সীমান্ত পার হয়ে রাশিয়ার ভেতরেও ঢুকে পড়ে’।

রাশিয়ার দক্ষিণের বড় একটি শহর রোস্তভ অন ডন দখল করে নেয় এবং পরবর্তীতে রাজধানীর দিকে অগ্রসর হতে থাকলে তার কারণে মস্কোতে সন্ত্রাস-বিরোধী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জারি করা হয়।

এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাবেক উপদেষ্টা সের্গেই মারকভ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,ওয়াগনার গ্রুপের প্রায় বিশ হাজার মোটামুটি পেশাদার সৈন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্তত ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে আসতে হবে ইউক্রেনের রণক্ষেত্র হতে। যেটা হতো ইউক্রেনের জন্য বিরাট এক সুযোগ।

এদিকে সামরিক দিক থেকে এমন বিপদজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিন তখন ছিলেন বিকারহীন। তিনি যেকোন মূল্যে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের পতন ঘটাতে চেয়েছিলেন। ইউক্রেন থেকে সীমান্তের লাগোয়া রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চলে প্রবেশ করে একটি রাশিয়ান হেলিকপ্টারও তিনি ধ্বংস করেন।

এক সময়ের ঘনিষ্ঠ প্রিগোশিন যিনি কিনা ‘পুতিনের বাবুর্চি’ নামে খ্যাত ছিলেন, তার কাছ থেকে পাওয়া এমন বিশ্বাসঘাতকতা পুতিনের জন্যে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল।’

এ সময় পুতিন জাতির উদ্দেশে সংক্ষেপে এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ওয়াগনার গ্রুপ যা করেছে সেটি ‘বেইমানি’ এবং ‘রাশিয়ার পিঠে ছুরি চালানোর’ মতো। পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় সব নির্দেশও তিনি দিয়েছিলেন।

এছাড়াও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘রাশিয়ার সমাজকে যারা বিভক্ত করছে তারা কোনভাবেই শাস্তি এড়াতে পারবে না।‘

পরবর্তীতে অবশ্য সমঝোতার মাধ্যমে ওয়াগনার প্রধানের সঙ্গে এ বিদ্রোহের অবসান ঘটে’।

তবে রাশিয়া এবং পুতিনের বিরুদ্ধে এহেন অবস্থানের ফল যে প্রিগোশিনকে পেতেই হবে সে ব্যাপারে অনেকেই নিশ্চিত ছিলেন।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইভজেনি প্রিগোশিনের মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘নিশ্চিত জানি না কী ঘটেছে। তবে আমি আশ্চর্য নই।‘

এর পেছনে পুতিনের হাত থাকতে পারে ইঙ্গিত দিয়ে মার্কিন আরও প্রেসিডেন্ট বলেন,

রাশিয়ায় পুতিনকে বাদ দিয়ে বেশি কিছু ঘটে না। তবে এই মুহূর্তে জবাব দেওয়ার মতো বেশি কিছু আমি জানি না।‘

তৎকালীন সময়ে বিবিসির রুশ বিভাগের সাংবাদিক ওলগা ইভশিনা এ বিষয়ে বলেছিলেন ‘অবশ্যই পুতিন তার শক্তি প্রদর্শন করবেন যা তিনি আগেও করেছেন।‘

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

তবে কি পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহই কাল হলো ওয়াগনার প্রধানের

আপডেট সময় : ০১:৩০:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩

বাংলা পোর্টাল ডেস্ক: রাশিয়ায় একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এ মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা ধোঁয়াশা। অনেক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রিগোশিনের নিহত হওয়ার খবর আসলেও আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়া কিংবা অন্য কোনো পক্ষ থেকে প্রিগোশিনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়নি। অনেকেই মনে করছেন এ বিমান দুর্ঘটনা পুতিনের একটি সাজানো নাটক মাত্র। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা বলেও মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞকেরা।’

মূলত রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সাথে যে নাটকীয় লড়াইয়ে লিপ্ত হয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ, সেই বিদ্রোহই প্রাণ নিয়েছে ওয়াগনার প্রধানের এমনটাই ধারণা করছেন তারা।’

ইউক্রেনে যেভাবে যুদ্ধ পরিচালিত হচ্ছিলো তা নিয়ে প্রিগোশিনের সঙ্গে রুশ সামরিক বাহিনীর সামরিক নেতাদের প্রকাশ্যে মতবিরোধ চলছিলো দীর্ঘ সময় ধরে। সেই বিরোধই একটা সময় বিদ্রোহে রূপ নেয়।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে প্রিগোশিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসলেও রাশিয়ান সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধকৌশল এবং আরো নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধ লেগেই ছিল। এর প্রেক্ষিতেই তার যোদ্ধারা ইউক্রেন সীমান্ত পার হয়ে রাশিয়ার ভেতরেও ঢুকে পড়ে’।

রাশিয়ার দক্ষিণের বড় একটি শহর রোস্তভ অন ডন দখল করে নেয় এবং পরবর্তীতে রাজধানীর দিকে অগ্রসর হতে থাকলে তার কারণে মস্কোতে সন্ত্রাস-বিরোধী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জারি করা হয়।

এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাবেক উপদেষ্টা সের্গেই মারকভ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,ওয়াগনার গ্রুপের প্রায় বিশ হাজার মোটামুটি পেশাদার সৈন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্তত ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে আসতে হবে ইউক্রেনের রণক্ষেত্র হতে। যেটা হতো ইউক্রেনের জন্য বিরাট এক সুযোগ।

এদিকে সামরিক দিক থেকে এমন বিপদজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিন তখন ছিলেন বিকারহীন। তিনি যেকোন মূল্যে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের পতন ঘটাতে চেয়েছিলেন। ইউক্রেন থেকে সীমান্তের লাগোয়া রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চলে প্রবেশ করে একটি রাশিয়ান হেলিকপ্টারও তিনি ধ্বংস করেন।

এক সময়ের ঘনিষ্ঠ প্রিগোশিন যিনি কিনা ‘পুতিনের বাবুর্চি’ নামে খ্যাত ছিলেন, তার কাছ থেকে পাওয়া এমন বিশ্বাসঘাতকতা পুতিনের জন্যে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল।’

এ সময় পুতিন জাতির উদ্দেশে সংক্ষেপে এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ওয়াগনার গ্রুপ যা করেছে সেটি ‘বেইমানি’ এবং ‘রাশিয়ার পিঠে ছুরি চালানোর’ মতো। পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় সব নির্দেশও তিনি দিয়েছিলেন।

এছাড়াও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘রাশিয়ার সমাজকে যারা বিভক্ত করছে তারা কোনভাবেই শাস্তি এড়াতে পারবে না।‘

পরবর্তীতে অবশ্য সমঝোতার মাধ্যমে ওয়াগনার প্রধানের সঙ্গে এ বিদ্রোহের অবসান ঘটে’।

তবে রাশিয়া এবং পুতিনের বিরুদ্ধে এহেন অবস্থানের ফল যে প্রিগোশিনকে পেতেই হবে সে ব্যাপারে অনেকেই নিশ্চিত ছিলেন।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইভজেনি প্রিগোশিনের মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘নিশ্চিত জানি না কী ঘটেছে। তবে আমি আশ্চর্য নই।‘

এর পেছনে পুতিনের হাত থাকতে পারে ইঙ্গিত দিয়ে মার্কিন আরও প্রেসিডেন্ট বলেন,

রাশিয়ায় পুতিনকে বাদ দিয়ে বেশি কিছু ঘটে না। তবে এই মুহূর্তে জবাব দেওয়ার মতো বেশি কিছু আমি জানি না।‘

তৎকালীন সময়ে বিবিসির রুশ বিভাগের সাংবাদিক ওলগা ইভশিনা এ বিষয়ে বলেছিলেন ‘অবশ্যই পুতিন তার শক্তি প্রদর্শন করবেন যা তিনি আগেও করেছেন।‘