ঢাকা ০৩:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য হলেন ২৫ গণমাধ্যম কর্মী রাজনৈতিক দলের সাথে মামলায় জড়িয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি না করার আহবান জোড়া কবরে শুয়ে রইলেন তারা, নিভে গেল দুই পরিবারের বেঁচে থাকার স্বপ্ন সলঙ্গা থানা ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়কের নামে থানায় অভিযোগ  প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তপূর্বক অপসারণের দাবী রাজশাহীতে বৈষম্যমুক্ত নগরের দাবিতে আলোচনা সভা  বেলকুচিতে হত্যাকান্ডের বিচার ও পি আর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ সমাবেশ রামেকে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলার অভিযোগ  খাজা মেডিকেল প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ আমজাদ হোসেনের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প 

নির্বাচন পর্যন্ত ব্রিকস থেকে দূরে থাকলো বাংলাদেশ: নেপথ্যে ভারত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:১৩:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩ ৩৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরে চলছে ১৫তম ব্রিকস সম্মেলন। আজ বৃহস্পতিবার ব্রিকস-এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, নতুন কয়েকটি সদস্য পদ দেওয়া হবে। গতকাল সদস্য রাষ্ট্রগুলো ব্রিকস-কে সম্প্রসারণ করে। এর আগে ভারত ব্রিকস-এর সম্প্রসাণের বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু সম্মেলনে এসে তারা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে। ফলে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর্জেন্টিনা, ইরান, মিশর ও ইথিওপিয়া ব্রিকস-এর নতুন সদস্য হিসেবে আজ অন্তর্ভূক্ত হয়েছে, আগামী বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে এই সদস্যপদ কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়েছিল। ব্রিকস-এ ২০টি দেশ সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল, তাদের মধ্যে বাংলাদেশও ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ এবার ব্রিকস-এর সদস্য হলো না।

ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই ব্রিকস থেকে বাংলাদেশকে দূরে রাখা হলো। ব্রিকস ক্রমশ একটি মার্কিন অর্থনীতি বিরোধী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। আর এই জোটের প্রধান দুই দেশ রাশিয়া এবং চীন এটিকে মার্কিন এবং পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে একটি অর্থনৈতিক জোট হিসেবে তৈরি করতে চায়। ভারত এর বিরুদ্ধে ছিল, ভারত এটিকে এখনই কোনো রাজনৈতিক আবরণ দিতে রাজি নয় এবং এটিকে মার্কিন বিরোধী জোট হিসেবে রাখতেও রাজি না। এজন্যই ব্রিকস-এর সম্প্রসারণে এরা বিরোধীতায় ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারত জোট সম্প্রসারণে সম্মত হলেও এই জোটকে এখনই তারা মার্কিন বিরোধী জোট হিসেবে দেখতে রাজি নয়।

তবে ব্রিকস-এ বাংলাদেশ এখন সদস্যপদ নেওয়ার জন্য তেমন তৎপরতা করেনি কৌশলগত কারণে। ব্রিকস জোটটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভালোভাবে দেখে না। তারা মনে করে, এখানে রাশিয়া, চীন এবং ভারতের উপস্থিতির ফলে বিশ্বে মার্কিন অর্থনীতির প্রভাব এবং আধিপত্য ক্ষুন্ন হবে। আর এ কারণেই ব্রিকস-এর শুরু থেকেই এটিকে সন্দেহের চোখে দেখে।’

সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নানা বিষয়ে টানাপোড়েন চলছে। এই টানাপোড়েনের মধ্যে যদি বাংলাদেশ ব্রিকস-এ যোগ দিতো, সেক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও নতুন নতুন সঙ্কট তৈরি হতে পারতো। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি সমঝোতায় আসার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে ভারত বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের মনোভাব আনুষ্ঠানিকভাবে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। ভারত সুস্পষ্টভাবে বলেছে যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্তিতিশীলতা রক্ষা করা দরকার এবং শেখ হাসিনাকে দুর্বল করলে সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরকম একটি পরিস্থিতিতে ভারত এখনই ব্রিকস-এ বাংলাদেশকে নিতে চায়নি। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের দর কষাকষির জায়গাটা সীমিত হয়ে যাবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে আরও আগ্রাসী হতে পারে- এরকম একটি বিবেচনা ভারতের কূটনৈতিকদের মধ্যে কাজ করেছে বলেই বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে। আর এ কারণেই আপাতত ব্রিকস-এ বাংলাদেশ গেলো না।’

তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যে দেশগুলো আবেদন করেছে তাদেরকে পর্যায়ক্রমিকভাবে ব্রিকস-এর সদস্য পদ দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য পথটা পরিষ্কার থাকলো। তবে তার আগে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতেই হবে। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত বিষয়টি নিয়ে একটি সমঝোতা করার সুযোগ পাবে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

নির্বাচন পর্যন্ত ব্রিকস থেকে দূরে থাকলো বাংলাদেশ: নেপথ্যে ভারত

আপডেট সময় : ০৫:১৩:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরে চলছে ১৫তম ব্রিকস সম্মেলন। আজ বৃহস্পতিবার ব্রিকস-এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, নতুন কয়েকটি সদস্য পদ দেওয়া হবে। গতকাল সদস্য রাষ্ট্রগুলো ব্রিকস-কে সম্প্রসারণ করে। এর আগে ভারত ব্রিকস-এর সম্প্রসাণের বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু সম্মেলনে এসে তারা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে। ফলে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর্জেন্টিনা, ইরান, মিশর ও ইথিওপিয়া ব্রিকস-এর নতুন সদস্য হিসেবে আজ অন্তর্ভূক্ত হয়েছে, আগামী বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে এই সদস্যপদ কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়েছিল। ব্রিকস-এ ২০টি দেশ সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল, তাদের মধ্যে বাংলাদেশও ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ এবার ব্রিকস-এর সদস্য হলো না।

ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই ব্রিকস থেকে বাংলাদেশকে দূরে রাখা হলো। ব্রিকস ক্রমশ একটি মার্কিন অর্থনীতি বিরোধী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। আর এই জোটের প্রধান দুই দেশ রাশিয়া এবং চীন এটিকে মার্কিন এবং পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে একটি অর্থনৈতিক জোট হিসেবে তৈরি করতে চায়। ভারত এর বিরুদ্ধে ছিল, ভারত এটিকে এখনই কোনো রাজনৈতিক আবরণ দিতে রাজি নয় এবং এটিকে মার্কিন বিরোধী জোট হিসেবে রাখতেও রাজি না। এজন্যই ব্রিকস-এর সম্প্রসারণে এরা বিরোধীতায় ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারত জোট সম্প্রসারণে সম্মত হলেও এই জোটকে এখনই তারা মার্কিন বিরোধী জোট হিসেবে দেখতে রাজি নয়।

তবে ব্রিকস-এ বাংলাদেশ এখন সদস্যপদ নেওয়ার জন্য তেমন তৎপরতা করেনি কৌশলগত কারণে। ব্রিকস জোটটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভালোভাবে দেখে না। তারা মনে করে, এখানে রাশিয়া, চীন এবং ভারতের উপস্থিতির ফলে বিশ্বে মার্কিন অর্থনীতির প্রভাব এবং আধিপত্য ক্ষুন্ন হবে। আর এ কারণেই ব্রিকস-এর শুরু থেকেই এটিকে সন্দেহের চোখে দেখে।’

সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নানা বিষয়ে টানাপোড়েন চলছে। এই টানাপোড়েনের মধ্যে যদি বাংলাদেশ ব্রিকস-এ যোগ দিতো, সেক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও নতুন নতুন সঙ্কট তৈরি হতে পারতো। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি সমঝোতায় আসার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে ভারত বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের মনোভাব আনুষ্ঠানিকভাবে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। ভারত সুস্পষ্টভাবে বলেছে যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্তিতিশীলতা রক্ষা করা দরকার এবং শেখ হাসিনাকে দুর্বল করলে সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরকম একটি পরিস্থিতিতে ভারত এখনই ব্রিকস-এ বাংলাদেশকে নিতে চায়নি। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের দর কষাকষির জায়গাটা সীমিত হয়ে যাবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে আরও আগ্রাসী হতে পারে- এরকম একটি বিবেচনা ভারতের কূটনৈতিকদের মধ্যে কাজ করেছে বলেই বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে। আর এ কারণেই আপাতত ব্রিকস-এ বাংলাদেশ গেলো না।’

তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যে দেশগুলো আবেদন করেছে তাদেরকে পর্যায়ক্রমিকভাবে ব্রিকস-এর সদস্য পদ দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য পথটা পরিষ্কার থাকলো। তবে তার আগে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতেই হবে। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত বিষয়টি নিয়ে একটি সমঝোতা করার সুযোগ পাবে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করেন।