ব্রিকসের শক্তি বাড়াতে নতুন সদস্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে আজ
- আপডেট সময় : ১০:২৮:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩ ৪২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা পোর্টাল ডেস্ক: ব্রিকসের সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে যে আলোচনা চলছিল, তাতে সফলতা এসেছে। বিকাশমান পাঁচ অর্থনীতির জোট এই ব্রিকস’র নতুন সদস্য নেওয়ার বিষয়ে আজ চূড়ান্ত ও বিস্তারিত ঘোষণা দেবেন এর নেতারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে চলমান সম্মেলনে জোটের সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন নেতারা। গতকাল বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এ তথ্য জানান। তিনি আশা করছেন, আজ বৃহস্পতিবার সম্মেলনের শেষ দিনে নতুন সদস্য নেওয়ার বিষয়টি ফয়সালা হবে।
জোটের বর্তমান সদস্য হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। মঙ্গলবার জোহানেসবার্গে সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। এই সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়েছেন তিনি।
এই পাঁচ দেশ ছাড়াও জোটে যুক্ত হতে আগ্রহী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা জোহানেসবার্গে সম্মলনে যোগ দিয়েছেন। এই সম্মেলন শুরুর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারা জানান, ৪০টির বেশি দেশ ব্রিকসে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে সেই সংখ্যা আরও বেশ বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, জোহানেসবার্গে ৫০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
জোটের কর্মপদ্ধতি নির্ধারণে ও সম্প্রসারণ ছিল এবারের ব্রিকস সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয়। সম্মেলনের শুরু থেকেই জোটের সম্প্রসারণের বিষয়ে সম্মত ছিলেন নেতারা। তবে কীভাবে এই জোটের সম্প্রসারণ হবে এবং কবে হবে, তা নিয়ে দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। কারণ, চীন চাইছে যত দ্রুত সম্ভব এই জোটে দেশের সংখ্যা বাড়ানো হোক। তবে এই ব্যাপারে খানিক সতর্ক অবস্থানে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত।
এই পরিস্থিতিতে রামাফোসা গতকাল বলেন, ব্রিকসের সব সদস্যই জোটের সম্প্রসারণের বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন,ব্রিকস পরিবার বড় করার ব্যাপারে চূড়ান্ত অবস্থান নিয়েছি।’
সিরিল রামাফোসার আগে এ নিয়ে কথা বলেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে ব্রিকসে নতুন সদস্য নেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন তিনি’।
ব্রিকসের সদস্য বাড়ানোর ফলে জোটের শক্তি বাড়বে বলে মনে করেন সি চিন পিং। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন সময়ে এখানে জড়ো হয়েছি যখন বিশ্ব একটি বড় পরিবর্তন, বিভাজন এবং পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’
সম্মেলনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা জানিয়েছেন, এই জোটে তাঁর প্রতিবেশী দেশ আর্জেন্টিনার যুক্ত হওয়ার পদক্ষেপকে তিনি সমর্থন করেন।
গতকাল ব্রিকস সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন পুতিন। সেখানেও ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। এই যুদ্ধের জন্য আবারও পশ্চিমা বিশ্বকে দায়ী করে বক্তব্য দেন। যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের কারণেই কিয়েভে বিশেষ অভিযান শুরু করতে বাধ্য হয়েছে তাঁর দেশ।’
ইউক্রেনকে আবারও আলোচনায় ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন পুতিন। তবে শর্ত দিয়েছেন আগেরটাই। সেটা হলো, ইউক্রেনকে নয়া বাস্তবতা মেনে নিতে হবে।
২০২৪ সালে রাশিয়ায় হবে ব্রিকস সম্মেলন। এ প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, তাঁর দেশ ব্রিকসের শক্তি বাড়াতে কাজ করবে।
এদিকে কীভাবে নতুন সদস্য নেওয়া হবে, তা নিয়ে গতকাল কথা বলেছেন সম্মেলনের আয়োজক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি প্যান্ডর। তিনি বলেন, ব্রিকসের যারা সদস্য হতে চায়, তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনো দেশকে সদস্য করার ক্ষেত্রে কী কী বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হবে এবং এ-সংক্রান্ত গাইডলাইন কী হবে, সেই বিষয়ে জোটের সদস্যদেশগুলো সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার সম্মেলন শেষ হওয়ার আগে নেতারা গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে বিস্তারিত বলবেন।,