গুরুদাসপুরের আন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামী র্যাবের জালে আটক
- আপডেট সময় : ০৫:০৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩ ৭৩ বার পড়া হয়েছে
গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা: নাটোরের গুরুদাসপুরের চতুর্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত জাহিদুল খাঁ (৫০)কে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৫)।
শনিবার (২৬ আগস্ট) সকালে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক এক প্রেসব্রিফিংয়ে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের যৌথ বিশেষ অপারেশন দল শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দিনগত রাতে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থান হেলেঞ্চা এলাকায় এক অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া জাহিদুল খাঁ গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের মৃত্য কালু খাঁর ছেলে। পরে তাকে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংসারে পারিবারিক কলহের কারণে শিশুটির বাবা-মার সংসার ভেঙে যায়। পরবর্তীতে বাবা ও মা অন্যত্র বিয়ে করে। এরপর থেকে শিশুটি তার চাচা-চাচির কাছে থাকতো। এলাকার এক দুসম্পর্কের দাদা জাহিদুল খাঁ মাঝে মধ্য শিশুটিকে নিয়ে তার ভ্যানে করে স্কুলে আনা নেওয়া করতো। পরে ৫ মাস পর শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন দেখে পরিবারের মানুষ জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দেয়নি শিশুটি। তবে পরীক্ষা করার পর গর্ভে সন্তান থাকার কথা জানতে পারে পরিবার। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার মাধ্যমে চিকিৎসক অন্তঃসত্তা বিষয়টি জানান। পরে শিশুটি এ ঘটনা তার পরিবারকে বলে। পরে গত ১৮ জুন শিশুটির দাদী বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
ওই শিশুটি জানায়, অনেক আগে থেকেই তাকে আদর করতেন নানা জাহিদুল ইসলাম। বিভিন্ন সময়ে খাবার জিনিস কিনে দিতেন। প্রায়ই তার ভ্যানযোগে তাকে স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন। ঘটনার দিন স্কুলে যাওয়ার জন্য গোসল করে বাড়ির ভেতর কাপড় পরিবর্তন করছিল শিশুটি। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ধর্ষক জাহিদুল ইসলাম বাড়ির ভেতর ঢুকে ঘরে গিয়ে কাপড় পরিবর্তন করতে বলে। ঘরে ঢুকতেই পেছন থেকে তাকে জাপটে ধরে মুখে গামছা পেঁচিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। ফলে ওই ঘটনা কাউকে বলতে সাহস পায়নি শিশুটি।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, অন্তঃসত্তা শিশুর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট অনুযায়ী আগামী ৮ সেপ্টেম্বর তার সন্তান প্রসবের ডেট রয়েছে। ছোট্ট মানুষ তাই নরমাল ডেলিভারি করানো সম্ভব নয়। ডেটের ৫-৭ দিন পূর্বেই সিজার করা দরকার।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার আমার কাছে আসেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটির দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। অন্তঃসত্তা ওই শিশুকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে এবং সরকারি ভাবে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগী মামলায় যাতে ন্যায়বিচার পান এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে পুলিশ।