ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আজ মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা: রাজশাহীতে দেবীর চরণে ভক্তের শ্রদ্ধা রাউজানে মন্ডপে মন্ডপে চলছে দূর্গাপূজা রায়গঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ৫ জনকে কারাদন্ড টেকনাফে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অস্ত্রদিয়ে ফাঁসানো নিরপরাধ শহিদুল্লাহর মুক্তির দাবি নেতাদের শিক্ষক উন্নয়নের জন্য ইউনেস্কো-হামদান পুরস্কার পেয়েছে ‘গুড নেইবারস বাংলাদেশ’ বেলকুচিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভন্ড কবিরাজের বাড়িতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযান   বিশ্ব শিক্ষক দিবসে নিজ সহকর্মিদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন গুণী শিক্ষক শওকত আলী বদির ক্যাশিয়ার ফারুককে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হলেন র‍্যাব সদস্যরা কাজিপুরের চরাঞ্চলের বিদ্যুতে শুভংকরের ফাঁকি ! চাহিদা ১০ বরাদ্দ মাত্র ২ মেগাওয়াট! 

জাপাকে বিএনপির একশ’ আসনের টোপ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৬:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩ ২৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কি করবে না- তা কোটি টাকার প্রশ্ন। যদিও বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এই দাবিতে তারা এক দফা আন্দোলনও করছে। কিন্তু ভেতরের খবর হলো, বিএনপি পুরোদমেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কোন আসনে কারা প্রার্থী হবে, তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এ নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। বিএনপির মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত, এমনটি বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্তত দুই জন সদস্য। বিএনপি এবার নির্বাচন করতে চায় না। বরং সকলকে নিয়ে করতে চায়।

বিএনপির একজন নেতা বলছেন, যদি আমরা নির্বাচন করি, তাহলে সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করব এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সরকার গঠন করবো এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সংবিধান পরিবর্তন করব। বিএনপির ওই নেতারা বলেছেন, শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে যায়, তাহলে বিএনপি যাবে ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামত কাঠামোর ভিত্তিতে এবং সেখানে তাদের মূল কথা হচ্ছে, একসাথে আন্দোলন, একসাথে নির্বাচন এবং একসাথে সরকার গঠন। আর এই একসাথে নির্বাচনের ফর্মুলায় বিএনপির প্রধান টার্গেট এবার জাতীয় পার্টি’।

বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তারা প্রকাশ্যে জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠন করতে পারছে না নানারকম কৌশলগত কারণে। আন্তর্জাতিক মহল এবার জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোট গঠনকে কোনোভাবে মেনে নেবে না। এর ফলে বিএনপির ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব হবে। তাই পর্দার আড়ালে জামায়াতের সাথে যে সমঝোতাই হোক না কেন, আসন ছেড়ে দেওয়ার একটা কৌশল অবলম্বন করুক না কেন, প্রকাশ্যে বিএনপি জামায়াতের সাথে কোন রকম জোটে যাবে না। অন্যদিকে ছোট ছোট যে ৩৪টি দলের সঙ্গে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন করছে, সেই দলগুলোতে হাতেগোনা ৪/৫ জন ছাড়া কেউই নির্বাচন করার মতো অবস্থানে নেই। এই জোটের মধ্যে শুধুমাত্র কর্নেল অলি আহমেদের এলডিপি, কল্যাণ পার্টির জেনারেল ইব্রাহিম, মাহমুদুর রহমান মান্না এবং আ স ম আব্দুর রব’র মত কয়েকজন ব্যক্তি আছেন, যারা নির্বাচনে দাঁড়ানোর সক্ষমতা রাখেন। বাকিদের নির্বাচন করার মতো অবস্থান নেই’।

এই বাস্তবতায় বিএনপির এখন প্রধান টার্গেট হলো জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আসা। বিএনপি নেতারা মনে করেন উত্তরাঞ্চলে এবং সিলেট অঞ্চলে জাতীয় পার্টির একটি প্রভাব রয়েছে। আর এই দুটি অঞ্চলেই বিএনপি অত্যন্ত দুর্বল। কাজেই জাতীয় পার্টির সাথে যদি জোট করা যায়, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত হতে পারে। আর এ কারণেই বিএনপির নেতারা একণ প্রকাশ্যে এবং গোপনে জি এম কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে ঐক্য করার চেষ্টা করছেন।’

একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছে, জাতীয় পার্টি যদি বিএনপির সঙ্গে জোটে আসে, তাহলে তাদেরকে ১০০ আসন ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরকম একটি প্রস্তাবও জাতীয় পার্টিকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এ ধরনের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাননি। তবে জি এম কাদের বিএনপির ব্যাপারে নমনীয় হলেও জাতীয় পার্টির মধ্যে তীব্র বিএনপি বিরোধী মনোভাব রয়েছে। বিশেষ করে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর প্রয়াত নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সাথে যা যা করা হয়েছে, এর প্রেক্ষিত্রে জাতীয় পার্টি কোনোদিনই বিএনপির সঙ্গে জোট করবে না- এমন মন্তব্য করেছেন জাপার অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা।’

আর এ কারণে তারা জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও কুন্ঠাবোধ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তবে বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন, জাতীয় পার্টিকে ৮০ আসন এবং অন্যান্য ছোট ছোট দলগুলোকে ২০ আসন দিয়ে একটি নির্বাচনী জোটের পথে তারা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছেন। জাতীয় পার্টির যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনে আসে, তাহলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি নিশ্চিত হবে বলেও মনে করছেন। বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তারা মনে করছেন, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যাবে কি যাবে না, তা নির্ভর করছে- এ ধরনের নানা কৌশলগত অবস্থানের জন্য। জাতীয় পার্টিকে যদি মহাজোট থেকে বের করে নিয়ে আসা যায়, আর অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে যদি বিএনপির ছাতার নিচে রাখা যায়, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ছাড়াই বিএনপি নির্বাচনে যাবে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি ভালো ফলাফল করবে বলেও তারা মনে করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জাপাকে বিএনপির একশ’ আসনের টোপ

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কি করবে না- তা কোটি টাকার প্রশ্ন। যদিও বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এই দাবিতে তারা এক দফা আন্দোলনও করছে। কিন্তু ভেতরের খবর হলো, বিএনপি পুরোদমেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কোন আসনে কারা প্রার্থী হবে, তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এ নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। বিএনপির মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত, এমনটি বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্তত দুই জন সদস্য। বিএনপি এবার নির্বাচন করতে চায় না। বরং সকলকে নিয়ে করতে চায়।

বিএনপির একজন নেতা বলছেন, যদি আমরা নির্বাচন করি, তাহলে সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করব এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সরকার গঠন করবো এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সংবিধান পরিবর্তন করব। বিএনপির ওই নেতারা বলেছেন, শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে যায়, তাহলে বিএনপি যাবে ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামত কাঠামোর ভিত্তিতে এবং সেখানে তাদের মূল কথা হচ্ছে, একসাথে আন্দোলন, একসাথে নির্বাচন এবং একসাথে সরকার গঠন। আর এই একসাথে নির্বাচনের ফর্মুলায় বিএনপির প্রধান টার্গেট এবার জাতীয় পার্টি’।

বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তারা প্রকাশ্যে জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠন করতে পারছে না নানারকম কৌশলগত কারণে। আন্তর্জাতিক মহল এবার জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোট গঠনকে কোনোভাবে মেনে নেবে না। এর ফলে বিএনপির ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব হবে। তাই পর্দার আড়ালে জামায়াতের সাথে যে সমঝোতাই হোক না কেন, আসন ছেড়ে দেওয়ার একটা কৌশল অবলম্বন করুক না কেন, প্রকাশ্যে বিএনপি জামায়াতের সাথে কোন রকম জোটে যাবে না। অন্যদিকে ছোট ছোট যে ৩৪টি দলের সঙ্গে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন করছে, সেই দলগুলোতে হাতেগোনা ৪/৫ জন ছাড়া কেউই নির্বাচন করার মতো অবস্থানে নেই। এই জোটের মধ্যে শুধুমাত্র কর্নেল অলি আহমেদের এলডিপি, কল্যাণ পার্টির জেনারেল ইব্রাহিম, মাহমুদুর রহমান মান্না এবং আ স ম আব্দুর রব’র মত কয়েকজন ব্যক্তি আছেন, যারা নির্বাচনে দাঁড়ানোর সক্ষমতা রাখেন। বাকিদের নির্বাচন করার মতো অবস্থান নেই’।

এই বাস্তবতায় বিএনপির এখন প্রধান টার্গেট হলো জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আসা। বিএনপি নেতারা মনে করেন উত্তরাঞ্চলে এবং সিলেট অঞ্চলে জাতীয় পার্টির একটি প্রভাব রয়েছে। আর এই দুটি অঞ্চলেই বিএনপি অত্যন্ত দুর্বল। কাজেই জাতীয় পার্টির সাথে যদি জোট করা যায়, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত হতে পারে। আর এ কারণেই বিএনপির নেতারা একণ প্রকাশ্যে এবং গোপনে জি এম কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে ঐক্য করার চেষ্টা করছেন।’

একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছে, জাতীয় পার্টি যদি বিএনপির সঙ্গে জোটে আসে, তাহলে তাদেরকে ১০০ আসন ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরকম একটি প্রস্তাবও জাতীয় পার্টিকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এ ধরনের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাননি। তবে জি এম কাদের বিএনপির ব্যাপারে নমনীয় হলেও জাতীয় পার্টির মধ্যে তীব্র বিএনপি বিরোধী মনোভাব রয়েছে। বিশেষ করে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর প্রয়াত নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সাথে যা যা করা হয়েছে, এর প্রেক্ষিত্রে জাতীয় পার্টি কোনোদিনই বিএনপির সঙ্গে জোট করবে না- এমন মন্তব্য করেছেন জাপার অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা।’

আর এ কারণে তারা জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও কুন্ঠাবোধ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তবে বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন, জাতীয় পার্টিকে ৮০ আসন এবং অন্যান্য ছোট ছোট দলগুলোকে ২০ আসন দিয়ে একটি নির্বাচনী জোটের পথে তারা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছেন। জাতীয় পার্টির যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনে আসে, তাহলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি নিশ্চিত হবে বলেও মনে করছেন। বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তারা মনে করছেন, বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যাবে কি যাবে না, তা নির্ভর করছে- এ ধরনের নানা কৌশলগত অবস্থানের জন্য। জাতীয় পার্টিকে যদি মহাজোট থেকে বের করে নিয়ে আসা যায়, আর অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে যদি বিএনপির ছাতার নিচে রাখা যায়, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ছাড়াই বিএনপি নির্বাচনে যাবে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি ভালো ফলাফল করবে বলেও তারা মনে করেন।