ভাইয়ের জন্য বোনের কিডনি দান টাকার অভাবে কিডনী প্রতিস্থাপন করতে পারছেন না তাড়াশের গার্মেন্টস শ্রমিক সাদ্দাম
- আপডেট সময় : ০১:০১:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৩ ২৩০ বার পড়া হয়েছে
তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গার্মেন্টস শ্রমিক সাদ্দম হোসেনের (৩৩) দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে থাকা ছোট ভাইকে একটি কিডনি দিয়ে বাঁচাতে চান বড় বোন জিয়াসমিন। কিন্তু টাকার অভাবে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে কিডনি প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া। দিন দিন সাদ্দামের অবস্থার অবনতি হলেও ব্যয় বহুল এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছে না দরিদ্র এই পরিবার। সরকার ও দেশের বৃত্তবানরাই পারে সাদ্দামকে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে। তাই দেশবাসীর কাছে সহায়তা কামনা করছে অসহায় এই পরিবারটি।সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দিঘীসগুনা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সাদ্দাম হোসেন। ৪-৫ বছর আগে ঢাকার একটি গার্মেন্ট ফ্যক্টরীতে চাকরীরত অবস্থায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরীক্ষ-নিরীক্ষা পর জানাযায় সাদ্দামের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। অসুস্থ্য শরীর নিয়ে বাড়ি ফেরার পর একমাত্র আদরের ছেলেকে সুস্থ্য করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পরিবারটি। সাদ্দম বর্তমানে ঢাকার গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালে সপ্তাহে দুদিন কিডনি ডায়ালাইসিস করছেন। সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিস করার নিয়ম থাকলেও টাকার অভাবে সপ্তাহে ২বার করাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারকে। অসহায় পরিবারটি জানায়, সাদ্দামের চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে পরিবারের শেষ সম্বল বসত ভিটা বিক্রি করতে হয়েছে। তারপরও টাকার অভাবে একমাত্র ছেলেকে প্রতিনিয়ত শারীরিক কষ্ট দেখতে হচ্ছে বৃদ্ধ মা কে।একমাত্র ছোট ভাইকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিতে চান সাদ্দামের বড় বোন জিয়াসমিন। এজন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকের অনুমতিও মেলিছে। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে খরচ লাগবে ১০ লাখ টাকা। কিন্তু টাকার অভাবে থমকে গেছে কিডনি প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া। সরকার ও দেশের বৃত্তবানরাই পারে সাদ্দামকে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে। তাই দেশবাসীর কাছে সহায়তা কামনা করছে অসহায় এই পরিবারটি।সাদ্দামের বড় বোন জিয়াসমিন বলেন, আমার ছোট ভাই সাদ্দামকে একটি কিডনি দিতে চাই আমি। ডাক্তার বলেছেন কিডনি প্রতিস্থাপন করতে সর্বমোট খরচ হবে ১০ লাখ টাকা। এর মধ্যে অপারেশন খরচ ৮ লাখ ও ৬ মাসের ঔষুধ খরচ প্রায় ২ লাখ টাকা। কিডনি প্রতিস্থাপন হলে আমার ভাই ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে উঠবে বলে ডাক্তারা জানিয়েছেন। কিন্তু ১০ লাখ টাকা জোগাড় করার ক্ষমতা আমাদের নেই। একটি বাড়ি ছিলো তাও বিক্রি করে সাদ্দামের বিকিৎসা করানো হয়েছে। সরকার ও দেশের বৃত্তবানরাই পারে সাদ্দামকে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে। তাদের সহযোগিতায় আমার ভাই সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারবো।সাদ্দাম হোসেন বলেন, যখন আমি অসুস্থ্য হয়ে পড়ি তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষ করে ডাক্তার বলে তোমার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। ডায়ালাইসিস করতে হবে। ডায়ালাইসিস করতে আমার শারীরিক ভাবে সমস্যা হয়। প্রতি মাসে ডায়ালাইসিস করতে খরচ লাগে ৪০-৫০ হাজার টাকা। ২ বছর হলো আমি ডায়ালাইসিস করে আসছি। টাকার অভাবে কোন সময় করা হয় না। একটি মাত্র ছেলে ছিলো তাও সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আমার মা ও বোন ছাড়া কেউ নেই। ডাক্তার বলেছেন কোন প্রকার মেডিসিন দিয়ে এই রোগ সারবে না। আমার বড় বোন আমাকে একটি কিডনি দান করতে চায়। কিন্তু টাকার অভাবে করতে পারছি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের বৃত্তবানরাই পারে আমাকে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে। আমি সকলের সহযোগিতা চাই।