কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের অব্যাহত ভাঙ্গনে দিশেহারা সাত শতাধিক পরিবার
- আপডেট সময় : ০৮:০৭:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের সাত শতাধিক পরিবার।
ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য গৃহহীনদের পুনর্বাসন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানালেন,চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাফিউল আলম।
এদিকে, ভাঙনের কারণে বন্ধ রয়েছে পল্লী বিদ্যুতের সাবমেরিন ক্যাবলের সঞ্চালন লাইন।
সাবমেরিন ক্যাবল পুনরায় চালু করতে সাত হাজার জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হবে বলে জানালেন, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
সরেজমিন গিয়ে দেখাগেছে,
ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত চিলমারী উপজেলার চারটি ইউনিয়ন। অষ্টমীর চর, চিলমারী ও নয়ারহাট বজরা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। নদী পাড়ের বাসিন্দারা গরু, ছাগল, হাঁসমুরগি অল্পমূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
ঘরবাড়ি থেকে আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়ার আগেই অনেকের ঘরবাড়ি সহায়সম্বল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে নিকট আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও স্কুলপড়ুয়া ছেলে মেয়ে শিশু ও নারীদের নিয়ে বিড়ম্বনা পোহাতে দেখা গেছে।
আবার অনেককে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে দেখা গেছে। তবে ভিটেমাটি হারানো বেশিরভাগ
পরিবার এখনো মাথা গোঁজার স্থায়ী কোনো জায়গা পাননি।’
নদী পাড়ের কৃষিজীবী ও দিনমজুররা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ভাঙ্গন ও প্লাবন কেড়ে নিয়েছে ক্ষেত খামার।
নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, গত ২ মাসে তার ইউনিয়নের বজরা দিয়ার খাতা, উত্তর খাউরিয়ার চর, দক্ষিণ খাউরিয়ার চর, বাতাশী কাজল ডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকার ৫৩৫টি পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে হয়েছে।
অষ্টমীর চর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, তার ইউনিয়নে ৬৫টি পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুমন বলেন, শাখাহাতী, বৈলমনদিয়ার খাতা, চড়ুয়াপাড়া, তেলিপাড়া ও গাজীরপাড়াসহ পুরো ইউনিয়ন ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে। নদীতে বসতভিটা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রায় ১১০টি পরিবার।”
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বর্তমানে নদী তীরে পাটের শোলা ও টিন দিয়ে ছাপরা ঘর উঠিয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে তিনি জানান’।
সরকারি আবাসনে আশ্রয় নেওয়া সদ্য ভাঙনের শিকার শাখাহাতী চরের নুরুল হক বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে তার ভিটে মাটি এখন নদের পেটে বিলিন হয়েছে। কোথাও জায়গা না পেয়ে স্ত্রী- সন্তান নিয়ে সরকারি আবাসন ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।’
একই এলাকার বাসিন্দা মল্লিকা খাতুন জানান, গত কয়েকদিনের ভাঙ্গনে তার বাড়িটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সহায়-সম্বল হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন। সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে আছেন।
নদী ভাঙন বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেণ নেওয়ার দাবি ব্রহ্মপুত্র পাড়ের লোকজনের।
ইউএনও রাফিউল আলম বলেন, গতকাল “বুধবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর যারা গৃহহীন হয়েছেন তাদের পুনর্বাসনের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে”।