ঢাকা ০৪:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য হলেন ২৫ গণমাধ্যম কর্মী রাজনৈতিক দলের সাথে মামলায় জড়িয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি না করার আহবান জোড়া কবরে শুয়ে রইলেন তারা, নিভে গেল দুই পরিবারের বেঁচে থাকার স্বপ্ন সলঙ্গা থানা ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়কের নামে থানায় অভিযোগ  প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তপূর্বক অপসারণের দাবী রাজশাহীতে বৈষম্যমুক্ত নগরের দাবিতে আলোচনা সভা  বেলকুচিতে হত্যাকান্ডের বিচার ও পি আর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ সমাবেশ রামেকে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলার অভিযোগ  খাজা মেডিকেল প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ আমজাদ হোসেনের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প 

ড.ইউনূস ইস্যুতেও নিষেধাজ্ঞার হুমকি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩ ৪১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ড.মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছে। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা মার্কিন দূতাবাস থেকে এ সম্পর্কে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এখন শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শ্রমিকদের করা একটি মামলার বিচার চলছে’। এই মামলাটি বন্ধের জন্য হাইকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিন্তু হাইকোর্ট বলেছেন যে নিম্ন আদালতের এই মামলা চলবে। একই সাথে সর্বোচ্চ আদালত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দেওয়ানী এবং ফৌজদারি দুই ধরনের মামলাই চলতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে গ্রামীণ টেলিকম থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পাচারের একটি অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। উল্লেখ্য যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান।’

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে যে মামলাটি চলছে সেই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে শ্রমিকদের প্রতিশ্রুত লভ্যাংশের টাকা দেওয়া হয়নি। এই মামলাটি ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতের বাইরে মীমাংসা করতে চেয়েছিলেন এবং এজন্য শ্রমিক নেতা এবং আইনজীবীদের মোটা অংকের টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে এ বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং আদালত অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে একজন আইনজীবীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের টাকা ফ্রিজ করেছিল। এরপর পুরো বিষয়টি শুনানির পর আদালত মামলাটি আদালতের বাইরে মীমাংসার সুযোগ নেই বলে অভিমত ব্যক্ত করে এবং নিম্ন আদালতে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ প্রদান করে।’

এরপর থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিবৃতি শুরু হয়েছে। প্রথমে বারাক ওবামা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দেন। ১৭ আগস্ট এই চিঠিটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া হয়। কিন্তু ২৭ আগস্ট ড. ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে বারাক ওবামার এই চিঠি প্রকাশ করা হয়। একই দিনে বাংলাদেশের ৩৪ জন বুদ্ধিজীবী, যারা অধিকাংশই বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত, তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি অন্যায় এবং হয়রানিমূলক মামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এবং এই হয়রানি বন্ধের জন্য তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এর দুই দিন পর ১৬০ জন বিশ্ব ব্যক্তিত্ব যাদের মধ্যে শতাধিক নোবেল জয়ী রয়েছেন, তারা একটি খোলা চিঠিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি হয়রানি বন্ধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এই খোলা চিঠি ‘সিজিয়ন পিয়ার’ নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। এই নিয়ে বাংলাদেশের সরকার প্রধান এবং বিভিন্ন মহল তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি মামলা বন্ধ করার কে? আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে। অন্যদিকে দুদুকের আইনজীবী খুরশিদ আলম এই বিবৃতিকে বিচার বিভাগের উপর সরাসরি হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন।’

কিন্তু বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসের মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে আরো আগ্রাসী অবস্থানে যাবে এবং এক্ষেত্রে তারা ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে’।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিচার বন্ধের জন্য তারা কি ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে যে, ইউনূসের মামলা যদি তারা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়, তাহলে তাদেরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে হতে পারে। তবে কারা এই ভিসা নিষেধাজ্ঞায় আওতায় আসবেন বা কোন ক্যাটাগরিতে আসবেন তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।’

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে যে নতুন ভিসা নীতি দিয়েছে সেখানে নির্বাচন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। কেউ যদি এই সমস্ত অধিকার ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়টি একটি বিচারাধীন বিষয়। এক্ষেত্রে কোন ধরনের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে সেই বিষয়টি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ড.ইউনূস ইস্যুতেও নিষেধাজ্ঞার হুমকি

আপডেট সময় : ০৯:৪১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: ড.মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিচ্ছে। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা মার্কিন দূতাবাস থেকে এ সম্পর্কে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এখন শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শ্রমিকদের করা একটি মামলার বিচার চলছে’। এই মামলাটি বন্ধের জন্য হাইকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিন্তু হাইকোর্ট বলেছেন যে নিম্ন আদালতের এই মামলা চলবে। একই সাথে সর্বোচ্চ আদালত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দেওয়ানী এবং ফৌজদারি দুই ধরনের মামলাই চলতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে গ্রামীণ টেলিকম থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পাচারের একটি অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। উল্লেখ্য যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান।’

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে যে মামলাটি চলছে সেই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে শ্রমিকদের প্রতিশ্রুত লভ্যাংশের টাকা দেওয়া হয়নি। এই মামলাটি ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতের বাইরে মীমাংসা করতে চেয়েছিলেন এবং এজন্য শ্রমিক নেতা এবং আইনজীবীদের মোটা অংকের টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে এ বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং আদালত অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে একজন আইনজীবীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের টাকা ফ্রিজ করেছিল। এরপর পুরো বিষয়টি শুনানির পর আদালত মামলাটি আদালতের বাইরে মীমাংসার সুযোগ নেই বলে অভিমত ব্যক্ত করে এবং নিম্ন আদালতে মামলাটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ প্রদান করে।’

এরপর থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিবৃতি শুরু হয়েছে। প্রথমে বারাক ওবামা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দেন। ১৭ আগস্ট এই চিঠিটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া হয়। কিন্তু ২৭ আগস্ট ড. ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে বারাক ওবামার এই চিঠি প্রকাশ করা হয়। একই দিনে বাংলাদেশের ৩৪ জন বুদ্ধিজীবী, যারা অধিকাংশই বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত, তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি অন্যায় এবং হয়রানিমূলক মামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এবং এই হয়রানি বন্ধের জন্য তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এর দুই দিন পর ১৬০ জন বিশ্ব ব্যক্তিত্ব যাদের মধ্যে শতাধিক নোবেল জয়ী রয়েছেন, তারা একটি খোলা চিঠিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি হয়রানি বন্ধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এই খোলা চিঠি ‘সিজিয়ন পিয়ার’ নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। এই নিয়ে বাংলাদেশের সরকার প্রধান এবং বিভিন্ন মহল তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি মামলা বন্ধ করার কে? আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে। অন্যদিকে দুদুকের আইনজীবী খুরশিদ আলম এই বিবৃতিকে বিচার বিভাগের উপর সরাসরি হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন।’

কিন্তু বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসের মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে আরো আগ্রাসী অবস্থানে যাবে এবং এক্ষেত্রে তারা ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে’।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিচার বন্ধের জন্য তারা কি ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে যে, ইউনূসের মামলা যদি তারা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়, তাহলে তাদেরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে হতে পারে। তবে কারা এই ভিসা নিষেধাজ্ঞায় আওতায় আসবেন বা কোন ক্যাটাগরিতে আসবেন তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।’

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে যে নতুন ভিসা নীতি দিয়েছে সেখানে নির্বাচন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। কেউ যদি এই সমস্ত অধিকার ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়টি একটি বিচারাধীন বিষয়। এক্ষেত্রে কোন ধরনের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে সেই বিষয়টি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়।’