যুক্তরাষ্ট্র কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার সমর্থন দেবে
- আপডেট সময় : ০৮:২৮:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো একমত হতে পারেনি। বিএনপি বলছে, তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না’। এইরকম নির্বাচন তারা হতে দেবে না বলেও ঘোষণা করছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৯ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জনগণ যদি নির্বাচনে অংশ নেয় সেটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। তবে এ ধরনের ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত নয় বিরোধী দলগুলো। এখন পর্যন্ত বিএনপির নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আন্তর্জাতিক সমর্থন লাভ করেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে নীরবতা পালন করছে। তারা বলছে, নির্বাচন হতে হবে অংশগ্রহণমূলক। কি পদ্ধতিতে এই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে তা বাংলাদেশের জনগণ নির্ধারণ করবে। তবে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেটি নিশ্চিত করতে হবে’।
অন্যদিকে ভারত সুস্পষ্টভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নাকচ করে দিয়েছে। ভারত মনে করে বাংলাদেশের নির্বাচন হতে হবে দেশের সংবিধান অনুযায়ী। আর এই বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক মহল তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে কিনা সেটি নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
বিভিন্ন মহল মনে করছে, যদি আন্তর্জাতিক মহল শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির ব্যাপারে প্রকাশ্য ঘোষণা না দেয় তাহলে বিএনপির আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য এবং এই আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি দাবি আদায় করতে পারবেনা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ঘটনাবলীতে অনেকেই মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র কি শেষ পর্যন্ত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সমর্থন করবেন? এরকম একটি অবস্থানের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যাচ্ছে কিনা তা নিয়ে নানারকম আলাপ-আলোচনা এবং গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ইউনূস ইস্যুতে ১৬০ জন বিশিষ্ট বিশ্ব ব্যক্তিত্ব বিবৃতি দিয়েছেন, সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য রয়েছে বলে মনে করছেন। তাছাড়া কিছু কিছু মার্কিন কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আগামী আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে এটির চেয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় আগ্রহের বিষয় হলো ড. ইউনূসকে মামলার দায় মুক্ত করা।’
ড. ইউনূস ইস্যু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুবই স্পর্শ কাতর একটা ইস্যু এবং সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফাস্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন সরাসরি এই ইস্যুটি নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের অন্দরমহলে তৎপরতা চালাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, সরকারকে চাপে ফেলার কৌশল হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সমর্থন করতে পারে। কারণ মার্কিন প্রশাসনে যারা নীতিনির্ধারক আছেন তাদের মধ্যে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি রয়েছেন যারা হিলারি ক্লিনটনের একান্ত অনুগত এবং হিলারি ক্লিনটন যাদেরকে মার্কিন প্রশাসনের অন্দরমহলে নিয়ে গেছেন। আর এখন হিলারি ক্লিনটন যেভাবে ইউনূস ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছেন তাতে ধারণা করা হচ্ছে ইউনূসের মামলাগুলোকে স্থগিত করা এবং মামলাগুলোকে থামানোর কৌশল হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটিকে সমর্থন দিতে পারে। এখন প্রশ্ন হল সরকার ড. ইউনূস এর মামলার দায় মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর মধ্যে কোন কোন বিষয়ে সমঝোতা করবে?
সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, এখন পর্যন্ত দুটি ইস্যুতেই সরকার অনমনীয়। কিন্তু কূটনীতিকরা মনে করছেন, ইউনূস ইস্যুতে যদি সরকার শেষ পর্যন্ত নমনীয় না হয় বা মামলাগুলোর বিচার কার্যক্রমকে ধীরগতিতে না নিয়ে যায় তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামনে নিয়ে আসবে এবং তাতে সমর্থনও দিতে পারে।’ এখন দেখার বিষয় এরকম প্রেক্ষাপটে সরকার কি করে।