শেষ বেলায় মনোনয়নের জন্য মরিয়া তারা
- আপডেট সময় : ১১:০৪:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৪৩ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে একাধিক জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। এই সমস্ত জরিপের ভিত্তিতে কোন আসনে কারা নির্বাচন করবেন তা মোটামুটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার বাকি। শেষ মুহূর্তে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না তার ওপর কিছু কিছু আসনে পরিবর্তন হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলেছে’।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখন শেষ বেলায় এসে কিছু প্রার্থী মনোনয়নের জন্য মরিয়া হয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। যারা আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না বলে শঙ্কায় রয়েছেন বা বিভিন্ন জরিপে তাদের নেতিবাচক অবস্থানের কথা বলা হয়েছে তারা এখন মনোনয়ন লাভের জন্য মরিয়া তৎপরতা শুরু করেছেন। কেউ কেউ এলাকায় ঘনঘন যাচ্ছেন। কেউ কেউ বিভিন্ন মহলে দেন-দরবার এবং তদবির করছেন। কেউবা টকশো করে নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
আ হ ম মোস্তফা কামাল: এবার আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি কুমিল্লা-১০ আসনের নির্বাচিত এমপি। কিছুদিন আগেও শোনা গিয়েছিল যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণ করবেন না। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর নির্বাচন করতে চান না এমন বক্তব্য তিনি ঘনিষ্ঠজনের কাছে দিয়েছিলেন। তার এলাকায় প্রার্থী কে হবে তা নিয়ে নানারকম আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি এখন ঘন ঘন এলাকায় যাচ্ছেন। অসুস্থতার জন্য যেখানে তিনি বাজেট উপস্থাপন করতে পারেনা, ঠিকঠাক মত অর্থ মন্ত্রণালয় যান না, মন্ত্রণালয় পরিচালনা করতে পারে না, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অবস্থা এখন নাজুক, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তার অসুস্থতার কারণে নাজুক হয়ে গেছে, সেই অর্থমন্ত্রী আবার নির্বাচন করতে আগ্রহী এবং নিয়মিত ভাবে তিনি এলাকায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন’।
নূর মোহাম্মদ: কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ। সবগুলো জরিপে তার জনপ্রিয়তা নিম্নগামী। কিশোরগঞ্জে তার আসনে প্রতিনিয়ত সংঘাত-সহিংসতা একটি নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এমনকি ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সেখানে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এলাকায় তাকে নিয়ে আওয়ামী লীগই বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার মনোনয়ন লাভের সম্ভবনা কম বলে অনেকেই মনে করছেন। এই পরিস্থিতিতে নূর মোহাম্মদ এখন বিভিন্ন মহলের কাছে দেন শুরু করেছেন। এলাকায় তার বদনাম ঘোচানোর জন্য তিনি বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলছেন এবং আরেকবার মনোনয়ন লাভের চেষ্টা করছেন।’
পংকজ দেবনাথ: বরিশাল-৪ আসন থেকে নির্বাচিত পংকজ দেবনাথ তিনি একজন ত্যাগী পরীক্ষিত কিন্তু কিছুদিন আগে তার বিরুদ্ধে এলাকায় সংগঠন বিরোধী তৎপরতার নানা অভিযোগ আনা হয়। অনেকেই ধারণা করছেন, তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত করার জন্য এই কৌশল অবলম্বন করেছিল। তবে পংকজ দেবনাথ হাল ছাড়েননি। তিনি এলাকায় মাটি কামড়ে আছেন। এখনও তিনি শেষ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’
ডা. মুরাদ হাসান: ডা. মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি। তিনি তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে ছিলেন। প্রথমে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় পরবর্তীতে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু কিছু তার অসৌজন্যমূলক কথাবার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাসঁ হওয়ার প্রেক্ষিতে ডা. মুরাদ হাসান প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করেন। এরপর জামালপুর রাজনীতিতে তিনি কোণঠাসা অবস্থায় আছেন। তবে এর মধ্যেও তিনি নিজেকে তৈরী করার চেষ্টা করছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার লক্ষ্যে তিনি স্থানীয় পর্যায় এবং সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে জানা গেছে।
ডা. হাবিবে মিল্লাত: ডা. হাবিবে মিল্লাত সিরাজগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার মনোনয়ন লাভের সম্ভাবনা খুবই কম। এর মধ্যেই তিনি মনোনয়ন লাভের জন্য বিভিন্ন টকশোতে সপ্রতিভভাবে উপস্থিত হচ্ছেন। এলাকায়ও তিনি কাজ করছেন। এখন দেখার বিষয় যে, কোণঠাসা হয়ে থাকা এই সমস্ত এমপিরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নে সক্ষম হন কিনা। মনোনয়ন লাভে তাদের শেষ মরিয়া চেষ্টা কতটা সফল হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।’