ঢাকা ০৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ: অপসরন চেয়ে সারা দেশে চলছে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ  আজ মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা: রাজশাহীতে দেবীর চরণে ভক্তের শ্রদ্ধা রাউজানে মন্ডপে মন্ডপে চলছে দূর্গাপূজা রায়গঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ৫ জনকে কারাদন্ড টেকনাফে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অস্ত্রদিয়ে ফাঁসানো নিরপরাধ শহিদুল্লাহর মুক্তির দাবি নেতাদের শিক্ষক উন্নয়নের জন্য ইউনেস্কো-হামদান পুরস্কার পেয়েছে ‘গুড নেইবারস বাংলাদেশ’ বেলকুচিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভন্ড কবিরাজের বাড়িতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযান   বিশ্ব শিক্ষক দিবসে নিজ সহকর্মিদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন গুণী শিক্ষক শওকত আলী বদির ক্যাশিয়ার ফারুককে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হলেন র‍্যাব সদস্যরা

আন্দোলন না বিদেশি চাপ: কার ওপর নির্ভরশীল বিএনপি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:২৪:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৬০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি বর্তমান সরকারের পতন ঘটাতে চায়। এ লক্ষ্যে দলটি এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কিন্তু এক দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যে ধরনের আগ্রাসী রাজনৈতিক কর্মসূচি দরকার তেমন কর্মসূচি তারা দিতে পারছে না। বরং নানা মামলায় জড়িত বিএনপি নেতাকর্মীরা কঠোর কর্মসূচির ব্যাপারে কিছুটা হলেও নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলও বিএনপিকে পরামর্শ দিচ্ছে ধ্বংসাত্মক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন না করার জন্য। এরকম অবস্থায় উভয় সংকটে পড়েছে দলটি’।

বিএনপির নেতারা স্বীকার করছেন, এ ধরনের কর্মসূচি দিয়ে আর যাই হোক সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। কিন্তু তারপরও বিএনপির নেতারা আশাবাদী। বিএনপি মনে করছে, আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ সরকারের ওপর বাড়ছে এবং এই চাপ যদি বাড়তে থাকে তাহলে সরকারের সামনে কোনো পথ খোলা থাকবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব শিগগির সরকারের ওপর অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। ড. ইউনূস ইস্যুতেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে। ফলে এই সমস্ত চাপ সামলাতে সরকার পারবে না, আন্দোলন লাগবে না।’ আন্তর্জাতিক চাপেই সরকারের পতন ঘটবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সারাবিশ্ব এখন বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখতে চায়। আর এ লক্ষ্যে তারা বিএনপিকে সমর্থন দিচ্ছে। তিনি সরাসরি না বললেও এমন একটি মনোভাব ব্যক্ত করেছেন যে শেষ পর্যন্ত হয়তো আন্দোলন না করেও বিএনপি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে। তবে বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন, শুধুমাত্র বিদেশী চাপের ওপর নির্ভর করে বসে থাকা বিএনপির জন্য ইতিবাচক হবে না।’

বিএনপির ওই নেতা বলেছেন, যদি সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করে ফেলে তাহলে পরে আমাদের আর কিছুই করার থাকবেনা। ২০১৪ সালের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ নির্বাচনের পর আমরা সব আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছিলেন। সেই সময় আন্তর্জাতিক মহল থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছিল এই জ্বালাও-পোড়াও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালন না করার জন্য। কারণ এরকম কর্মসূচি দেশের জন্য ক্ষতিকর। পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপিকে এটাও আশ্বাস দিয়েছিল যে খুব শিগগির একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই আশ্বাসে বিএনপি সব কর্মসূচি থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলে ভিন্ন চিত্র। বিএনপির কর্মসূচি প্রত্যাহারের পরপর ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ পূর্ণ মেয়াদ অতিক্রম করে এবং সরকার পূর্ণ মেয়াদে দেশ পরিচালনা করে’।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, বিদেশীরা বাংলাদেশে কিছু করে দিবে-এমন প্রত্যাশা করলে সেটি হবে বিএনপির জন্য মহাভুল। বিএনপিকে শক্তি সঞ্চয় করতে হবে এবং আন্দোলন করতে হবে। কিন্তু আগামী মাত্র দুই মাস সময়ের মধ্যে একটি বড় ধরনের আন্দোলন করে সরকারকে হটানো বিএনপির পক্ষে কতটা সম্ভব-তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন রয়েছে। খোদ বিএনপির মধ্যেই এ নিয়ে সন্দেহ অবিশ্বাস ক্রমশ দানা বেঁধে উঠছে। তাছাড়া বিএনপি নেতারা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে সরকার আরেক দফা বিএনপির বিভিন্ন নেতাকে টোপ দিবেন। উকিল আব্দুস সাত্তারকে যেভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে সেভাবে অনেক নেতাকে প্রলোভন দেখানো হবে। ফলে সবকিছু মিলিয়ে শুধুমাত্র বিদেশি চাপ বিএনপির লক্ষ্য অর্জন করে দেবে-এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। কিন্তু আন্দোলন করার মত যে রসদ এবং শক্তি দরকার সবচেয়ে বড় কথা হল যে আন্দোলনের জন্য যে জনসম্পৃক্ততা এবং জনসমর্থন দরকার সেটি এই মুহূর্তে বিএনপির নাই। কাজেই শুধু বিদেশীরা বিএনপির পক্ষে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে-এমনটি ভেবে বিএনপি তার নিজের সর্বনাশ করছে কিনা সেই প্রশ্ন এখন বিএনপির মধ্যেই উঠেছে’।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

আন্দোলন না বিদেশি চাপ: কার ওপর নির্ভরশীল বিএনপি

আপডেট সময় : ০৭:২৪:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি বর্তমান সরকারের পতন ঘটাতে চায়। এ লক্ষ্যে দলটি এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কিন্তু এক দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যে ধরনের আগ্রাসী রাজনৈতিক কর্মসূচি দরকার তেমন কর্মসূচি তারা দিতে পারছে না। বরং নানা মামলায় জড়িত বিএনপি নেতাকর্মীরা কঠোর কর্মসূচির ব্যাপারে কিছুটা হলেও নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলও বিএনপিকে পরামর্শ দিচ্ছে ধ্বংসাত্মক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন না করার জন্য। এরকম অবস্থায় উভয় সংকটে পড়েছে দলটি’।

বিএনপির নেতারা স্বীকার করছেন, এ ধরনের কর্মসূচি দিয়ে আর যাই হোক সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। কিন্তু তারপরও বিএনপির নেতারা আশাবাদী। বিএনপি মনে করছে, আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ সরকারের ওপর বাড়ছে এবং এই চাপ যদি বাড়তে থাকে তাহলে সরকারের সামনে কোনো পথ খোলা থাকবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব শিগগির সরকারের ওপর অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। ড. ইউনূস ইস্যুতেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে। ফলে এই সমস্ত চাপ সামলাতে সরকার পারবে না, আন্দোলন লাগবে না।’ আন্তর্জাতিক চাপেই সরকারের পতন ঘটবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সারাবিশ্ব এখন বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখতে চায়। আর এ লক্ষ্যে তারা বিএনপিকে সমর্থন দিচ্ছে। তিনি সরাসরি না বললেও এমন একটি মনোভাব ব্যক্ত করেছেন যে শেষ পর্যন্ত হয়তো আন্দোলন না করেও বিএনপি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে। তবে বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন, শুধুমাত্র বিদেশী চাপের ওপর নির্ভর করে বসে থাকা বিএনপির জন্য ইতিবাচক হবে না।’

বিএনপির ওই নেতা বলেছেন, যদি সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করে ফেলে তাহলে পরে আমাদের আর কিছুই করার থাকবেনা। ২০১৪ সালের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ নির্বাচনের পর আমরা সব আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছিলেন। সেই সময় আন্তর্জাতিক মহল থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছিল এই জ্বালাও-পোড়াও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালন না করার জন্য। কারণ এরকম কর্মসূচি দেশের জন্য ক্ষতিকর। পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপিকে এটাও আশ্বাস দিয়েছিল যে খুব শিগগির একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই আশ্বাসে বিএনপি সব কর্মসূচি থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলে ভিন্ন চিত্র। বিএনপির কর্মসূচি প্রত্যাহারের পরপর ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ পূর্ণ মেয়াদ অতিক্রম করে এবং সরকার পূর্ণ মেয়াদে দেশ পরিচালনা করে’।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, বিদেশীরা বাংলাদেশে কিছু করে দিবে-এমন প্রত্যাশা করলে সেটি হবে বিএনপির জন্য মহাভুল। বিএনপিকে শক্তি সঞ্চয় করতে হবে এবং আন্দোলন করতে হবে। কিন্তু আগামী মাত্র দুই মাস সময়ের মধ্যে একটি বড় ধরনের আন্দোলন করে সরকারকে হটানো বিএনপির পক্ষে কতটা সম্ভব-তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন রয়েছে। খোদ বিএনপির মধ্যেই এ নিয়ে সন্দেহ অবিশ্বাস ক্রমশ দানা বেঁধে উঠছে। তাছাড়া বিএনপি নেতারা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে সরকার আরেক দফা বিএনপির বিভিন্ন নেতাকে টোপ দিবেন। উকিল আব্দুস সাত্তারকে যেভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে সেভাবে অনেক নেতাকে প্রলোভন দেখানো হবে। ফলে সবকিছু মিলিয়ে শুধুমাত্র বিদেশি চাপ বিএনপির লক্ষ্য অর্জন করে দেবে-এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। কিন্তু আন্দোলন করার মত যে রসদ এবং শক্তি দরকার সবচেয়ে বড় কথা হল যে আন্দোলনের জন্য যে জনসম্পৃক্ততা এবং জনসমর্থন দরকার সেটি এই মুহূর্তে বিএনপির নাই। কাজেই শুধু বিদেশীরা বিএনপির পক্ষে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে-এমনটি ভেবে বিএনপি তার নিজের সর্বনাশ করছে কিনা সেই প্রশ্ন এখন বিএনপির মধ্যেই উঠেছে’।