ঢাকা ০৩:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তপূর্বক অপসারণের দাবী রাজশাহীতে বৈষম্যমুক্ত নগরের দাবিতে আলোচনা সভা  বেলকুচিতে হত্যাকান্ডের বিচার ও পি আর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ সমাবেশ রামেকে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলার অভিযোগ  খাজা মেডিকেল প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ আমজাদ হোসেনের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প  কাউন্দিয়া ইউনিয়নের মূর্তিমান আতঙ্কের অপর নাম’কুখ্যাত ভূমিদস্যু সাইফুল আলম খান চেয়ারম্যান সাংবাদিকের গলায় জুতোর মালা; বিএমএসএফ’র তদন্ত কমিটি গঠন; তিনদিনের মধ্যে বিচার দাবি  পরকিয়ায় আত্মহত্যার দায়ভার স্বামী-শ্বাশুড়ীর উপর চাপানোর অভিযোগ বেলকুচিতে ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের জন্য দোয়া ও আহতের আরগ্য কামনায় ছাত্র সমাবেশ

ল্যাভরভ ও ম্যাক্রোঁর সফর ঘিরে ঢাকায় তোড়জোড়, কেন গুরুত্বপূর্ণ এসব সফর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৬:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা পোর্টাল: রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁর সম্ভাব্য ঢাকা সফর এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে নয়াদিল্লি সফর নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিন মহাকর্মযজ্ঞতা চলছে বাংলাদেশের কূটনীতির অঙ্গনে। এর শুরু হবে ৭ সেপ্টেম্বর রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের ঢাকা সফর ঘিরে। এর চারদিন পরে ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক জোট জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে ৮ সেপ্টেম্বর যাবেন ভারতের নয়াদিল্লিতে।

এসব মিলিয়ে ঢাকার কূটনৈতিক অঙ্গনে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমার্ধ হতে চলেছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে শক্তিধর দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও নীতিনির্ধারকদের সফরে হতে পারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা সই’।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে এমনটি উঠে এসেছে। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কল্লোল ভট্টাচার্যের প্রতিবেদনে এই দুটি সফর ঢাকার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলা হয়, প্রায় ৩৩ বছর পর ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতে চলেছেন। আর কোনো রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকায় আসার ঘটনা এটাই হতে যাচ্ছে ইতিহাসে প্রথম।

এই দুই বিশ্বনেতার বাংলাদেশ সফরের ঠিক মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে ৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে আঞ্চলিকশক্তি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি যাচ্ছেন। এই অর্থনৈতিক জোটটির এবারের শীর্ষ সম্মেলনে অতিথি দেশ হিসেবে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ।

ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ার কর্মব্যস্ততা নিয়ে দৈনিক দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি শেখ হাসিনা জোহানেসবার্গে অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা শেষে ফেরার কয়েকদিন পরেই ঢাকা সফরে যাচ্ছেন পশ্চিমাদের বিকল্প অর্থনৈতিক জোটটির প্রভাবশালী সদস্য রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী’।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে তিনি নিষেধাজ্ঞা আরোপকারীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তিতে না গিয়ে বিকল্প প্ল্যাটফর্ম ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর দিকে ঝোঁকার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।’

এদিকে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি রোসাটম রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। ল্যাভরভের সফর আশা জাগিয়েছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শিগগির সম্পন্ন হবে। ২০২২ সালের অক্টোবরে নির্মাণস্থলে রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা এবং রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ।

ঢাকা সফরকালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে এবং এটি স্পষ্ট যে, উভয় পক্ষই তৃতীয় মুদ্রায় কিস্তি পরিশোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করতে পারে’।

তাই ল্যাভরভের ঢাকা সফরে গভীরভাবে নজর রাখা হচ্ছে। কারণ এই সফরে বেশ কিছু আর্থিক ও ভূরাজনৈতিক প্রবণতা প্রতিফলিত হতে পারে। ঢাকা সূত্র জানিয়েছে, দেশে ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দিল্লি পৌঁছাবেন শেখ হাসিনা এবং পরবর্তীতে জি-২০ সম্মেলনে ফের মুখোমুখি হবেন তারা।’

অন্যদিকে, কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, শেখ হাসিনা নয়াদিল্লিতে থাকাকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে পারে। তবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে দেশে ফেরার তাড়া থাকায় এবার হয়তো সফর সংক্ষিপ্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’।

ফ্রান্সের সঙ্গে দীর্ঘ ও ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। ২০২১ সালে প্যারিসে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং তারপর থেকে উভয় পক্ষই প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তার কৌশলগত অবস্থান জোরদারে মনোনিবেশ করেছে এবং ঢাকার সঙ্গে প্যারিসের সামরিক সম্পর্ক জোরদারের সম্ভাবনা এখন অনেকটাই স্পষ্ট।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ল্যাভরভ ও ম্যাক্রোঁর সফর ঘিরে ঢাকায় তোড়জোড়, কেন গুরুত্বপূর্ণ এসব সফর

আপডেট সময় : ০৫:৫৬:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাংলা পোর্টাল: রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁর সম্ভাব্য ঢাকা সফর এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে নয়াদিল্লি সফর নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিন মহাকর্মযজ্ঞতা চলছে বাংলাদেশের কূটনীতির অঙ্গনে। এর শুরু হবে ৭ সেপ্টেম্বর রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের ঢাকা সফর ঘিরে। এর চারদিন পরে ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক জোট জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে ৮ সেপ্টেম্বর যাবেন ভারতের নয়াদিল্লিতে।

এসব মিলিয়ে ঢাকার কূটনৈতিক অঙ্গনে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমার্ধ হতে চলেছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে শক্তিধর দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও নীতিনির্ধারকদের সফরে হতে পারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা সই’।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে এমনটি উঠে এসেছে। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কল্লোল ভট্টাচার্যের প্রতিবেদনে এই দুটি সফর ঢাকার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলা হয়, প্রায় ৩৩ বছর পর ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতে চলেছেন। আর কোনো রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকায় আসার ঘটনা এটাই হতে যাচ্ছে ইতিহাসে প্রথম।

এই দুই বিশ্বনেতার বাংলাদেশ সফরের ঠিক মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে ৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে আঞ্চলিকশক্তি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি যাচ্ছেন। এই অর্থনৈতিক জোটটির এবারের শীর্ষ সম্মেলনে অতিথি দেশ হিসেবে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ।

ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ার কর্মব্যস্ততা নিয়ে দৈনিক দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি শেখ হাসিনা জোহানেসবার্গে অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা শেষে ফেরার কয়েকদিন পরেই ঢাকা সফরে যাচ্ছেন পশ্চিমাদের বিকল্প অর্থনৈতিক জোটটির প্রভাবশালী সদস্য রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী’।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে তিনি নিষেধাজ্ঞা আরোপকারীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তিতে না গিয়ে বিকল্প প্ল্যাটফর্ম ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর দিকে ঝোঁকার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।’

এদিকে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি রোসাটম রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। ল্যাভরভের সফর আশা জাগিয়েছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শিগগির সম্পন্ন হবে। ২০২২ সালের অক্টোবরে নির্মাণস্থলে রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা এবং রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ।

ঢাকা সফরকালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে এবং এটি স্পষ্ট যে, উভয় পক্ষই তৃতীয় মুদ্রায় কিস্তি পরিশোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করতে পারে’।

তাই ল্যাভরভের ঢাকা সফরে গভীরভাবে নজর রাখা হচ্ছে। কারণ এই সফরে বেশ কিছু আর্থিক ও ভূরাজনৈতিক প্রবণতা প্রতিফলিত হতে পারে। ঢাকা সূত্র জানিয়েছে, দেশে ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দিল্লি পৌঁছাবেন শেখ হাসিনা এবং পরবর্তীতে জি-২০ সম্মেলনে ফের মুখোমুখি হবেন তারা।’

অন্যদিকে, কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, শেখ হাসিনা নয়াদিল্লিতে থাকাকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে পারে। তবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে দেশে ফেরার তাড়া থাকায় এবার হয়তো সফর সংক্ষিপ্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’।

ফ্রান্সের সঙ্গে দীর্ঘ ও ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বাংলাদেশের। ২০২১ সালে প্যারিসে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং তারপর থেকে উভয় পক্ষই প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তার কৌশলগত অবস্থান জোরদারে মনোনিবেশ করেছে এবং ঢাকার সঙ্গে প্যারিসের সামরিক সম্পর্ক জোরদারের সম্ভাবনা এখন অনেকটাই স্পষ্ট।’