ঢাকা ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সিরাজগঞ্জে এক ঘণ্টার জন্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্ব পেলেন কিশোরী জান্নাতুল শিফা ফ্রান্সে আন্তর্জাতিক সার্বজনীন বুদ্ধ বিহারে কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন কাজিপুরে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের ইন্তেকাল সিরাজগঞ্জে গরু নেই, দম্পতির কাঁধে ঘানির জোয়াল শুভ’র বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন বেলকুচিতে বেসরকারি ৩ ক্লিনিকের দুই লাখ টাকা জরিমানা  বেলকুচিতে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয় উদ্বোধন  বেলকুচিতে ঢাকা ব্যাংক সার্বজনীন নৌকা বাইচে জনতার ঢল  শ্রমিক থেকে কোটিপতি টেকনাফ বন্দরের মাঝি শামসু! বেলকুচিতে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সার বীজ বিতরণ 

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মাথায় রেখেই শেখ হাসিনার পাল্টা কূটনীতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:০৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ আগামী কয়েকদিন কূটনৈতিক তৎপরতায় মুখর থাকবে’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য দিল্লী সফর করবেন। দিল্লী সফরের আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বাংলাদেশে আসবেন। বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর ) সকালে তার নামার কথা রয়েছে। সকাল বেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠক শেষ করেই প্রধানমন্ত্রী উড়াল দিবেন দিল্লীতে। দিল্লীতে তিনি বিভিন্ন বিশ্ব ব্যক্তিত্বের সাথে আলাপ করবেন, কথা বলবেন এবং এখানে বাংলাদেশের অবস্থান তিনি তুলে ধরবেন। জি-২০ মঞ্চে গ্লোবল সাউথের কণ্ঠস্বর হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আনুষ্ঠানিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে’।

এই সমস্ত বৈঠক শেষ করে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ছুটে আসবেন এবং ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বরণ করে নিবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে। এমানুয়েল ম্যাক্রাঁ বাংলাদেশ সফর করবেন আট ঘণ্টার জন্য। এই কূটনৈতিক তৎপরতা বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল ঘটনা এবং নির্বাচনের আগে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশ্ন উঠেছে সরকার এই সময় কেন এত আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, ভয় ভীতি এবং হুমকিকে মাথায় রেখেই সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাল্টা কূটনীতি অংশ হিসেবে এই তৎপরতা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং ড. ইউনূস ইস্যুতে বাংলাদেশের উপর আরো আক্রমণাত্মক হতে পারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে এবং এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপ্তি বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে কোনো রাখঢাক রাখছে না। এতদিন বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কথা বলেছে, যেকোনো মূল্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছে এজন্য বাংলাদেশকে চাপ দিয়েছে। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যু’। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারিক কার্যক্রম ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সামনের দিনগুলোতে এই বিচারিক কার্যক্রম দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিচার বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা, দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে দায়িত্বে থাকা একাধিক কর্মকর্তা এবং সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে এমন ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের কাছে এ খবর রয়েছে। এছাড়াও সরকারের একাধিক ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।

ভিসা নিষেধাজ্ঞায় একমাত্র বিষয় না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অন্য ধরনের চাপও প্রয়োগ করতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে এখন বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নিরাপত্তা সম্মেলনেও আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গটি সামনে চলে এসেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিরাপত্তা সংলাপে ড. ইউনূস প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়নি। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে যে বাংলাদেশের নির্বাচনে ড. ইউনূসই সরকারের মাথাব্যথা এবং আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর দৃশ্যমান চাপ প্রয়োগ করবে’। আর এটি যেন সরকারকে বিপদে না ফেলে, বিশ্ব কূটনীতিতে যেন বাংলাদেশ একলা না হয়ে পড়ে, সেই জন্যই শেখ হাসিনার এই পাল্টা কূটনীতি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশগুলোর একটি ফ্রান্স আবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মধ্যে দিয়ে রাশিয়ার সমর্থন বাংলাদেশ পাবে। চীন বাংলাদেশের পাশেই রয়েছে। ভারত সবসময় বলেছে, তারা বাংলাদেশের পাশে রয়েছে’। মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফলে বিশ্ব কূটনীতিতে মার্কিন চাপ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশের পাল্টা প্রস্তুতি এখন যথেষ্ট। এখন দেখার বিষয় যে, কূটনীতির খেলায় শেষ পর্যন্ত কে জয়ী হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মাথায় রেখেই শেখ হাসিনার পাল্টা কূটনীতি

আপডেট সময় : ০৩:০৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ আগামী কয়েকদিন কূটনৈতিক তৎপরতায় মুখর থাকবে’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য দিল্লী সফর করবেন। দিল্লী সফরের আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বাংলাদেশে আসবেন। বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর ) সকালে তার নামার কথা রয়েছে। সকাল বেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠক শেষ করেই প্রধানমন্ত্রী উড়াল দিবেন দিল্লীতে। দিল্লীতে তিনি বিভিন্ন বিশ্ব ব্যক্তিত্বের সাথে আলাপ করবেন, কথা বলবেন এবং এখানে বাংলাদেশের অবস্থান তিনি তুলে ধরবেন। জি-২০ মঞ্চে গ্লোবল সাউথের কণ্ঠস্বর হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আনুষ্ঠানিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে’।

এই সমস্ত বৈঠক শেষ করে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ছুটে আসবেন এবং ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বরণ করে নিবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে। এমানুয়েল ম্যাক্রাঁ বাংলাদেশ সফর করবেন আট ঘণ্টার জন্য। এই কূটনৈতিক তৎপরতা বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল ঘটনা এবং নির্বাচনের আগে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশ্ন উঠেছে সরকার এই সময় কেন এত আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, ভয় ভীতি এবং হুমকিকে মাথায় রেখেই সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাল্টা কূটনীতি অংশ হিসেবে এই তৎপরতা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং ড. ইউনূস ইস্যুতে বাংলাদেশের উপর আরো আক্রমণাত্মক হতে পারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে এবং এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপ্তি বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে কোনো রাখঢাক রাখছে না। এতদিন বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কথা বলেছে, যেকোনো মূল্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছে এজন্য বাংলাদেশকে চাপ দিয়েছে। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যু’। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারিক কার্যক্রম ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সামনের দিনগুলোতে এই বিচারিক কার্যক্রম দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিচার বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা, দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে দায়িত্বে থাকা একাধিক কর্মকর্তা এবং সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে এমন ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের কাছে এ খবর রয়েছে। এছাড়াও সরকারের একাধিক ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।

ভিসা নিষেধাজ্ঞায় একমাত্র বিষয় না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অন্য ধরনের চাপও প্রয়োগ করতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে এখন বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নিরাপত্তা সম্মেলনেও আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গটি সামনে চলে এসেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিরাপত্তা সংলাপে ড. ইউনূস প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়নি। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে যে বাংলাদেশের নির্বাচনে ড. ইউনূসই সরকারের মাথাব্যথা এবং আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর দৃশ্যমান চাপ প্রয়োগ করবে’। আর এটি যেন সরকারকে বিপদে না ফেলে, বিশ্ব কূটনীতিতে যেন বাংলাদেশ একলা না হয়ে পড়ে, সেই জন্যই শেখ হাসিনার এই পাল্টা কূটনীতি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশগুলোর একটি ফ্রান্স আবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মধ্যে দিয়ে রাশিয়ার সমর্থন বাংলাদেশ পাবে। চীন বাংলাদেশের পাশেই রয়েছে। ভারত সবসময় বলেছে, তারা বাংলাদেশের পাশে রয়েছে’। মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফলে বিশ্ব কূটনীতিতে মার্কিন চাপ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশের পাল্টা প্রস্তুতি এখন যথেষ্ট। এখন দেখার বিষয় যে, কূটনীতির খেলায় শেষ পর্যন্ত কে জয়ী হয়।