ঢাকা ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তপূর্বক অপসারণের দাবী রাজশাহীতে বৈষম্যমুক্ত নগরের দাবিতে আলোচনা সভা  বেলকুচিতে হত্যাকান্ডের বিচার ও পি আর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ সমাবেশ রামেকে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলার অভিযোগ  খাজা মেডিকেল প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ আমজাদ হোসেনের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প  কাউন্দিয়া ইউনিয়নের মূর্তিমান আতঙ্কের অপর নাম’কুখ্যাত ভূমিদস্যু সাইফুল আলম খান চেয়ারম্যান সাংবাদিকের গলায় জুতোর মালা; বিএমএসএফ’র তদন্ত কমিটি গঠন; তিনদিনের মধ্যে বিচার দাবি  পরকিয়ায় আত্মহত্যার দায়ভার স্বামী-শ্বাশুড়ীর উপর চাপানোর অভিযোগ বেলকুচিতে ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের জন্য দোয়া ও আহতের আরগ্য কামনায় ছাত্র সমাবেশ

তাড়াশে স্কুলের রাস্তা নেই,ভোগান্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১২ বার পড়া হয়েছে

তারাশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নে হামকুড়িয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবই আছে। নেই শুধু যাতায়াতের জন্য রাস্তা। এই কারণে বর্ষায় নৌকাই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ভোগান্তি সারা বছর ধরে। ফলে স্বাভাবিকভাবে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শুষ্ক মৌসুমে আবাদি জমির আইল দিয়ে চলাচল করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এই বিদ্যালয়ে যাতায়াতের বিকল্প কোন সড়ক না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত যাতায়াতের কোন সড়ক না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের। শুষ্ক মৌসুমে জমির আইল ও অন্যের বাড়ির উপর দিয়ে চলাচল করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে এই দুর্ভোগ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তখন চলাচলের একমাত্র ভরসা হয় ছোট ডিঙ্গি নৌকা। কখনও কখনও ভিজে যায় পরনের কাপড়সহ শিক্ষার্থীদের বই-খাতা ও স্কুল ব্যাগ। এ কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে অনিহা প্রকাশ করছে। ফলে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার কমে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮১ সালে ৩৩ শতক জমির উপর প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। এরপর ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। ১৯৯৬–১৯৯৭ অর্থ বছরে নির্মিত হয় ভবনটি। এই বিদ্যালয়ের জমিদান করেছিলেন প্রয়াত আলহাজ্ব আব্দুল জলিল সরকার। ওই বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মরত আছেন। প্রাক-প্রথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২০৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। গ্রামটিতে প্রবেশের জন্য মোটামুটি সড়ক থাকলেও ওই বিদ্যালয়ে যাওয়ার ভাল কোন রাস্তা নেই। বিদ্যালয়ে শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে জমির আইল দিয়ে হেটে চলাচল করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে এসব শিক্ষার্থীর লেখাপড়া ব্যাহত হবার পাশাপাশি ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের বর্ষা মৌসুমে স্কুলে আসতে খুবই কষ্ট হয়। নৌকা বা ভেলায় চরে স্কুলে আসি। কখনও কখনও বইখাতা ভিজে যায়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জহুরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বিভিন্নভাবে স্কুলে আশা যায়। কিন্তু ভোগান্তি বাড়ে বর্ষা মৌসুমে। স্কুলের চারপাশে তখন পানি জমে থাকে। দুর্ভোগের কথা বারবার জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ আমাদের শিক্ষকরা বিপাকে পড়েছেন। এ কারণে দিন দিন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী কমে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন,স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণ করা না হলে বাকি শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা সম্ভব হবে না। কারণ ঝুঁকি নিয়ে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চায় না। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মুসাব্বির হোসেন খান বলেন, ভোগান্তি দূর করতে শুকনো মৌসুমে মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাস্তাটি তৈরি করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান ম্যাগনেট বলেন, ওই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করতে এক সহৃদয়বান ব্যক্তি জমি দান করেছিলেন। কিন্তু বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য কোন পথ নেই। এখন বর্ষার পানি থাকার কারণে রাস্তা করা সম্ভব হচ্ছে না। শুকনো মৌসুমে ব্যক্তিগত খরচে হলেও রাস্তাটি তৈরি করে দেবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

তাড়াশে স্কুলের রাস্তা নেই,ভোগান্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় : ০২:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তারাশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নে হামকুড়িয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবই আছে। নেই শুধু যাতায়াতের জন্য রাস্তা। এই কারণে বর্ষায় নৌকাই একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ভোগান্তি সারা বছর ধরে। ফলে স্বাভাবিকভাবে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শুষ্ক মৌসুমে আবাদি জমির আইল দিয়ে চলাচল করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এই বিদ্যালয়ে যাতায়াতের বিকল্প কোন সড়ক না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত যাতায়াতের কোন সড়ক না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের। শুষ্ক মৌসুমে জমির আইল ও অন্যের বাড়ির উপর দিয়ে চলাচল করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে এই দুর্ভোগ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তখন চলাচলের একমাত্র ভরসা হয় ছোট ডিঙ্গি নৌকা। কখনও কখনও ভিজে যায় পরনের কাপড়সহ শিক্ষার্থীদের বই-খাতা ও স্কুল ব্যাগ। এ কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে অনিহা প্রকাশ করছে। ফলে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার কমে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮১ সালে ৩৩ শতক জমির উপর প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। এরপর ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। ১৯৯৬–১৯৯৭ অর্থ বছরে নির্মিত হয় ভবনটি। এই বিদ্যালয়ের জমিদান করেছিলেন প্রয়াত আলহাজ্ব আব্দুল জলিল সরকার। ওই বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মরত আছেন। প্রাক-প্রথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২০৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। গ্রামটিতে প্রবেশের জন্য মোটামুটি সড়ক থাকলেও ওই বিদ্যালয়ে যাওয়ার ভাল কোন রাস্তা নেই। বিদ্যালয়ে শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে জমির আইল দিয়ে হেটে চলাচল করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে এসব শিক্ষার্থীর লেখাপড়া ব্যাহত হবার পাশাপাশি ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের বর্ষা মৌসুমে স্কুলে আসতে খুবই কষ্ট হয়। নৌকা বা ভেলায় চরে স্কুলে আসি। কখনও কখনও বইখাতা ভিজে যায়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জহুরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বিভিন্নভাবে স্কুলে আশা যায়। কিন্তু ভোগান্তি বাড়ে বর্ষা মৌসুমে। স্কুলের চারপাশে তখন পানি জমে থাকে। দুর্ভোগের কথা বারবার জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ আমাদের শিক্ষকরা বিপাকে পড়েছেন। এ কারণে দিন দিন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী কমে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন,স্কুলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণ করা না হলে বাকি শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা সম্ভব হবে না। কারণ ঝুঁকি নিয়ে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চায় না। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মুসাব্বির হোসেন খান বলেন, ভোগান্তি দূর করতে শুকনো মৌসুমে মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাস্তাটি তৈরি করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মেহেদী হাসান ম্যাগনেট বলেন, ওই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করতে এক সহৃদয়বান ব্যক্তি জমি দান করেছিলেন। কিন্তু বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য কোন পথ নেই। এখন বর্ষার পানি থাকার কারণে রাস্তা করা সম্ভব হচ্ছে না। শুকনো মৌসুমে ব্যক্তিগত খরচে হলেও রাস্তাটি তৈরি করে দেবো।