ঢাকা ০৪:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এনায়েতপুরে আগামী ২১শে সেপ্টেম্বর বিএনপির স্মরণ সভাকে সফল করতে প্রস্তুতিমূলক সভা  সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য হলেন ২৫ গণমাধ্যম কর্মী রাজনৈতিক দলের সাথে মামলায় জড়িয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি না করার আহবান জোড়া কবরে শুয়ে রইলেন তারা, নিভে গেল দুই পরিবারের বেঁচে থাকার স্বপ্ন সলঙ্গা থানা ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়কের নামে থানায় অভিযোগ  প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তপূর্বক অপসারণের দাবী রাজশাহীতে বৈষম্যমুক্ত নগরের দাবিতে আলোচনা সভা  বেলকুচিতে হত্যাকান্ডের বিচার ও পি আর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ সমাবেশ রামেকে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলার অভিযোগ 

নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের দশ দফা প্রস্তাব

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:১৪:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সমঝোতা করতে চায়। এই নির্বাচন যেন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এবং এই নির্বাচন নিয়ে যেন কোনো আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি না হয়, সেজন্য সকল পক্ষকে আস্থায় নিতে চায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের ব্যাপারে আওমী লীগ তার সুস্পষ্ট অঙ্গীকার এবং দৃষ্টিভঙ্গি জানাচ্ছে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলোকে। আর এ লক্ষ্যেই নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের একটি দশ দফা প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আগামীকাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি এই দশ দফা প্রস্তাবনা বা নির্বাচনী রূপরেখা উপস্থাপন করবেন। একইভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ, যাদের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে, তাদেরকে এই দশ দফা রূপরেখা প্রদান করা হবে। এটি আওয়ামী লীগের সুস্থ রাজনৈতিক অবস্থান এবং এই আলোকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে’।

কি আছে এই দশ দফায়? আসুন দেখে নেওয়া যাক আওয়ামী লীগের নির্বাচনী দশ দফা প্রস্তাবের মূল বক্তব্যগুলো কি কি?

১. নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী: সংবিধানে যেভাবে বিধৃত রয়েছে, সেভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২. নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ: নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে। সরকার বা অন্য কেউ নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো রকম হস্তক্ষেপ করবে না।

৩. প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর কোনো রকম হস্তক্ষেপ করবে না।

৪. নির্বাচনকালীন সরকারের সীমিত দায়িত্ব: যখনই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে, তখন থেকেই দেশে যে সরকারটি আছে সেই সরকারটি নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে পরিগণিত হবে। তখন সরকার তার কার্যক্রম সীমিত করবে এবং রুটিন কাজের বাইরে কোনো কার্যক্রম তারা করবে না।

৫. বিদেশি পর্যবেক্ষক: নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ঠভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য সকল পক্ষকেই স্বাগত জানানো হবে এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকরা যেন নির্বিঘ্নে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন, সেজন্য তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে।

৬. অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন: আওয়ামী লীগ মনে করে, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলো জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ। জনগণ যেন স্বাধীনভাবে এবং তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হবে।’

৭. নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ: যে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের ইচ্ছা, অনিচ্ছা অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে, বর্জনও করতে পারে। কিন্তু সেটিকে কখনোই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যত্যয় হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। আর এরকম অবস্থানে নির্বাচনকে কেউ ঝুঁকিতে ফেলার চেষ্টা করলেও সেটি সফল হবে না।’

৮. নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড: এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করবে, তাদের সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে।’

৯. প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সুযোগ-সুবিধা: নির্বাচনে যেন সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সমান সুযোগ সুবিধা পায়, বিশেষ করে যারা বিদায়ী জাতীয় সংসদের এমপি হিসেবে রয়েছেন, তারা যেন কোন বাড়তি সুবিধা না পান, যারা নির্বাচনকালীন সময়ে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, তারা যেন আলাদা প্রটোকল না পান, সেই সমস্ত বিষয়গুলো নিশ্চিত হবে এবং সকল রাজনৈতিক দল প্রচার-প্রচারণার সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে।’

১০. ভোট কারচুপি এবং কালো টাকা প্রতিরোধ: নির্বাচনে কালো টাকা, ভোট ডাকাতি, ভোট জালিয়াতি ইত্যাদিকে কঠোরভাবে দমন করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সকল রকম সহযোগিতা করবে সরকার এবং কোনো অবস্থাতেই এসবকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

মূলত, এই দশটি অঙ্গীকারের ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ হবে বলে আওয়ামী লীগ মনে করে এবং এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই দশ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে, যাতে সকলেই আওয়ামী লীগের অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের দশ দফা প্রস্তাব

আপডেট সময় : ০৮:১৪:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সমঝোতা করতে চায়। এই নির্বাচন যেন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এবং এই নির্বাচন নিয়ে যেন কোনো আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি না হয়, সেজন্য সকল পক্ষকে আস্থায় নিতে চায় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের ব্যাপারে আওমী লীগ তার সুস্পষ্ট অঙ্গীকার এবং দৃষ্টিভঙ্গি জানাচ্ছে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলোকে। আর এ লক্ষ্যেই নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের একটি দশ দফা প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আগামীকাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি এই দশ দফা প্রস্তাবনা বা নির্বাচনী রূপরেখা উপস্থাপন করবেন। একইভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ, যাদের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে, তাদেরকে এই দশ দফা রূপরেখা প্রদান করা হবে। এটি আওয়ামী লীগের সুস্থ রাজনৈতিক অবস্থান এবং এই আলোকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে’।

কি আছে এই দশ দফায়? আসুন দেখে নেওয়া যাক আওয়ামী লীগের নির্বাচনী দশ দফা প্রস্তাবের মূল বক্তব্যগুলো কি কি?

১. নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী: সংবিধানে যেভাবে বিধৃত রয়েছে, সেভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২. নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ: নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে। সরকার বা অন্য কেউ নির্বাচন কমিশনের ওপর কোনো রকম হস্তক্ষেপ করবে না।

৩. প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর কোনো রকম হস্তক্ষেপ করবে না।

৪. নির্বাচনকালীন সরকারের সীমিত দায়িত্ব: যখনই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে, তখন থেকেই দেশে যে সরকারটি আছে সেই সরকারটি নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে পরিগণিত হবে। তখন সরকার তার কার্যক্রম সীমিত করবে এবং রুটিন কাজের বাইরে কোনো কার্যক্রম তারা করবে না।

৫. বিদেশি পর্যবেক্ষক: নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ঠভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য সকল পক্ষকেই স্বাগত জানানো হবে এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকরা যেন নির্বিঘ্নে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন, সেজন্য তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে।

৬. অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন: আওয়ামী লীগ মনে করে, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলো জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ। জনগণ যেন স্বাধীনভাবে এবং তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হবে।’

৭. নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ: যে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের ইচ্ছা, অনিচ্ছা অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে, বর্জনও করতে পারে। কিন্তু সেটিকে কখনোই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যত্যয় হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। আর এরকম অবস্থানে নির্বাচনকে কেউ ঝুঁকিতে ফেলার চেষ্টা করলেও সেটি সফল হবে না।’

৮. নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড: এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করবে, তাদের সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে।’

৯. প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সুযোগ-সুবিধা: নির্বাচনে যেন সকল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সমান সুযোগ সুবিধা পায়, বিশেষ করে যারা বিদায়ী জাতীয় সংসদের এমপি হিসেবে রয়েছেন, তারা যেন কোন বাড়তি সুবিধা না পান, যারা নির্বাচনকালীন সময়ে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, তারা যেন আলাদা প্রটোকল না পান, সেই সমস্ত বিষয়গুলো নিশ্চিত হবে এবং সকল রাজনৈতিক দল প্রচার-প্রচারণার সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে।’

১০. ভোট কারচুপি এবং কালো টাকা প্রতিরোধ: নির্বাচনে কালো টাকা, ভোট ডাকাতি, ভোট জালিয়াতি ইত্যাদিকে কঠোরভাবে দমন করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সকল রকম সহযোগিতা করবে সরকার এবং কোনো অবস্থাতেই এসবকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

মূলত, এই দশটি অঙ্গীকারের ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ হবে বলে আওয়ামী লীগ মনে করে এবং এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই দশ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে, যাতে সকলেই আওয়ামী লীগের অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট হয়।