এবার সমুদ্রজয়ের পথে প্রস্তত ভারতের ‘মৎস্য ৬০০০’
- আপডেট সময় : ০৯:৪৪:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৬২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা পোর্টাল: চন্দ্র, সূর্যের পর এবার সমুদ্র! ভারত নিজের পদচারণা সর্বত্র ছড়িয়েই যাচ্ছে। চন্দ্র জয়ের পর সূর্যেও মহাকাশযান পাঠিয়েছিল তারা। এবার সমুদ্র জয়ের পথে ভারত। অতল সাগরের গভীরে নামবে ভারতের সমুদ্রযান ‘মৎস্য-৬০০০’।
এই সমুদ্রযানের প্রস্তুতি দেখতে এর অন্দরে পা রাখলেন দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। ভারতের চেন্নাইয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওশেন টেকনোলজিতে নিজে গিয়ে এই সমুদ্রযানের কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন রিজিজু।
এসময় ‘মৎস্য ৬০০০’-এর ভেতরেও ঢোকেন তিনি। কীভাবে এই সমুদ্রযান কাজ করবে, তা বোঝার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে। সমুদ্রযানের একাধিক ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি।’ সমুদ্রের ৬০০০ মিটার গভীরে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্যেই তৈরি করা হচ্ছে এই ‘মৎস্য ৬০০০’। কিছুটা সাবমেরিনের মতো হলেও কাজকর্মে এই সমুদ্রযানটি অনেকটাই ভিন্ন। এটি সাবমার্সিবল সাবমেরিন।
গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান ও গবেষণার নিরিখেই এই অভিযান। যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ ৬টি দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলবে অভিযান। সমুদ্রের গভীরে নেমে গবেষণা করবেন বিজ্ঞানীরা। প্রথম অভিযানে ৫০০ মিটার নিচে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের।
২০২৬ সালে ভারতের ‘সমুদ্রায়ন মিশন’-এর ঘোষণা করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি।। যেই সমুদ্রযানে চেপে প্রথমবারের মত দেশটির মানুষ নামবে অতল মহাসাগরের গভীরে। ইতোমধ্যেই ভারতীয় সেই সাবমেরিনের ট্রায়াল রান-এর প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া হয়েছে।’
জানা গেছে, মহাসাগরের ৬ হাজার মিটার নিচে পাড়ি দেবে ভারতের সাবমেরিন। প্রথম পর্যায়ে তিনজন বিজ্ঞানী যাবেন। ২০২৪ সাল থেকে শুরু হবে এর ট্রায়াল রান। সাগরের জলরাশির বিপুল চাপ যাতে সইতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে সাবমেরিনে। অত্যন্ত উন্নতি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সমুদ্রায়ন প্রকল্প
সমুদ্রায়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ ওসান টেকনোলজির গবেষক-ইঞ্জিনিয়াররা সমুদ্রযান তৈরি করছেন।’
তিনজন যেতে পারবেন এই সমুদ্রযানে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এটি ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত সমুদ্রের গভীরে টিকে থাকতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে এই সময়সীমা ৯৬ ঘণ্টা অবধি বাড়বে। এক হাজার থেকে সাড়ে ৫ হাজার মিটার গভীরতায় গিয়েও এই সমুদ্রযান কাজ করতে পারবে।’
বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য যে কোনও রকম ডিভাইস, সেন্সর নিয়ে এই জলযান গভীর সমুদ্রে চলে যেতে পারবে’।
অপরদিকে, ‘মৎস্য ৬০০০’ সমুদ্রযানের খোলস এতটাই শক্তপোক্ত যে সাগরের বিপুল জলরাশির চাপ সহ্য করতে পারবে। ভেতরে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থাও থাকবে। আগামী ৫ বছরের সমুদ্র গবেষণার জন্য ইতিমধ্যেই ৪,০৭৭ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করেছে সরকার।
অভিযানের উদ্দেশ্য
সমুদ্রের অতলে নিকেল, ম্যাঙ্গানিজ, কোবাল্টসহ একাধিক খনিজ পদার্থের খোঁজ চালাতেই এই সমুদ্র অভিযান বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাছাড়া সমুদ্রের অতলে অনেক অজানা প্রজাতির প্রাণীর খোঁজও চলবে এই অভিযানে।’
এছাড়া, সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র নিয়ে গবেষণা চালাবেন বিজ্ঞানীরা। মৎস্য-৬০০০ সাবমেরিনটিকে নরওয়ের সার্টিফিকেশন এজেন্সি ইতিমধ্যেই ছাড়পত্র দিয়েছে। ১০ হাজার মিটার সমুদ্র তলদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিয়েছে নরওয়ের এই সংস্থা।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা