ঢাকা ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য হলেন ২৫ গণমাধ্যম কর্মী রাজনৈতিক দলের সাথে মামলায় জড়িয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি না করার আহবান জোড়া কবরে শুয়ে রইলেন তারা, নিভে গেল দুই পরিবারের বেঁচে থাকার স্বপ্ন সলঙ্গা থানা ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়কের নামে থানায় অভিযোগ  প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্তপূর্বক অপসারণের দাবী রাজশাহীতে বৈষম্যমুক্ত নগরের দাবিতে আলোচনা সভা  বেলকুচিতে হত্যাকান্ডের বিচার ও পি আর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনের দাবিতে গণ সমাবেশ রামেকে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী সলঙ্গায় সাংবাদিকের উপর যুবদল নেতার হামলার অভিযোগ  খাজা মেডিকেল প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ আমজাদ হোসেনের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প 

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের বাংলাদেশ নিয়ে চাপ কমেনি, বরং বাড়ছে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৭:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশের উপর বিভিন্ন রকমের চাপ প্রয়োগ করছে। গতকাল ইউরোপের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। শুধু মানবাধিকার নয়, বরং বলা যেতে পারে বিএনপিপন্থী এনজিও অধিকার’র ব্যাপারে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব আনা হয় এবং সেই প্রস্তাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার চর্চার বিষয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকার কর্মী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কাজের নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।

বোঝা যাচ্ছে যে, বিএনপির পক্ষে লবিস্টরা এই প্রস্তাব এনেছে এবং এই প্রস্তাবে ইউরোপের পার্লামেন্টের মধ্য ডানপন্থী সোশ্যাল ডেমোক্রেট এবং বামপন্থীরা আলোচনা করেছেন। প্রস্তাবে অধিকার’র কাজের বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে’।

যে সময়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করে গেলেন, মধ্যরাতে জলের গান শুনে মুগ্ধতা ছড়ালেন; সেরকম পরিস্থিতিতে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ সৃষ্টি করতে পারে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে এই বিষয়গুলো উদ্বেগজনক। একইভাবে জি-২০ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডনের সাথে সেলফি তোলার পরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নীতির খুব একটা পরিবর্তন হয়েছে বলে কূটনৈতিকরা মনে করেন না। বরং তারা মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অতীতের মতোই অবস্থানে আছেন। খুব শিগগিরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরো কিছু প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসবেন এবং সেখানে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা বলবেন।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর পার্সোনাল ডিপ্লোমেসি’র কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কিংবা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে এসেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর যে নেতিবাচক ধারণা আছে, তা নিরন্তর অপপ্রচারের ফল। একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এইসব দেশে নিরন্তরভাবে নালিশ করছে এবং বিভিন্ন অপপ্রচার করছে। তাই এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশের যে পাল্টা সমন্বিত কূটনীতি প্রয়োজন, সেটির অনুপস্থিতি রয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো কূটনৈতিকভাবে দিক নির্দেশনাহীন কাজ করছে। শুধুমাত্র বর্তমান ইস্যুগুলোকেই সামনে আনছে।’ এমনকি নির্বাচনে বিশ্বের অন্যান্য প্রভাবশালী দেশগুলোর আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রেও কোনো রোডম্যাপ নেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোতে যারা রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তারাও এক ধরনের হাত-পা গুটিয়ে আছেন। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সদর দপ্তর ব্রাসেলস-এ রাষ্ট্রদূতদের ভূমিকা এবং কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’ তারা কতটুকু নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন, সেটি কারো কারো কাছে একটি বড় প্রশ্নবোধক?

প্রধানমন্ত্রী এখন বিশ্ব নেতা। তার বিশ্বব্যাপী একটা ইমেজ রয়েছে’। কিন্তু এই ইমেজের বাইরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত যে অপপ্রচার হচ্ছে, সেটি বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর না হলে প্রধানমন্ত্রীর ‘পার্সোনাল ডিপ্লোমেসি’তে তার ইমেজ বাড়বে বটে, তবে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের ভ্রান্ত ধারণা দূর হবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের বাংলাদেশ নিয়ে চাপ কমেনি, বরং বাড়ছে

আপডেট সময় : ০৮:৩৭:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশের উপর বিভিন্ন রকমের চাপ প্রয়োগ করছে। গতকাল ইউরোপের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। শুধু মানবাধিকার নয়, বরং বলা যেতে পারে বিএনপিপন্থী এনজিও অধিকার’র ব্যাপারে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব আনা হয় এবং সেই প্রস্তাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার চর্চার বিষয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকার কর্মী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কাজের নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।

বোঝা যাচ্ছে যে, বিএনপির পক্ষে লবিস্টরা এই প্রস্তাব এনেছে এবং এই প্রস্তাবে ইউরোপের পার্লামেন্টের মধ্য ডানপন্থী সোশ্যাল ডেমোক্রেট এবং বামপন্থীরা আলোচনা করেছেন। প্রস্তাবে অধিকার’র কাজের বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে’।

যে সময়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করে গেলেন, মধ্যরাতে জলের গান শুনে মুগ্ধতা ছড়ালেন; সেরকম পরিস্থিতিতে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ সৃষ্টি করতে পারে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে এই বিষয়গুলো উদ্বেগজনক। একইভাবে জি-২০ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডনের সাথে সেলফি তোলার পরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নীতির খুব একটা পরিবর্তন হয়েছে বলে কূটনৈতিকরা মনে করেন না। বরং তারা মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অতীতের মতোই অবস্থানে আছেন। খুব শিগগিরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরো কিছু প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসবেন এবং সেখানে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা বলবেন।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর পার্সোনাল ডিপ্লোমেসি’র কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কিংবা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে এসেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর যে নেতিবাচক ধারণা আছে, তা নিরন্তর অপপ্রচারের ফল। একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এইসব দেশে নিরন্তরভাবে নালিশ করছে এবং বিভিন্ন অপপ্রচার করছে। তাই এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশের যে পাল্টা সমন্বিত কূটনীতি প্রয়োজন, সেটির অনুপস্থিতি রয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো কূটনৈতিকভাবে দিক নির্দেশনাহীন কাজ করছে। শুধুমাত্র বর্তমান ইস্যুগুলোকেই সামনে আনছে।’ এমনকি নির্বাচনে বিশ্বের অন্যান্য প্রভাবশালী দেশগুলোর আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রেও কোনো রোডম্যাপ নেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোতে যারা রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তারাও এক ধরনের হাত-পা গুটিয়ে আছেন। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সদর দপ্তর ব্রাসেলস-এ রাষ্ট্রদূতদের ভূমিকা এবং কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’ তারা কতটুকু নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন, সেটি কারো কারো কাছে একটি বড় প্রশ্নবোধক?

প্রধানমন্ত্রী এখন বিশ্ব নেতা। তার বিশ্বব্যাপী একটা ইমেজ রয়েছে’। কিন্তু এই ইমেজের বাইরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্টসহ বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত যে অপপ্রচার হচ্ছে, সেটি বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর না হলে প্রধানমন্ত্রীর ‘পার্সোনাল ডিপ্লোমেসি’তে তার ইমেজ বাড়বে বটে, তবে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের ভ্রান্ত ধারণা দূর হবে না।