ঢাকা ০৭:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ: অপসরন চেয়ে সারা দেশে চলছে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ  আজ মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা: রাজশাহীতে দেবীর চরণে ভক্তের শ্রদ্ধা রাউজানে মন্ডপে মন্ডপে চলছে দূর্গাপূজা রায়গঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ৫ জনকে কারাদন্ড টেকনাফে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অস্ত্রদিয়ে ফাঁসানো নিরপরাধ শহিদুল্লাহর মুক্তির দাবি নেতাদের শিক্ষক উন্নয়নের জন্য ইউনেস্কো-হামদান পুরস্কার পেয়েছে ‘গুড নেইবারস বাংলাদেশ’ বেলকুচিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভন্ড কবিরাজের বাড়িতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযান   বিশ্ব শিক্ষক দিবসে নিজ সহকর্মিদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন গুণী শিক্ষক শওকত আলী বদির ক্যাশিয়ার ফারুককে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হলেন র‍্যাব সদস্যরা

শর্মিলা ঢাকায় এলেই বিএনপির নেতারা কেন বিরক্ত হন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৩৩:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সৈয়দ শর্মিলা রহমান, ডাক নাম সিথি। বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী। দুই সন্তান নিয়ে তিনি থাকেন লন্ডনে’। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া যখনই সংকটে পড়েন, যখনই অসুস্থ হন, তখনই তিনি সবকিছু ফেলে ছুটে আসেন। তার বাংলাদেশে আসা পছন্দ করেন না তারেক জিয়া। তারেক জিয়ার ধারণা, সরকারের সাথে শর্মিলার গোপন সম্পর্ক রয়েছে। আর এ কারণেই শর্মিলা ঢাকায় এলে কোনো বাধা দেওয়া হয় না।

গত পনেরো বছরে বেগম খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক জিয়া, বড় ছেলের স্ত্রী জোবায়দা রহমানসহ বেগম জিয়ার পরিবারের সকলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শুধুমাত্র মামলা হয়নি সৈয়দা শর্মিলা রহমানের বিরুদ্ধে। এমনকি তার প্রয়াত স্বামী আরাফাত রহমান কোকো মানি লন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন মালয়েশিয়ায়।

সৈয়দা শর্মিলা রহমানের সাথে কি সরকারের কোনো গোপন সম্পর্ক রয়েছে? সৈয়দা শর্মিলা রহমান কি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে নিয়ে আসার জন্য বেগম জিয়াকে প্রভাবিত করতে চান বা তার মধ্যস্থতায় কি বেগম খালেদা জিয়া কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফিরোজা এসেছেন? এই প্রশ্নগুলো বিএনপির রাজনীতিতে প্রতিনিয়ত চর্চা হচ্ছে। আর এই চর্চার কারণেই শর্মিলা রহমানকে ঢাকায় স্বাগত জানায় না বিএনপি নেতারা। শর্মিলা রহমান ঢাকায় এলে বিএনপির নেতারা তাকে এড়িয়ে চলেন। এমনকি বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা তার সঙ্গে কুশলাদি পর্যন্ত বিনিময় করেন না। কেন এই ধরনের ঘটনা?- এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিএনপির একাধিক নেতা।

বিএনপির একজন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেছেন, শর্মিলা রহমান যেহেতু রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না, তিনি বা তার প্রয়াত স্বামী কখনোই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না’। একান্ত ব্যক্তিগত পারিবারিক কারণে তিনি ঢাকায় আসেন। বেগম খালেদা জিয়ার শুশ্রূষা করেন, তাকে সময় দেন, অসুস্থ শাশুড়ির সেবা-যত্ন করেন। এটি তার পারিবারিক বিষয়। এখানে বিএনপির নেতারা নাক গলাতে চান না এবং বেগম খালেদা জিয়া বা শর্মিলা রহমান দু’জনের কেউই এটি পছন্দ করেন না। তারা একান্তে, নীরবে পারিবারিক সময় কাটাতে চান। এটা রাজনৈতিক বহির্ভূত বিষয়।

তবে বিএনপির অন্য একজন সিনিয়র নেতা এই মতের সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। ওই নেতা বলেন, ২০১৮’র নির্বাচনে শর্মিলা একাধিক ব্যক্তির মনোনয়নের জন্য তদবির করেছিলেন, সুপারিশ করেছিলেন এবং শর্মিলা রহমানের তদবিরে বেশ কয়েকজন, বিশেষ করে মাগুরা-যশোর অঞ্চলের কয়েকজনের মনোনয়নও হয়েছিল। কিন্তু তারা ওই নির্বাচনে পরাজিত হয়।’

বিএনপির ওই নেতা বলেন, শর্মিলা রহমানের সাথে সরকারের একটি সমঝোতা রয়েছে এবং এই সমঝোতার কারণেই বিএনপি তাকে এড়িয়ে চলে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই নেতা মনে করেন, এখন যে আন্দোলন এবং রাজনৈতিক সংকট চলছে, সেই আন্দোলন এবং রাজনৈতিক সংকটে শর্মিলা সরকারের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে পারেন বলে তাদের সন্দেহ। কারণ এই সময় তিনি দেশে এসে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রভাবিত করতে পারেন।

উল্লেখ্য যে, এর আগেও বেগম খালেদা জিয়াকে দেখার জন্য শর্মিলা ছুটে এসেছিলেন। এমনকি কারাগারে পর্যন্ত তিনি দেখা করেছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে, এবার শর্মিলা রহমানের ঢাকায় আসার পেছনে একটি সমঝোতার চেষ্টা আছে। তিনি সরকারের সাথে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি নিয়ে ফয়সালা করতে চান। সরকারের প্রভাবশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সৈয়দা শর্মিলা রহমানের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই তিনি বেগম খালেদা জিয়ার ফিরোজায় থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন বলে গুঞ্জন রয়েছে’। এই অবস্থায় শর্মিলা কি বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়ার কোনো মিশন বাস্তবায়নের জন্য এলেন? এটি নিয়েই বিএনপিতে সন্দেহ এবং অস্বস্তি রয়েছে। আর এ কারণেই বিএনপির নেতারা ঢাকায় শর্মিলার আগমনে খুশি নন; বরং বিরক্ত’।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

শর্মিলা ঢাকায় এলেই বিএনপির নেতারা কেন বিরক্ত হন

আপডেট সময় : ০২:৩৩:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: সৈয়দ শর্মিলা রহমান, ডাক নাম সিথি। বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী। দুই সন্তান নিয়ে তিনি থাকেন লন্ডনে’। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া যখনই সংকটে পড়েন, যখনই অসুস্থ হন, তখনই তিনি সবকিছু ফেলে ছুটে আসেন। তার বাংলাদেশে আসা পছন্দ করেন না তারেক জিয়া। তারেক জিয়ার ধারণা, সরকারের সাথে শর্মিলার গোপন সম্পর্ক রয়েছে। আর এ কারণেই শর্মিলা ঢাকায় এলে কোনো বাধা দেওয়া হয় না।

গত পনেরো বছরে বেগম খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক জিয়া, বড় ছেলের স্ত্রী জোবায়দা রহমানসহ বেগম জিয়ার পরিবারের সকলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শুধুমাত্র মামলা হয়নি সৈয়দা শর্মিলা রহমানের বিরুদ্ধে। এমনকি তার প্রয়াত স্বামী আরাফাত রহমান কোকো মানি লন্ডারিং মামলায় অভিযুক্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন মালয়েশিয়ায়।

সৈয়দা শর্মিলা রহমানের সাথে কি সরকারের কোনো গোপন সম্পর্ক রয়েছে? সৈয়দা শর্মিলা রহমান কি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে নিয়ে আসার জন্য বেগম জিয়াকে প্রভাবিত করতে চান বা তার মধ্যস্থতায় কি বেগম খালেদা জিয়া কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফিরোজা এসেছেন? এই প্রশ্নগুলো বিএনপির রাজনীতিতে প্রতিনিয়ত চর্চা হচ্ছে। আর এই চর্চার কারণেই শর্মিলা রহমানকে ঢাকায় স্বাগত জানায় না বিএনপি নেতারা। শর্মিলা রহমান ঢাকায় এলে বিএনপির নেতারা তাকে এড়িয়ে চলেন। এমনকি বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা তার সঙ্গে কুশলাদি পর্যন্ত বিনিময় করেন না। কেন এই ধরনের ঘটনা?- এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিএনপির একাধিক নেতা।

বিএনপির একজন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলেছেন, শর্মিলা রহমান যেহেতু রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না, তিনি বা তার প্রয়াত স্বামী কখনোই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না’। একান্ত ব্যক্তিগত পারিবারিক কারণে তিনি ঢাকায় আসেন। বেগম খালেদা জিয়ার শুশ্রূষা করেন, তাকে সময় দেন, অসুস্থ শাশুড়ির সেবা-যত্ন করেন। এটি তার পারিবারিক বিষয়। এখানে বিএনপির নেতারা নাক গলাতে চান না এবং বেগম খালেদা জিয়া বা শর্মিলা রহমান দু’জনের কেউই এটি পছন্দ করেন না। তারা একান্তে, নীরবে পারিবারিক সময় কাটাতে চান। এটা রাজনৈতিক বহির্ভূত বিষয়।

তবে বিএনপির অন্য একজন সিনিয়র নেতা এই মতের সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। ওই নেতা বলেন, ২০১৮’র নির্বাচনে শর্মিলা একাধিক ব্যক্তির মনোনয়নের জন্য তদবির করেছিলেন, সুপারিশ করেছিলেন এবং শর্মিলা রহমানের তদবিরে বেশ কয়েকজন, বিশেষ করে মাগুরা-যশোর অঞ্চলের কয়েকজনের মনোনয়নও হয়েছিল। কিন্তু তারা ওই নির্বাচনে পরাজিত হয়।’

বিএনপির ওই নেতা বলেন, শর্মিলা রহমানের সাথে সরকারের একটি সমঝোতা রয়েছে এবং এই সমঝোতার কারণেই বিএনপি তাকে এড়িয়ে চলে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই নেতা মনে করেন, এখন যে আন্দোলন এবং রাজনৈতিক সংকট চলছে, সেই আন্দোলন এবং রাজনৈতিক সংকটে শর্মিলা সরকারের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে পারেন বলে তাদের সন্দেহ। কারণ এই সময় তিনি দেশে এসে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রভাবিত করতে পারেন।

উল্লেখ্য যে, এর আগেও বেগম খালেদা জিয়াকে দেখার জন্য শর্মিলা ছুটে এসেছিলেন। এমনকি কারাগারে পর্যন্ত তিনি দেখা করেছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে, এবার শর্মিলা রহমানের ঢাকায় আসার পেছনে একটি সমঝোতার চেষ্টা আছে। তিনি সরকারের সাথে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি নিয়ে ফয়সালা করতে চান। সরকারের প্রভাবশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সৈয়দা শর্মিলা রহমানের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই তিনি বেগম খালেদা জিয়ার ফিরোজায় থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন বলে গুঞ্জন রয়েছে’। এই অবস্থায় শর্মিলা কি বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়ার কোনো মিশন বাস্তবায়নের জন্য এলেন? এটি নিয়েই বিএনপিতে সন্দেহ এবং অস্বস্তি রয়েছে। আর এ কারণেই বিএনপির নেতারা ঢাকায় শর্মিলার আগমনে খুশি নন; বরং বিরক্ত’।