সংবাদ শিরোনাম ::
শাহজাদপুরে আওয়ামীলীগের সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা বেলকুচিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ  শাহজাদপুরে অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ জন আটক ৭ নভেম্বর না আসলে বাংলাদেশ বিলীন হয়ে যেত: বাউবি উপাচার্য বেলকুচির সেন ভাঙ্গাবাড়ী বাজার মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন “জয় বাংলা” স্লোগান দেওয়ায় সাবেক পিপি-কে গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ উলিপুরে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র মেরামতের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ খাজা শাহ্ এনায়েতপুরী (রহ:) এর ১১০ তম ওরছ শরীফের দাওয়াত পত্র বিতরণ  রাজশাহীর মাঠে স্পীড স্কেটিংয়ে বগুড়ার স্কেটারদের ৩টি স্বর্ণপদক সহ ৮ পদক অর্জন এনায়েতপুরে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি উপলক্ষে আলোচনা সভা

কুড়িগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রবাসীর স্ত্রী উপর হামলা বাড়িঘর ভাংচুর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:০৩:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৮৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা পোর্টাল: কুড়িগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে সিঙ্গাপুর প্রবাসীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। বাড়িতে থাকা প্রবাসীর স্ত্রীর ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ভিটা ছাড়া করারও অভিযোগ উঠেছে। বাড়িঘর ভেঙে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রাম পৌরসভা এলাকার চর কুড়িগ্রাম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঘটনার পর ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনা জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রবাসীর স্ত্রী আকলিমা বেগম। তবে হামলাকারীদের হুমকিতে সন্তানসহ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে পৌরসভা এলাকার চর কুড়িগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা সিঙ্গাপুর প্রবাসী হযরত ক্রয়কৃত বসতবাড়িতে হামলা চালান স্থানীয় হাশেম মাস্টার ও তার সহযোগীরা। কুড়িগ্রাম শহরের জিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম হাশেম মাস্টারকে সহায়তা করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। রাম দা সহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শতাধিক বহিরাগত দুর্বৃত্ত প্রকাশ্য দিবালোকে হামলা ও লুটপাট চালান। তারা হযরতের স্ত্রী আকলিমা বেগমকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে রান্নাঘর সহ বাড়ির তিনটি ঘর ভেঙ্গে লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর শেষে ঘরের বেড়া ও টিন খুলে নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তদের হামলায় প্রাণ বাঁচাতে আকলিমা তার সন্তানকে নিয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। স্থানীয় ব্যক্তিরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে আকলিমা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই সবকিছু লুট করে নিয়ে যায় হাশেম মাস্টার ও শফিকুলের বাহিনী। গৃহবধূ আকলিমা বেগম বলেন, ‘হাশেম মাস্টারের সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িঘর, স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ টাকাসহ সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছে। ঘর ভেঙ্গে দিয়ে বসত ভিটা ফাঁকা করে ফেলছে। তাদের তান্ডব দেখে জীবনের নিরাপত্তার জন্য আমি ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ এসে ছবি-ভিডিও করে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর দুর্বৃত্তরা আবারো ফিরে এসে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। আমি পরবর্তীতে আবারো ফোন দিলে পুলিশ থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলে। অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই। আমার স্বামী বিদেশে। আমি সন্তানসহ চরম নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে বেড়াচ্ছি। ‘স্থানীয়দের সাথে কথা বলে আকলিমার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে হাশেম মাস্টার ও শফিকুল বাহিনীর ভয়ে কেউ গণমাধ্যমে নাম প্রকাশ করতে চাননি।

স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আফজাল হোসেন বলেন, ‘ওই প্রবাসীর সাথে হাশেম মাস্টারের জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। পুলিশও বিষয়টা জানে। বৃহস্পতিবার দুই পক্ষকে নিয়ে পুলিশের বসার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার দুপুরে নামাজ পড়ে গিয়ে শুনি প্রবাসির বাড়িতে হামলা-লুটপাট হয়েছে। কারা করেছে আপনারা খোঁজ নেন।’ অভিযুক্ত হাশেম মাস্টারকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি রৌমারীর বাসিন্দা হলেও কুড়িগ্রাম জিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির রাজনীতির সক্রিয় সদস্য শফিকুল ইসলামের সহায়তার প্রবাসীর বাড়িতে হামলা চালান। শফিকুল ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃত্বের আড়ালে গুন্ডা বাহিনী লালন করে চুক্তিতে বিভিন্ন দখলদারিতে প্রভাব বিস্তার করেন বলে জেলা বিএনপি দলীয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে শফিকুল তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ ওই জায়গা নিয়ে চারজন মালিকানা দাবি করছে। বিষয়টি নিয়ে মেয়র সহ থানায় বসে ফয়সালা করার কথা। আমি ফয়সালার করার জন্য কয়েকবার থানায় গিয়েছিলাম। হামলা বা ভাঙচুরের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। গত পরশু দলীয় কাজ শেষে ঢাকা থেকে ফিরেছি। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। এগুলা হাশেম মাস্টার আর হযরতের পরিবারের বিষয়। যারা আমাকে দায়ী করছে তারা ডাহা মিথ্যা কথা বলছে। আমার কোনও বাহিনী নাই।

’পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম বলেন, ‘ গুন্ডা দিয়ে প্রবাসীর বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে শুনেছি। এর সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

কুড়িগ্রাম সদর থানা অফিসার্স ইনচার্জ ( ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রবাসীর স্ত্রীর নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘এমন খবর আমার কাছে নেই। তারপরও পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কুড়িগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রবাসীর স্ত্রী উপর হামলা বাড়িঘর ভাংচুর

আপডেট সময় : ১১:০৩:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাংলা পোর্টাল: কুড়িগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে সিঙ্গাপুর প্রবাসীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। বাড়িতে থাকা প্রবাসীর স্ত্রীর ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ভিটা ছাড়া করারও অভিযোগ উঠেছে। বাড়িঘর ভেঙে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রাম পৌরসভা এলাকার চর কুড়িগ্রাম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঘটনার পর ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনা জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রবাসীর স্ত্রী আকলিমা বেগম। তবে হামলাকারীদের হুমকিতে সন্তানসহ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে পৌরসভা এলাকার চর কুড়িগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা সিঙ্গাপুর প্রবাসী হযরত ক্রয়কৃত বসতবাড়িতে হামলা চালান স্থানীয় হাশেম মাস্টার ও তার সহযোগীরা। কুড়িগ্রাম শহরের জিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম হাশেম মাস্টারকে সহায়তা করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। রাম দা সহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শতাধিক বহিরাগত দুর্বৃত্ত প্রকাশ্য দিবালোকে হামলা ও লুটপাট চালান। তারা হযরতের স্ত্রী আকলিমা বেগমকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে রান্নাঘর সহ বাড়ির তিনটি ঘর ভেঙ্গে লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর শেষে ঘরের বেড়া ও টিন খুলে নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তদের হামলায় প্রাণ বাঁচাতে আকলিমা তার সন্তানকে নিয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। স্থানীয় ব্যক্তিরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে আকলিমা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই সবকিছু লুট করে নিয়ে যায় হাশেম মাস্টার ও শফিকুলের বাহিনী। গৃহবধূ আকলিমা বেগম বলেন, ‘হাশেম মাস্টারের সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িঘর, স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ টাকাসহ সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছে। ঘর ভেঙ্গে দিয়ে বসত ভিটা ফাঁকা করে ফেলছে। তাদের তান্ডব দেখে জীবনের নিরাপত্তার জন্য আমি ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ এসে ছবি-ভিডিও করে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর দুর্বৃত্তরা আবারো ফিরে এসে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। আমি পরবর্তীতে আবারো ফোন দিলে পুলিশ থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলে। অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় নাই। আমার স্বামী বিদেশে। আমি সন্তানসহ চরম নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে বেড়াচ্ছি। ‘স্থানীয়দের সাথে কথা বলে আকলিমার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে হাশেম মাস্টার ও শফিকুল বাহিনীর ভয়ে কেউ গণমাধ্যমে নাম প্রকাশ করতে চাননি।

স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আফজাল হোসেন বলেন, ‘ওই প্রবাসীর সাথে হাশেম মাস্টারের জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। পুলিশও বিষয়টা জানে। বৃহস্পতিবার দুই পক্ষকে নিয়ে পুলিশের বসার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার দুপুরে নামাজ পড়ে গিয়ে শুনি প্রবাসির বাড়িতে হামলা-লুটপাট হয়েছে। কারা করেছে আপনারা খোঁজ নেন।’ অভিযুক্ত হাশেম মাস্টারকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি রৌমারীর বাসিন্দা হলেও কুড়িগ্রাম জিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির রাজনীতির সক্রিয় সদস্য শফিকুল ইসলামের সহায়তার প্রবাসীর বাড়িতে হামলা চালান। শফিকুল ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃত্বের আড়ালে গুন্ডা বাহিনী লালন করে চুক্তিতে বিভিন্ন দখলদারিতে প্রভাব বিস্তার করেন বলে জেলা বিএনপি দলীয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে শফিকুল তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ ওই জায়গা নিয়ে চারজন মালিকানা দাবি করছে। বিষয়টি নিয়ে মেয়র সহ থানায় বসে ফয়সালা করার কথা। আমি ফয়সালার করার জন্য কয়েকবার থানায় গিয়েছিলাম। হামলা বা ভাঙচুরের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। গত পরশু দলীয় কাজ শেষে ঢাকা থেকে ফিরেছি। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। এগুলা হাশেম মাস্টার আর হযরতের পরিবারের বিষয়। যারা আমাকে দায়ী করছে তারা ডাহা মিথ্যা কথা বলছে। আমার কোনও বাহিনী নাই।

’পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম বলেন, ‘ গুন্ডা দিয়ে প্রবাসীর বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে শুনেছি। এর সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

কুড়িগ্রাম সদর থানা অফিসার্স ইনচার্জ ( ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রবাসীর স্ত্রীর নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘এমন খবর আমার কাছে নেই। তারপরও পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেবে।’