তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান খুঁজছে বিএনপি
- আপডেট সময় : ০৯:৩৬:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৬৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। বিএনপির নেতারা বলছেন, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। এরকম নির্বাচন তারা হতেও দেবে না বলে ঘোষণা করেছে। কিন্তু নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এক দফা আন্দোলন এখন পর্যন্ত সরকারের উপর কোনোরকম চাপ তৈরী করতে পারেনি। তবে বিএনপির নেতারা এখনো আশাবাদী’। তারা বলছেন, অক্টোবরের মধ্যেই তারা আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন এবং দেশে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। কিসের ভিত্তিতে,কোন যুক্তিতে তারা এরকম আশাবাদ ব্যক্ত করছেন তার ব্যাখ্যা অবশ্য বিএনপির নেতারা দিচ্ছেন না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের পাশাপাশি সম্ভাব্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান কে হবেন? এ নিয়েও তারা নানা রকম আলাপ-আলোচনা করছেন। বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, আমরা ২০১১’র আগে যেভাবে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা ছিল, সেরকম তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। আর সেটি ফিরিয়ে আনার জন্য সংবিধানে ওই অংশটি পুনঃস্থাপন করা প্রয়োজন। যেহেতু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, সেই জন্য তারা চাইলে এটা ফিরিয়ে আনতে পারে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন এবং বিএনপির নেতারা এখনো আশাবাদী যে- ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আবার ফিরে আসবে।
সেরকম ব্যবস্থা যদি ফিরে আসে তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন বিদায়ী প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাবেন আগামী ২৫শে সেপ্টেম্বর’। ২৬শে সেপ্টেম্বর নতুন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শপথ গ্রহণ করবেন। আগে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে সন্নিবেশিত ছিল, তখন ব্যবস্থা ছিল সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হবেন। সেটি যদি পুন:স্থাপিত করা হয়, তাহলে হাসান ফয়জ সিদ্দিকী হবেন আগামী আগামী তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান।’
তবে এর বাইরেও বিএনপি বিভিন্ন ব্যক্তির নাম তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে আলোচনা করছে। বিশেষ করে কূটনৈতিক অঙ্গনে যখন আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, তখন বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু নাম বলা হচ্ছে, যাদেরকে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে পেলে আপত্তি করবে না এবং তাদের জাতীয়ভাবে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলেও তারা মনে করেন। এরকম ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন সাবেক আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিঞা। আব্দুল ওয়াহাব মিঞা বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পর কিছু দিনের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরবর্তীতে যখন নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়, তখন তিনি পদত্যাগ করেন।
বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে প্রথম পছন্দ তাদের আব্দুল ওয়াহাব মিঞা’। এছাড়াও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে তারা হোসেন জিল্লুর রহমানের কথাও বিভিন্ন স্থানে বলেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ড. হোসেন জিলুর রহমান এখন ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন। তিনি ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দ্বিতীয় ভাগে উপদেষ্টা হয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অভিযাত্রায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা রেখেছিলেন। এবারও তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে বিএনপির পছন্দের তালিকায় আছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে আরো যে সমস্ত নাম আলোচনা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছেন সাবেক বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। আলী ইমাম মজুমদার ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মৃত হয়ে গেছে। বাংলাদেশে আর কোনো দিন এই রকম তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই এবং এই প্রত্যাশা যদি বিএনপি করে থাকে, তাহলে তারা দিবা স্বপ্ন দেখছে।’
















