যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাঁচ কৌশলে সরকার
- আপডেট সময় : ০৮:১৪:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৫৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি নিয়ে সরাসরি ভাবে বাংলাদেশের ওপর একটি চাপ সৃষ্টি করেছে’। আগামী নির্বাচন যেন অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক হয় সেই জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই চাপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এমনটি বলেছেন। তিনি বলেছেন, এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা কারও পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। আগামী নির্বাচন যেন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয় সেই জন্যই এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা স্পষ্টতই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ওপর একটি চাপ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, আওয়ামী লীগকে বাগে আনার জন্যই বা আগামী নির্বাচন যেন আওয়ামী লীগ সঠিকভাবে করে সেই জন্যই এই ভিসা নীতে আরোপ করা হয়েছে। শুধু নির্বাচন নয়, আওয়ামী লীগ যেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে মত প্রকাশের অধিকার দেয় এবং মানবাধিকার সুরক্ষা করে সেই জন্যই এই ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হয়েছে’।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে যতই চাপে ফেলার জন্য এই ভিসা নীতি ঘোষণা করুক না কেন, সরকার ভিসা নীতি নিয়ে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাঁচ কৌশলে এগোবে সরকার এমনটি বিভিন্ন সরকারের নীতিনির্ধারকের সাথে কথা বলে জানা গেছে। এই পাঁচটি কৌশল হলো
১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থানে যাবে না: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরাসরি অবস্থানে যাবে না। রাজনৈতিক বক্তৃতা বিবৃতিতে মার্কিন নীতির সমালোচনা করা হলেও সরকারি অবস্থান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখবে এবং এই ভিসা নীতিকে উপেক্ষা করে অন্যান্য সম্পর্কগুলোকে এগিয়ে নেবে’।
২. কূটনৈতিক তৎপরতায় জোরদার করা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো কোনো মহল ভুল বোঝাচ্ছে এবং একটি মহল সরকার সম্পর্কে এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বিভ্রান্তিকর খবর দিচ্ছে। এই কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা নিচ্ছে বলে মনে করে সরকারের একটি অংশ। এ কারণে তারা কূটনৈতিক তৎপরতাকে জোরদার করার পক্ষে এবং সেই কৌশলেও এগোতে চাচ্ছে সরকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান, ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করা এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বৃদ্ধি করা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন বিভ্রান্তিকর তথ্যগুলো না পায় সেই জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে সরকার এবং এই কৌশলটি সরকার অবলম্বন করবে’।
৩. রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে চায় সেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সরকার কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সরকার রাজনৈতিক কৌশল দিয়ে প্রমাণ করতে চাইবে যে, আওয়ামী লীগ অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। আর বিএনপি নির্বাচন বিরোধী। এটি যদি প্রমাণ করতে পারে তাহলে পরে এই ভিসা নীতি অকার্যকর হতে পারে। আর এ কারণে সরকার রাজনীতিকে নির্বাচন মুখী করবে এবং একটি সমঝোতার প্রেক্ষাপট তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
৪. ড. ইউনূস ইস্যুতে ধীরে চলো নীতি: সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতারা মনে করেন যে. ড. ইউনূসের কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ওপর নাখোস হয়েছে বেশি। আর এই কারণেই ড. ইউনূস ইস্যুতে ধীরে নীতি গ্রহণ করতে পারে সরকার। তবে এটি কোনো প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে নয়। ইউনূসের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো রয়েছে সেই মামলার কার্যক্রম গুলো যদি ধীর গতিতে হয় তাহলেই ইউনূস ইস্যুটি আস্তে আস্তে ধামাচাপা পড়ে যাবে এবং এর মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।’
৫. রাজনৈতিক ঐক্যমত তৈরি করা: আওয়ামী লীগের সরকার মনে করছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির নিতে প্রেক্ষাপটে রাজনীতিতে একটি জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো মার্কিন আক্রাসন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিরুদ্ধে তাদেরকে এক জায়গায় এক প্লাটফর্মে নিয়ে এসে একটি ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করে মার্কিন নীতির বিরুদ্ধে একটা পাল্টা চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে’।
আর এ ধরনের উদ্যোগগুলো যদি গ্রহণ করা যায় তাহলে সরকারের আগামী নির্বাচনের যাত্রাপথ মসৃণ হবে।
















