শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীতে এমন বহুমূখী প্রতিভাবান মানুষ দু-চারজন থাকলে তার একজন এস এম পলাস।
- আপডেট সময় : ০৯:০৭:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯০৮ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদন//
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাহিরে থেকেও নিজেকে আলোকিত করা যায়, সমাজে দামী বা যোগ্য করে তোলা যায়, হয়ে ওঠা যায় অনুকরণীয় তারই এক উজ্জল দৃষ্টান্ত এস এম পলাস।
গল্প, কবিতা, উপন্যাস, ছবি আঁকা, কারু শিল্প, নাট্য অভিনয়, উপাস্থাপন, গান লেখা সর্বশেষ একজন সফটওয়ার ডেপলপার হয়ে ওঠা একমাত্র এস এম পলাসকে দিয়েই সম্ভব।

শৈশবে মাঠে ঘুড়ি উড়ানো আর শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকের চোখ ফাঁকি দিয়ে খাতায় ছবি আকাঁ সেই ছেলেটি আজ এক দৃষ্টান্ত হয়ে দাড়িয়েছে। জীবন সংগ্রামে ফুটপথে দাড়িয়ে কখনো ফল বিক্রি করা থেকে শুরু করে চুল কাটা পর্যন্ত কোনটাই বাকী রয়নি তার জীবনে।
এস এম পলাস ১৯৮২ সালের ৭ মে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের চরসমসদি বালিগ্রামে ঐতিহ্যবাহী সিকদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তার শৈশব কৈশোর কেটেছে একই উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে। এস এম পলাস শৈশব থেকেই ছবি আঁকায় ঝোঁক ছিল, পাশাপাশি শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতিকে ভালোবাসেন।

১৯৯৭ সালে এস এস সি পরীক্ষার পরেই ঘর ছাড়েন শৈল্পিকতারা প্রেমে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি অনাগ্রহী হয়ে জ্ঞানের সন্ধান করেছেন ভিন্ন ভাবে।
মানুষের যাপিত জীবনকে গভীর থেকে পরখ করে তা’ই আবার প্রকাশ করেছেন তার কর্মে মর্মে। এস এম পলাস এর ছবি, কবিতা, গল্প, উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে প্রকৃতি সৌন্দর্য, সুবিধা বঞ্চিত শোষিত মানুষের আর্তনাদ। সমাজে ঘাঁপটি মেরে থাকা এবং মুখোশধারী অমানুষের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন ব্যাঙ্গাত্বক ধারায়।
পাশাপাশি সৃষ্টি, স্রষ্টা রহস্য, নারী-পুরুষ এর প্রেম-বিরহ এবং জীবনের বাঁকে লুকিয়ে থাকা নানান অসংগতি উঠে এসেছে তার নিপুণ শিল্পকর্মে ও তীক্ষ্ণ লিখনিতে।
এস এম পলাস প্রথমে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, সাহিত্য সাময়িকী তে লেখা শুর করেন, পরে ২০০০ সাল থেকে দেশের জাতীয় পত্রিকায় স্থান পেতে থাকে তার লেখা।

প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই “ব্যাতিথ চোখের জল” প্রকাশ পায় ২০০৫ সালে ঢাকা বাংলা একাডেমির ২১ বই মেলায়, এরপরে ২০০৭ সালে সম্পাদিত কবিতা সংকলন “তুমি নিন্দিত নারী” তার পরে ২০১০ সালে প্রকাশ করেন গবেষণা গ্রন্থ “বাকেরগঞ্জের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস পরিচিতি” এভাবে লেখালেখির একযুগ পাড় করে ২০১২ সালে “রক্তচোষা” উপন্যাস লিখে সারা দেশে আলোচনায় আসেন, এই বইটি তাকে দেশের সাহিত্য ও পাঠক মহলে পরিচিত করে তোলে।
এস এম পলাস এর প্রকাশিত কবিতা প্রায় ১০০০ এর বেশি। ২০০৭ সালে তিনি সম্পাদনা করেন “মাসিক গ্রামীণ কন্ঠ ” সমসাময়িক সময়ে তিনি “প্রিয়পত্র” নামে একটি ম্যাগাজিনও সম্পাদনা করেন। এস এম পলাস ২০০১ সালে প্রথম মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন পাশাপাশি মঞ্চ উপাস্থাপন।

২০০৩ সাল থেকে ঢাকায় মিরপুরে একটি এ্যাডফার্মে ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করেন, পরে ২০০৭ সালে প্রবেশ করেন ফ্যাশন ডিজাইনে, এসময় তিনি ঢাকার নামি-দামি সকল ফ্যাশন হাউজের ডিজাইন করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এছাড়াও মৃতশিল্প, করুশিল্প সবটাতেই যেনো মুন্সিআনা।
অসুস্থতার কারনে ২০০৯ সালে চলে আসেন গ্রামে এসে শুরু করেন কম্পিউটার গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ, পাশাপাশি ব্যাবসা। ১৪ সালের দিকে তা আগুনে পুড়ে যায়।
সাংবাদিকতায় পথচলা ২০০৪ সাল থেকে, বরিশালের একটি স্থানীয় দৈনিক সহ জাতীয় পত্রিকায় মুক্ত সাংবাদিকতা করতেন।

পরে ২০০৭ সাল থেকে সাংবাদিকতা পেশায় বেশি সময় দেন।
তিনি বর্তমানে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন “বাংলা টিভি’র রিপোর্টার এবং আইপি টিভি চ্যানেল ” রূপসী টিভির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক। এছাড়াও অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডি নিউজ পোস্টের প্রকাশক সম্পাদক।
এস এম পলাস নিজেকে একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে, ২০০৫ সালে তিনি নিজ এলাকায় লাইফওয়ে বাংলাদেশ নামে একটি নারী উন্নয়ন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক ,সাংস্কৃতি সংগঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। কবিতা আবৃতি ও মঞ্চ উপাস্থাপণায় তার সুনাম মানুষের মুখে মুখে।

জীবনের বেশি সময় সংগীতের সাথে থাকলেও গান গাওয়া হয়ে ওঠেনি, তবে শখের বসে লিখেছেন গান, আর তাতে কন্ঠ দিয়েছে বাংলার বিখ্যাত শিল্পী মনি কিশোর, মোট তিনটি গানের দুটি মানি কিশোর, অপরটি গেয়েছেন বাউল মামুন সরকার।
সর্বশেষ তিনি আবার তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কবিতা পাঠ করে, তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল, বরিশালে এই কবিতা এখন পর্যন্ত ৫০ মিলিয়ন লোকে দেখেছেন। তার কবিতায় উঠে এসছে ৯০ দশকের ফেলে আশা শৈশব ও হারোনা সোনালী দিনের কথা। যা শুনলে অনেকেই আবেগেআপ্লুত হয়ে পরেন।

এছাড়াও তার রচানা ও অভিনিত শিক্ষনিয় এবং হাসির নাটকগুলো মুঠো পর্দায় খুবই দর্শক প্রিয়। ব্যক্তি জীবনে পিতা মোঃ রফিকুল ইসলাম সিকদার, মাতা রাহিমা বেগম এবং চার ভাই বোনের মধ্যে তিনি ২য়। বিবাহিত জীবনে স্ত্রী সাহিদা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এবং ২ ছেলের জনক। সব মিলিয়ে তার জীবন সুখ সমৃদ্ধিতে মাখানো।
প্রগতীশিল উচ্চমননের সৃজন প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে চলছেন তিনি। গত দুই যুগে শিল্প সাহিত্যর বিভিন্ন অঙ্গনে প্রতিভার যাদু দেখিয়েছেন এই শিল্পী। সৎ ও পরিচ্ছন্ন সাংবাদিকতায় সুনাম রয়েছে তার। রূপসী টিভি “মানুষের জণ্য” প্রকল্পের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বিভিন্ন অসহায় মানুষের মুখে হাসী ফুটিয়েছেন তিন। জীবন কর্মে বৈচিত্রময় নানান কর্ম অভিজ্ঞতা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নীপিড়িত নির্যতিত, সুবিধা বঞ্চিত অসহায় মানুষের কল্যানে।

বাংলাদেশে এমনকি পৃথিবীতে এমন বহুমূখী প্রতিভাবান মানুষ দুচারজন থাকলে তার একনজ এস এম পলাস।
এ বিষয়ে কবি পলাশ জানান, আমার জীবনের প্রতিটি দিনই একটি ইতিহাস, চরম দূঃখ দুরদর্শা আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমাকে প্রতিনিয়ত পথ চলতে হয়। এক সময় আমাকে পথের কুকুরও তিরস্কার করেছে, আমি মরে যেতে রাজী, কিন্ত কখনো হেরে যেতে রাজী নয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় ছুঁতে নাপাড়লেও জীবন আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, আমি নিজেকে সফল মনেকরি, কারন আমার লেখাগুলো আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক টাকা দিয়ে কিনে পড়ছেন।

তথ্য প্রযুক্তির দুনিয়ায় রয়েছে তার বিচরণ। নিজের নামে রয়েছে একটি www.smpalash.com ওয়েবসাইট যেখানে তিনি নিজের সকল কিছু প্রকাশ করেন। www.ruposhitv.com www.ruposhi.tv www.bdnewspost.com এই সাইটগুলো সবই তার নিজের। বর্তমানে তিনি শোস্যাল মিডিয়া সার্ভিস সহ ওয়েব ডেপলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করছেন। তার জীবনে কোনো কিছুতেই একাডেমীক কোনো শিক্ষা নেই, পৃথিবী কঠীনতম শিল্প, ছবি আকাঁ, অভিনয় করা, গান কবিতা লেখা, উপাস্থাপন, সংবাদ পাঠক, কারুশিল্প এগুলো যে শুধু কোনো ভাবে পারে তা কিন্তু নয়, সবটাতেই সে শেরাদের শেরা। উচ্চ শিক্ষিত না হয়েও শুধু ধারনার উপর নির্ভর করে সফটওয়ার ডেপলপমেন্ট এর মতো কাজ তিনি করছেন, এটা সত্যি বিষ্ময়কর !

এক সময় পকটে ৫ টাকায় একটি গ্যাসটিকের ওষুধ কেনার টাকা না থকলেও, এখন পলাশ নিজেই অসহায় মানুষের চিকিৎসায় সহযোগীতা করছেন। প্রতিমাসে অনলাইন থেকেই আয় করছেন লাখ টাকার উপরে।




























