সংবাদ শিরোনাম ::
শাহজাদপুরে আওয়ামীলীগের সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা বেলকুচিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ  শাহজাদপুরে অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ জন আটক ৭ নভেম্বর না আসলে বাংলাদেশ বিলীন হয়ে যেত: বাউবি উপাচার্য বেলকুচির সেন ভাঙ্গাবাড়ী বাজার মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন “জয় বাংলা” স্লোগান দেওয়ায় সাবেক পিপি-কে গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ উলিপুরে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র মেরামতের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ খাজা শাহ্ এনায়েতপুরী (রহ:) এর ১১০ তম ওরছ শরীফের দাওয়াত পত্র বিতরণ  রাজশাহীর মাঠে স্পীড স্কেটিংয়ে বগুড়ার স্কেটারদের ৩টি স্বর্ণপদক সহ ৮ পদক অর্জন এনায়েতপুরে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি উপলক্ষে আলোচনা সভা

ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় জনগণতান্ত্রিক পরিকল্পিত অর্থনীতি চাই: সৈয়দ আমিরুজ্জামান

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৪২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩ ১১৪ বার পড়া হয়েছে

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদাতা: “বাঙালি জাতি ও জনগণের শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা। বাংলাদেশের ইতিহাস হলো স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য কোটি কোটি খেটে খাওয়া মানুষের সুদীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস। এ দেশের মানুষ লড়াই করেছে বৃট্টিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর শ্রেণি শোষণ ও জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে। এদেশের মানুষ প্রথম থেকেই জাতিগত শাসন-শোষণ-বঞ্চণা-অনুন্নয়ন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এসেছে- যার চূড়ান্ত রূপ লাভ করল ’৭১-এর সুমহান সশস্ত্র স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের ভিতর দিয়ে। এদেশের নিরস্ত্র বাঙালি শ্রমিক কৃষক সাধারণ মানুষ অহিংসবাদী ছিল, কিন্তু ‘৭১-এ সহিংসতার শিকার হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা পেয়েছি ‘৭২-এর সংবিধান। সেই সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। এর মর্মবস্তু হলো অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের নিশ্চয়তার জন্য পরিকল্পিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হয়।

আর তাই সমাজতন্ত্র অভিমুখী অসাম্প্রদায়িক জনগণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রত্যয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনেই জনগণের নতুন ধারার এক আর্থসামাজিক বৈপ্লবিক ব্যবস্থা প্রবর্তনে সমতা-ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় জনগণতান্ত্রিক পরিকল্পিত অর্থনীতি চাই।”

সংঘাত নয়, ঐক্যের বাংলাদেশ গড়ি এই শ্লোগান এবং “অহিংসার প্রথম নীতিই হলো সকল অমর্যাদাকে প্রত্যাখ্যান করা। নিস্ক্রিয় থেকে অহিংসা প্রতিষ্ঠা করা যায় না।”- মহাত্মা গান্ধীর বাণীকে প্রতিপাদ্য করে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষ্যে শ্রীমঙ্গলে পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুফ (পিএফজি)’র মানববন্ধনে অতিথির বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান এসব কথা বলেন।

সোমবার (২ অক্টোবর ২০২৩) সকাল ১১ ঘটিকায় শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি’) শ্রীমঙ্গল-এর উদ্যোগে ও দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় এ মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়।

শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও পিএফজির সমন্বয়কারী সাংবাদিক সৈয়দ ছায়েদ আহমেদের সঞ্চালনায় এবং পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহির আহমদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান; ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা বিকাশ দাশ বাপ্পন, সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ও কমিউনিস্ট পার্টির উপজেলা শাখার সদস্য কমরেড বেলাল হোসেন রাজু, উপজেলা বিএনপি’র সহসভাপতি মো. শামীম আহমদ ও পিএফসির শ্রীমঙ্গলের অ্যাম্বাসেডর কাজী আছমা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক)-এর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ তরফদার, এডভোকেসি নেটওয়ার্কের শ্রীমঙ্গল কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার কৈরী, পিএফসি সদস্য আনহারুল ইসলাম, ফারিয়া’র শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি দেবব্রত দত্ত হাবুল, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম, পিএফজির সিনিয়র সদস্য ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব এলেমান কবীর, সাংবাদিক ঝলক দত্ত, রীনা মজুমদার, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ এহসান বিন মুজাহির, দীপক রঞ্জন দাস, মো. গোলাম মোস্তফা, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী রুমন, মন্মথ ধর, আল আমিন, মানববাধিকার কর্মী শাহ মাসুদ আহমেদ, মাকসুদুর রহমান, সাংবাদিক শিমুল তরফদার, সাংবাদিক মিজানুর রহমান আলম ও জয়ন্ত দেবসহ পিএফজি সদস্য, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী, সংবাদকর্মী, ইয়েস সদস্য, শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ব থেকে হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি, অসহিষ্ণুতা ও রক্তপাত বন্ধে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতে প্রতিবছর ২রা অক্টোবর বিশ্ব অহিংস দিবস পালন করা হয়।

মানববন্ধনে ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ অামিরুজ্জামান বলেন, “মোহন দাস করমচাঁদ গান্ধী ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। ২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে ভারতের আনীত প্রস্তাবে সর্বসম্মতিক্রমে মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিবস ২ অক্টোবরকে `আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

অন্যায়ের বিরুদ্ধে গান্ধীজীর অস্ত্র ছিল অসহযোগ এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ। তিনি অহিংস ও সত্যাগ্রহ আন্দোলনের দ্বারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে পরাজিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন।

তাঁর বিভিন্ন আন্দোলনের ভিত্তি ছিল অহিংসা। তাঁর রাজনৈতিক দর্শন, তাঁর আত্মত্যাগ, তাঁর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি অঙ্গীকার এই যুগেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

তিনি বলে গেছেন, “Be the change you want to see in the world” অর্থাৎ আপনি নিজের সেই পরিবর্তন হোন যা আপনি সারাবিশ্বের সবার মধ্যে দেখতে চান।

অনেক মহান নেতা যেমন নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ও আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রথম প্রেসিডেন্ট আলবার্ট লুসিলি স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য তাদের আন্দোলনকে পরিচালনা করতে অহিংস দর্শন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

ইতিহাসের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রামের অগ্রণী ভূমিকায় অভিভূত হয়ে মহাত্মা গান্ধী লিখেছিলেন ‘Chittagong to the fore’ অর্থাৎ সবার আগে চট্টগ্রাম। গান্ধীজী দুইবার চট্টগ্রাম আগমন করেন–৩১ আগস্ট, ১৯২১ ও ১২ মে ১৯২৫ সালে।

গান্ধীজী নোয়াখালিতে এসে প্রায় চার মাস অবস্থান করেন। তিনি সেখানে অসংখ্য গ্রাম সফর করেন।

তাঁর উপস্থিতি, শান্তির প্রচেষ্টা এবং উভয় সম্প্রদায়ের জন্য তাঁর সম্প্রীতির বাণী বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিশাল প্রভাব ফেলেছিল। নোয়াখালীতে অবস্থিত গান্ধী আশ্রমের কথা সকলে অবশ্যই জেনে থাকবেন।

১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি দিল্লীতে আততায়ীর গুলিতে গান্ধীজি মৃত্যবরণ করেন। গান্ধীজীর মৃত্যুর পর বিশ্বখ্যাত বৈজ্ঞানিক অ্যালবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন, “Generations to come, it may well be, will scarce believe that such a man as this one ever in flesh and blood walked upon this Earth.”

গান্ধীজি অদ্বিতীয়, অপ্রতিরোধ্য এবং পথপ্রদর্শক। সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করার জন্য গান্ধীবাদী দর্শন আজকের দিনেও খুবই প্রাসঙ্গিক।”

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় জনগণতান্ত্রিক পরিকল্পিত অর্থনীতি চাই: সৈয়দ আমিরুজ্জামান

আপডেট সময় : ১২:৪২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদাতা: “বাঙালি জাতি ও জনগণের শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা। বাংলাদেশের ইতিহাস হলো স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য কোটি কোটি খেটে খাওয়া মানুষের সুদীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস। এ দেশের মানুষ লড়াই করেছে বৃট্টিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর শ্রেণি শোষণ ও জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে। এদেশের মানুষ প্রথম থেকেই জাতিগত শাসন-শোষণ-বঞ্চণা-অনুন্নয়ন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এসেছে- যার চূড়ান্ত রূপ লাভ করল ’৭১-এর সুমহান সশস্ত্র স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের ভিতর দিয়ে। এদেশের নিরস্ত্র বাঙালি শ্রমিক কৃষক সাধারণ মানুষ অহিংসবাদী ছিল, কিন্তু ‘৭১-এ সহিংসতার শিকার হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা পেয়েছি ‘৭২-এর সংবিধান। সেই সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। এর মর্মবস্তু হলো অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের নিশ্চয়তার জন্য পরিকল্পিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হয়।

আর তাই সমাজতন্ত্র অভিমুখী অসাম্প্রদায়িক জনগণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রত্যয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনেই জনগণের নতুন ধারার এক আর্থসামাজিক বৈপ্লবিক ব্যবস্থা প্রবর্তনে সমতা-ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় জনগণতান্ত্রিক পরিকল্পিত অর্থনীতি চাই।”

সংঘাত নয়, ঐক্যের বাংলাদেশ গড়ি এই শ্লোগান এবং “অহিংসার প্রথম নীতিই হলো সকল অমর্যাদাকে প্রত্যাখ্যান করা। নিস্ক্রিয় থেকে অহিংসা প্রতিষ্ঠা করা যায় না।”- মহাত্মা গান্ধীর বাণীকে প্রতিপাদ্য করে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষ্যে শ্রীমঙ্গলে পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুফ (পিএফজি)’র মানববন্ধনে অতিথির বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান এসব কথা বলেন।

সোমবার (২ অক্টোবর ২০২৩) সকাল ১১ ঘটিকায় শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি’) শ্রীমঙ্গল-এর উদ্যোগে ও দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় এ মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়।

শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও পিএফজির সমন্বয়কারী সাংবাদিক সৈয়দ ছায়েদ আহমেদের সঞ্চালনায় এবং পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহির আহমদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান; ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা বিকাশ দাশ বাপ্পন, সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ও কমিউনিস্ট পার্টির উপজেলা শাখার সদস্য কমরেড বেলাল হোসেন রাজু, উপজেলা বিএনপি’র সহসভাপতি মো. শামীম আহমদ ও পিএফসির শ্রীমঙ্গলের অ্যাম্বাসেডর কাজী আছমা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক)-এর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ তরফদার, এডভোকেসি নেটওয়ার্কের শ্রীমঙ্গল কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার কৈরী, পিএফসি সদস্য আনহারুল ইসলাম, ফারিয়া’র শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি দেবব্রত দত্ত হাবুল, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম, পিএফজির সিনিয়র সদস্য ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব এলেমান কবীর, সাংবাদিক ঝলক দত্ত, রীনা মজুমদার, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ এহসান বিন মুজাহির, দীপক রঞ্জন দাস, মো. গোলাম মোস্তফা, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী রুমন, মন্মথ ধর, আল আমিন, মানববাধিকার কর্মী শাহ মাসুদ আহমেদ, মাকসুদুর রহমান, সাংবাদিক শিমুল তরফদার, সাংবাদিক মিজানুর রহমান আলম ও জয়ন্ত দেবসহ পিএফজি সদস্য, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী, সংবাদকর্মী, ইয়েস সদস্য, শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ব থেকে হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি, অসহিষ্ণুতা ও রক্তপাত বন্ধে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতে প্রতিবছর ২রা অক্টোবর বিশ্ব অহিংস দিবস পালন করা হয়।

মানববন্ধনে ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ অামিরুজ্জামান বলেন, “মোহন দাস করমচাঁদ গান্ধী ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। ২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে ভারতের আনীত প্রস্তাবে সর্বসম্মতিক্রমে মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিবস ২ অক্টোবরকে `আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

অন্যায়ের বিরুদ্ধে গান্ধীজীর অস্ত্র ছিল অসহযোগ এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ। তিনি অহিংস ও সত্যাগ্রহ আন্দোলনের দ্বারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে পরাজিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন।

তাঁর বিভিন্ন আন্দোলনের ভিত্তি ছিল অহিংসা। তাঁর রাজনৈতিক দর্শন, তাঁর আত্মত্যাগ, তাঁর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি অঙ্গীকার এই যুগেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

তিনি বলে গেছেন, “Be the change you want to see in the world” অর্থাৎ আপনি নিজের সেই পরিবর্তন হোন যা আপনি সারাবিশ্বের সবার মধ্যে দেখতে চান।

অনেক মহান নেতা যেমন নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ও আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রথম প্রেসিডেন্ট আলবার্ট লুসিলি স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য তাদের আন্দোলনকে পরিচালনা করতে অহিংস দর্শন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

ইতিহাসের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রামের অগ্রণী ভূমিকায় অভিভূত হয়ে মহাত্মা গান্ধী লিখেছিলেন ‘Chittagong to the fore’ অর্থাৎ সবার আগে চট্টগ্রাম। গান্ধীজী দুইবার চট্টগ্রাম আগমন করেন–৩১ আগস্ট, ১৯২১ ও ১২ মে ১৯২৫ সালে।

গান্ধীজী নোয়াখালিতে এসে প্রায় চার মাস অবস্থান করেন। তিনি সেখানে অসংখ্য গ্রাম সফর করেন।

তাঁর উপস্থিতি, শান্তির প্রচেষ্টা এবং উভয় সম্প্রদায়ের জন্য তাঁর সম্প্রীতির বাণী বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিশাল প্রভাব ফেলেছিল। নোয়াখালীতে অবস্থিত গান্ধী আশ্রমের কথা সকলে অবশ্যই জেনে থাকবেন।

১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি দিল্লীতে আততায়ীর গুলিতে গান্ধীজি মৃত্যবরণ করেন। গান্ধীজীর মৃত্যুর পর বিশ্বখ্যাত বৈজ্ঞানিক অ্যালবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন, “Generations to come, it may well be, will scarce believe that such a man as this one ever in flesh and blood walked upon this Earth.”

গান্ধীজি অদ্বিতীয়, অপ্রতিরোধ্য এবং পথপ্রদর্শক। সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করার জন্য গান্ধীবাদী দর্শন আজকের দিনেও খুবই প্রাসঙ্গিক।”