সংবাদ শিরোনাম ::
শাহজাদপুরে আওয়ামীলীগের সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা বেলকুচিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ  শাহজাদপুরে অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ জন আটক ৭ নভেম্বর না আসলে বাংলাদেশ বিলীন হয়ে যেত: বাউবি উপাচার্য বেলকুচির সেন ভাঙ্গাবাড়ী বাজার মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন “জয় বাংলা” স্লোগান দেওয়ায় সাবেক পিপি-কে গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ উলিপুরে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র মেরামতের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ খাজা শাহ্ এনায়েতপুরী (রহ:) এর ১১০ তম ওরছ শরীফের দাওয়াত পত্র বিতরণ  রাজশাহীর মাঠে স্পীড স্কেটিংয়ে বগুড়ার স্কেটারদের ৩টি স্বর্ণপদক সহ ৮ পদক অর্জন এনায়েতপুরে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি উপলক্ষে আলোচনা সভা

শ্রীমঙ্গলে বালু ব্যাবসায়ীরা পেটালো সাংবাদিককে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১৩:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩ ২৮৬ বার পড়া হয়েছে

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা: শ্রীমঙ্গলে ক্ষেতের জমিতে অর্ধশতাধিক বোমা মেশিনে অবৈধ বালু তোলার সচিত্র সংবাদ সংগ্রহ করে বাসায় ফেরার পথে বালুদস্যরা দেশের ইংরেজী দৈনিক বাংলাদেশ পোষ্ট এর এক সাংবাদিককে পিটিয়ে রক্তাত্ত জখম করেছে। শুধু তাকে মেরে ক্ষান্ত হয়নি তারা। বালুদস্যুরা তার ব্যবহৃত আই ফোন তোলা ছবি ভিডিও কেড়ে নিয়ে গেছে। যাতে ওই ছবি পত্রিকায় প্রকাশ করতে না পারে।

আহত ওই সংবাদ কর্মীর নাম তানভীর ইসলাম কাওছার (২৮)। সে উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের পশ্চিম লইয়ারকুল গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে। সে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সকালের সময় পত্রিকারও শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। আহত তানভির ইসলাম কাওছার ঘটনার দিন প্রথমে শ্রীমঙ্গল সরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়া শেষে। পরবর্তীতে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নে ভুনবীর চৌমুহনায় এ ঘটনা ঘটে।

এঘটনায় আহত সাংবাদিক এর খালা খুশ ভানু বেগম বাদী হয়ে একই ইউনিয়নের চিহ্নিত বালু দস্যু কাওছার, ফেরদৌস, কবির মোল্লা, নানু, দুদু , ফয়েজ ও আসলামের নাম উল্লখ করে আরো অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, ওই এলাকায় বালু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে প্রতিমাসে বিভিন্ন বিশেষ মহলে ২৫/৩০ লাখ মাসোহারা দিয়ে এসব বোমা মেশিন ও ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে বালু উত্তোলন করে আসছে। এর ফলে বিভিন্ন গ্রামের গ্রামীন সড়ক ও ক্ষেতের জমি বিশাল আকৃতির ভয়ংকর গর্তের সৃষ্টি করা হয়েছে। একেকটি গর্ত নিম্নে ৫০ থেকে ১৫০ ফুট গভীর হবে। এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সচিত্র প্রতিবেদনের সংবাদ ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে ফেরার পথে ভুনবীর চৌমুহনী পয়েন্টে এলে বালু ব্যবসায়ীরা তার উপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে উলঙ্গ করে বেদম মারপিট করে গুরুতর আহত করে।

দায়েরকৃত মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২নং ভূনবীর ইউনিয়নের অন্তর্গত জৈতাছড়া ও ইলামপাড়া ছড়া থেকে দীর্ঘ দিন যাবৎ ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে সিলিকন বালু উত্তোলন করে আসছে। এলাকার ফসলি জমি নষ্ট করে এসব বালু তোলায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সৃষ্টি করেছে। কৃষি জমিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে এর ফলে কৃষি জমি রাস্তা ঘাট হুমকির মুখে পড়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ ভয়ে তাদের এহেন অবৈধ কর্মকান্ডের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেন না।গত ৪ অক্টোবর দুপুর ১২ টার দিকে সাংবাদিক তানভির ইসলাম কাওছার কৃষি ড্রেজার মেশিন দিয়ে আসামীরা জমি থেকে বালু তুলছে এমন পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে বালু তোলা নিয়ে কথা বলায় বালু ব্যবসায়ীরা এই বলে হুমকি দেয় যে, তাদের অবৈধ কর্মকান্ডের বিষয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশ করলে পরিনতি খুব খারাপ হবে। পরে সাংবাদিক কাওছার পার্শ্ববর্তী ইলাম পারায় গিয়ে দেখতে পায় সেখানেও কয়েকজন লোক ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। এসময় ছবি তুলতে গেলে কাজের বালু শ্রমিকরা ফোনে বিষয়টি বালুদস্যুদেরকে জানায়। বিভিন্ন স্থানের ছবি তুলে সে বাড়ি ফিরে আসার সময় ২নং ভূনবীর ইউনিয়নের ভুনবীর চৌমুহনী এলাকায় পৌছাঁলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বালুদস্যুরা ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জন অস্ত্র সস্ত্র হাতে পথ রোধ করে দাঁড়ায়। এসময় তারা বালু উত্তোলনের ছবি তোলার কারণ জানতে চায়। এক পর্যায়ে আসামীগন রাস্তায় ফেলে রড দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে। আসামীগণ তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে টেনে নিয়ে একটি কালো রঙের এর কারে তোলার চেষ্টা চালায়। এসময় আসামীরা সাংবাদিক তানভির ইসলাম কাওছারের ব্যবহৃত আইফোন (সিম নং- ০১৯০৭১৫৪৪৩৭, যাহার মূল্য এক লক্ষ টাকা) সাংবাদিকতার আইডি কার্ড ছিনিয়ে নিয়া যায়।

আহত সাংবাদিক কাওসার আহমেদ হাসপাতাল থেকে ফোনে জানান, এলাকার চিহ্নিত বালু দস্যু কাওছার, ফেরদৌস, কবির মোল্লা, নানু মিয়াসহ অন্যান্যরা দীর্ঘদিন ধরে কৃষি জমি ধংস করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল।

এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে ঘটনারদিন দুপুর ১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু উত্তোলনের ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে ফেরার পথে স্থানীয় চৌমুহনী পয়েন্টে হামলা করে বেদম মারপিট করে মোবাইল ফোন,আইডি কার্ড, কেড়ে নিয়ে চলে যায়।

সাংবাদিক কাওছার জানায়, ভুনবীর ইউনিয়নের ইছামতি চা বাগানের মঙ্গলচন্ডি রাস্তার পূর্বে এলাকায়, শাসন বটেরতল এলাকার ঠান্ডা মিয়ার বাড়ির পেছনে, ভুনবির বাজারের পশ্চিমে ইলামপাড়া, ইলাম গ্রামের প্রেমপাড়া, ইলাম বড়পাড়া, ভুনবির জৈতাছড়ার পূর্বে হাওর মিয়ার ফিসারির ভুনবির হাইস্কুলের নতুন বাগান,ভিমশি এলাকায় কুমারপাড়া, মির্জাপুরের কদমতলা, ঠান্ডার মাঠ এর পাশে বিশাল এলাকাজুড়ে কৃষি জমিতে বড় বড় গর্ত করে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এসব একেকটা গর্ত ১শ’ থেকে দেড়শ’ ফুট গভীর। এলাকাগুলোতে কোনটায় ৫ টা কোনটায় ৬ থেকে ৭ টা ড্রেজার মেশিন বসানো রয়েছে। তিনি বলেন, মহল বিশেষকে ম্যানেজ করে বালু ব্যবসায়ীরা রাতের আধারে এসব বালু ভুনবীর চৌমহনা বিশ্ব রোডের ধারে স্তুপ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশে তথ্যসংগ্রহ করার খবর পেয়ে বালু ব্যবসায়ীরা আমাকে টার্গেট করে এই হামলা করে। এক পর্যায়ে কাপড় চোপড় খুলে উলঙ্গ করে পেটায়। তিনি বলেন, মামলা করার পর তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমার ও আমার পরিবারের লোকজনকে প্রাণ নাসের হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন, এনিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। আমি এ নিয়ে জিডি করবো।

কাওছার জানায় ভুনবীর ,মির্জাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে কৃষি জমি ধংস করে অবৈধ বালু তোলার খবর পাওয়া গেছে। এ বালু তোলার ফলে এখানকার বিস্তৃীর্ণ কৃষি জমি এখন খালের রূপ ধারণ করেছে। এতে করে এলাকর পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। এ অঞ্চলের মূল্যবান সিলিকা বালু তোলা নিয়ে বেলাসহ দেশের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন আপত্তি জানিয়ে আসছে। এর মধ্যে বেলা গত কয়েক বছর আগে উচ্চ আদালতে একটি রিট করায় বালু তোলার উপর প্রশাসনিক কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা সরকারী নিয়ম অমান্য করে বালু তোলা অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে দৈনিক সকালের খবর পত্রিকার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি তানভির ইসলাম কাওছারের উপর অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুজার বাবলা।

তিনি এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে বালু খেকো সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।

শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক নাসির উদ্দিন জানান আসামীদের বাড়ীঘরে অভিযান চালিয়ে আই ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্ঠা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

শ্রীমঙ্গলে বালু ব্যাবসায়ীরা পেটালো সাংবাদিককে

আপডেট সময় : ০৯:১৩:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা: শ্রীমঙ্গলে ক্ষেতের জমিতে অর্ধশতাধিক বোমা মেশিনে অবৈধ বালু তোলার সচিত্র সংবাদ সংগ্রহ করে বাসায় ফেরার পথে বালুদস্যরা দেশের ইংরেজী দৈনিক বাংলাদেশ পোষ্ট এর এক সাংবাদিককে পিটিয়ে রক্তাত্ত জখম করেছে। শুধু তাকে মেরে ক্ষান্ত হয়নি তারা। বালুদস্যুরা তার ব্যবহৃত আই ফোন তোলা ছবি ভিডিও কেড়ে নিয়ে গেছে। যাতে ওই ছবি পত্রিকায় প্রকাশ করতে না পারে।

আহত ওই সংবাদ কর্মীর নাম তানভীর ইসলাম কাওছার (২৮)। সে উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের পশ্চিম লইয়ারকুল গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে। সে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সকালের সময় পত্রিকারও শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। আহত তানভির ইসলাম কাওছার ঘটনার দিন প্রথমে শ্রীমঙ্গল সরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়া শেষে। পরবর্তীতে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নে ভুনবীর চৌমুহনায় এ ঘটনা ঘটে।

এঘটনায় আহত সাংবাদিক এর খালা খুশ ভানু বেগম বাদী হয়ে একই ইউনিয়নের চিহ্নিত বালু দস্যু কাওছার, ফেরদৌস, কবির মোল্লা, নানু, দুদু , ফয়েজ ও আসলামের নাম উল্লখ করে আরো অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, ওই এলাকায় বালু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে প্রতিমাসে বিভিন্ন বিশেষ মহলে ২৫/৩০ লাখ মাসোহারা দিয়ে এসব বোমা মেশিন ও ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে বালু উত্তোলন করে আসছে। এর ফলে বিভিন্ন গ্রামের গ্রামীন সড়ক ও ক্ষেতের জমি বিশাল আকৃতির ভয়ংকর গর্তের সৃষ্টি করা হয়েছে। একেকটি গর্ত নিম্নে ৫০ থেকে ১৫০ ফুট গভীর হবে। এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সচিত্র প্রতিবেদনের সংবাদ ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে ফেরার পথে ভুনবীর চৌমুহনী পয়েন্টে এলে বালু ব্যবসায়ীরা তার উপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে উলঙ্গ করে বেদম মারপিট করে গুরুতর আহত করে।

দায়েরকৃত মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২নং ভূনবীর ইউনিয়নের অন্তর্গত জৈতাছড়া ও ইলামপাড়া ছড়া থেকে দীর্ঘ দিন যাবৎ ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে সিলিকন বালু উত্তোলন করে আসছে। এলাকার ফসলি জমি নষ্ট করে এসব বালু তোলায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সৃষ্টি করেছে। কৃষি জমিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে এর ফলে কৃষি জমি রাস্তা ঘাট হুমকির মুখে পড়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ ভয়ে তাদের এহেন অবৈধ কর্মকান্ডের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেন না।গত ৪ অক্টোবর দুপুর ১২ টার দিকে সাংবাদিক তানভির ইসলাম কাওছার কৃষি ড্রেজার মেশিন দিয়ে আসামীরা জমি থেকে বালু তুলছে এমন পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে বালু তোলা নিয়ে কথা বলায় বালু ব্যবসায়ীরা এই বলে হুমকি দেয় যে, তাদের অবৈধ কর্মকান্ডের বিষয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশ করলে পরিনতি খুব খারাপ হবে। পরে সাংবাদিক কাওছার পার্শ্ববর্তী ইলাম পারায় গিয়ে দেখতে পায় সেখানেও কয়েকজন লোক ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। এসময় ছবি তুলতে গেলে কাজের বালু শ্রমিকরা ফোনে বিষয়টি বালুদস্যুদেরকে জানায়। বিভিন্ন স্থানের ছবি তুলে সে বাড়ি ফিরে আসার সময় ২নং ভূনবীর ইউনিয়নের ভুনবীর চৌমুহনী এলাকায় পৌছাঁলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বালুদস্যুরা ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জন অস্ত্র সস্ত্র হাতে পথ রোধ করে দাঁড়ায়। এসময় তারা বালু উত্তোলনের ছবি তোলার কারণ জানতে চায়। এক পর্যায়ে আসামীগন রাস্তায় ফেলে রড দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে। আসামীগণ তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে টেনে নিয়ে একটি কালো রঙের এর কারে তোলার চেষ্টা চালায়। এসময় আসামীরা সাংবাদিক তানভির ইসলাম কাওছারের ব্যবহৃত আইফোন (সিম নং- ০১৯০৭১৫৪৪৩৭, যাহার মূল্য এক লক্ষ টাকা) সাংবাদিকতার আইডি কার্ড ছিনিয়ে নিয়া যায়।

আহত সাংবাদিক কাওসার আহমেদ হাসপাতাল থেকে ফোনে জানান, এলাকার চিহ্নিত বালু দস্যু কাওছার, ফেরদৌস, কবির মোল্লা, নানু মিয়াসহ অন্যান্যরা দীর্ঘদিন ধরে কৃষি জমি ধংস করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল।

এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে ঘটনারদিন দুপুর ১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু উত্তোলনের ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে ফেরার পথে স্থানীয় চৌমুহনী পয়েন্টে হামলা করে বেদম মারপিট করে মোবাইল ফোন,আইডি কার্ড, কেড়ে নিয়ে চলে যায়।

সাংবাদিক কাওছার জানায়, ভুনবীর ইউনিয়নের ইছামতি চা বাগানের মঙ্গলচন্ডি রাস্তার পূর্বে এলাকায়, শাসন বটেরতল এলাকার ঠান্ডা মিয়ার বাড়ির পেছনে, ভুনবির বাজারের পশ্চিমে ইলামপাড়া, ইলাম গ্রামের প্রেমপাড়া, ইলাম বড়পাড়া, ভুনবির জৈতাছড়ার পূর্বে হাওর মিয়ার ফিসারির ভুনবির হাইস্কুলের নতুন বাগান,ভিমশি এলাকায় কুমারপাড়া, মির্জাপুরের কদমতলা, ঠান্ডার মাঠ এর পাশে বিশাল এলাকাজুড়ে কৃষি জমিতে বড় বড় গর্ত করে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এসব একেকটা গর্ত ১শ’ থেকে দেড়শ’ ফুট গভীর। এলাকাগুলোতে কোনটায় ৫ টা কোনটায় ৬ থেকে ৭ টা ড্রেজার মেশিন বসানো রয়েছে। তিনি বলেন, মহল বিশেষকে ম্যানেজ করে বালু ব্যবসায়ীরা রাতের আধারে এসব বালু ভুনবীর চৌমহনা বিশ্ব রোডের ধারে স্তুপ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশে তথ্যসংগ্রহ করার খবর পেয়ে বালু ব্যবসায়ীরা আমাকে টার্গেট করে এই হামলা করে। এক পর্যায়ে কাপড় চোপড় খুলে উলঙ্গ করে পেটায়। তিনি বলেন, মামলা করার পর তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমার ও আমার পরিবারের লোকজনকে প্রাণ নাসের হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন, এনিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। আমি এ নিয়ে জিডি করবো।

কাওছার জানায় ভুনবীর ,মির্জাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে কৃষি জমি ধংস করে অবৈধ বালু তোলার খবর পাওয়া গেছে। এ বালু তোলার ফলে এখানকার বিস্তৃীর্ণ কৃষি জমি এখন খালের রূপ ধারণ করেছে। এতে করে এলাকর পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। এ অঞ্চলের মূল্যবান সিলিকা বালু তোলা নিয়ে বেলাসহ দেশের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন আপত্তি জানিয়ে আসছে। এর মধ্যে বেলা গত কয়েক বছর আগে উচ্চ আদালতে একটি রিট করায় বালু তোলার উপর প্রশাসনিক কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা সরকারী নিয়ম অমান্য করে বালু তোলা অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে দৈনিক সকালের খবর পত্রিকার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি তানভির ইসলাম কাওছারের উপর অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুজার বাবলা।

তিনি এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে বালু খেকো সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।

শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক নাসির উদ্দিন জানান আসামীদের বাড়ীঘরে অভিযান চালিয়ে আই ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্ঠা চলছে।