সংবাদ শিরোনাম ::
শাহজাদপুরে আওয়ামীলীগের সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা বেলকুচিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ  শাহজাদপুরে অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ জন আটক ৭ নভেম্বর না আসলে বাংলাদেশ বিলীন হয়ে যেত: বাউবি উপাচার্য বেলকুচির সেন ভাঙ্গাবাড়ী বাজার মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন “জয় বাংলা” স্লোগান দেওয়ায় সাবেক পিপি-কে গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ উলিপুরে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র মেরামতের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ খাজা শাহ্ এনায়েতপুরী (রহ:) এর ১১০ তম ওরছ শরীফের দাওয়াত পত্র বিতরণ  রাজশাহীর মাঠে স্পীড স্কেটিংয়ে বগুড়ার স্কেটারদের ৩টি স্বর্ণপদক সহ ৮ পদক অর্জন এনায়েতপুরে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি উপলক্ষে আলোচনা সভা

হারানো মোবাইল উদ্ধারের যাদুকর এএসআই আব্দুল খালেক পুলিশের গর্ব

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১১:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩ ৪৪৮ বার পড়া হয়েছে

শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: এএসআই আব্দুল খালেক। হারানো বা চুরি হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধারে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। অনেকে তাকে মোবাইল খালেক বলেও জানেন। কেউ কেউ তাকে মোবাইলের যাদুকরও বলেন। হারানো মোবাইল খুঁজে বের করাই তার নেশা। গত আড়াই বছরে ছিনতাই অথবা হারিয়ে যাওয়া প্রায় ১০০ এর বেশি মোবাইল ফোন খুঁজে দিয়েছেন তিনি। হারানো মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে তৃপ্তি পায় সে। মোবাইল ফোন হারানোর বিষয়ে জিডি হলেই থানায় ডাক পড়ে তার। এরপর তা উদ্ধারে নানা বেশধরে, প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাঠে নেমে পড়েন তিনি।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের বটতলী মাদ্রাসা পাড়ার ফরিদুল আলমের পুত্র আব্দুল খালেক। ২০০৮ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। বর্তমানে চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানায় কর্মরত রয়েছেন তিনি। ২০২১ সালে তিনি এ থানায় যোগদান করেন। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোবাইল হারানোর অভিযোগ আসে খালেকের কাছে। নিজের থানা তো বটেই, অন্য যে কোনো স্থানে মোবাইল হারালেও ভুক্তভোগীরা আসেন তার কাছে। এরইমধ্যে কর্ম মূল্যায়ণে শ্রেষ্ঠ অফিসার ও হারানো মোবাইলফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর ও ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং শ্রেষ্ঠ সাজা ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হিসেবে টানা ৮ বারের মতো চট্টগ্রাম জেলায় শ্রেষ্ট এএসআই নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি।

এএসআই আব্দুল খালেক বলেন, ‘বাঁশখালী থানায় ২০২১ সালে যোগদান করার আড়াই বছরে এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ এর অধিক হারানো, চুরি, ছিন্তাই হওয়া মোবাইলফোন উদ্ধার করেছি। বিভিন্ন থানা এলাকা হতে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বিশেষ করে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে হারানো জিডির মাধ্যমে মোবাইল উদ্ধার করে দিতে সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। হারানো মোবাইলটি উদ্ধার করে দিতে পারলে এবং প্রকৃত মালিকের মুখে হাসি দেখলে অনেক ভালো লাগে। এখানেই আমার বড় প্রাপ্তি ও তৃপ্তি।’

মোবাইল ফোন উদ্ধারের যাদুকর এএসআই আব্দুল খালেক মোবাইল ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে বলেন, ‘শখের বশে অনেক সময় পারসোনাল কিংবা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও সংরক্ষণ করেন অনেকে। কিন্তু মোবাইল ফোন যখন হারিয়ে যায়, তখন ওই ভুক্তভোগী মোবাইলের চেয়ে বেশি চিন্তা করেন অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও নিয়ে। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো- কখনো পারসোনাল কিংবা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করা উচিত নয়। মানুষের বিশ্বাস, আমার কাছে ফোন দিলেই তার হারানো মোবাইলটি ফিরে পাবে। আমিও শতভাগ চেষ্টা করি প্রিয় মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের।’

তিনি আরো বলেন, হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধারের পর অনেকেই তাদের নিজস্ব ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। খুশি হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে তখন নিজে গর্ববোধ করি। থানায় নিয়মিত মামলার তদন্ত, টহল ডিউটিসহ দৈনন্দিন সব কাজ করারর পরও মানবিক কারণে আমি মোবাইল ফোন উদ্ধারের কাজটি করে থাকি।

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন পিপিএম বলেন, আন্তারিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে থানার কাজগুলো সম্পন্ন করছে এএসআই আব্দুল খালেক। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোন উদ্ধারে কাজ করেন। আমরা তাকে এসব কাজে উৎসাহ দেই। কারণ একটি মোবাইল ফোন একজন ভুক্তভোগীর কাছে অনেক গুরুত্ব বহন করেন। আর সেই ফোনটা উদ্ধার করে দিলে ভুক্তভোগীর খুশির অন্ত থাকে না। এভাবেই অসংখ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আমরা তৎপর।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

হারানো মোবাইল উদ্ধারের যাদুকর এএসআই আব্দুল খালেক পুলিশের গর্ব

আপডেট সময় : ১২:১১:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩

শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: এএসআই আব্দুল খালেক। হারানো বা চুরি হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধারে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। অনেকে তাকে মোবাইল খালেক বলেও জানেন। কেউ কেউ তাকে মোবাইলের যাদুকরও বলেন। হারানো মোবাইল খুঁজে বের করাই তার নেশা। গত আড়াই বছরে ছিনতাই অথবা হারিয়ে যাওয়া প্রায় ১০০ এর বেশি মোবাইল ফোন খুঁজে দিয়েছেন তিনি। হারানো মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে তৃপ্তি পায় সে। মোবাইল ফোন হারানোর বিষয়ে জিডি হলেই থানায় ডাক পড়ে তার। এরপর তা উদ্ধারে নানা বেশধরে, প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাঠে নেমে পড়েন তিনি।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের বটতলী মাদ্রাসা পাড়ার ফরিদুল আলমের পুত্র আব্দুল খালেক। ২০০৮ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। বর্তমানে চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানায় কর্মরত রয়েছেন তিনি। ২০২১ সালে তিনি এ থানায় যোগদান করেন। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোবাইল হারানোর অভিযোগ আসে খালেকের কাছে। নিজের থানা তো বটেই, অন্য যে কোনো স্থানে মোবাইল হারালেও ভুক্তভোগীরা আসেন তার কাছে। এরইমধ্যে কর্ম মূল্যায়ণে শ্রেষ্ঠ অফিসার ও হারানো মোবাইলফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর ও ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং শ্রেষ্ঠ সাজা ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হিসেবে টানা ৮ বারের মতো চট্টগ্রাম জেলায় শ্রেষ্ট এএসআই নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি।

এএসআই আব্দুল খালেক বলেন, ‘বাঁশখালী থানায় ২০২১ সালে যোগদান করার আড়াই বছরে এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ এর অধিক হারানো, চুরি, ছিন্তাই হওয়া মোবাইলফোন উদ্ধার করেছি। বিভিন্ন থানা এলাকা হতে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বিশেষ করে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে হারানো জিডির মাধ্যমে মোবাইল উদ্ধার করে দিতে সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। হারানো মোবাইলটি উদ্ধার করে দিতে পারলে এবং প্রকৃত মালিকের মুখে হাসি দেখলে অনেক ভালো লাগে। এখানেই আমার বড় প্রাপ্তি ও তৃপ্তি।’

মোবাইল ফোন উদ্ধারের যাদুকর এএসআই আব্দুল খালেক মোবাইল ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে বলেন, ‘শখের বশে অনেক সময় পারসোনাল কিংবা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও সংরক্ষণ করেন অনেকে। কিন্তু মোবাইল ফোন যখন হারিয়ে যায়, তখন ওই ভুক্তভোগী মোবাইলের চেয়ে বেশি চিন্তা করেন অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও নিয়ে। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো- কখনো পারসোনাল কিংবা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করা উচিত নয়। মানুষের বিশ্বাস, আমার কাছে ফোন দিলেই তার হারানো মোবাইলটি ফিরে পাবে। আমিও শতভাগ চেষ্টা করি প্রিয় মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের।’

তিনি আরো বলেন, হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধারের পর অনেকেই তাদের নিজস্ব ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। খুশি হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে তখন নিজে গর্ববোধ করি। থানায় নিয়মিত মামলার তদন্ত, টহল ডিউটিসহ দৈনন্দিন সব কাজ করারর পরও মানবিক কারণে আমি মোবাইল ফোন উদ্ধারের কাজটি করে থাকি।

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন পিপিএম বলেন, আন্তারিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে থানার কাজগুলো সম্পন্ন করছে এএসআই আব্দুল খালেক। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোন উদ্ধারে কাজ করেন। আমরা তাকে এসব কাজে উৎসাহ দেই। কারণ একটি মোবাইল ফোন একজন ভুক্তভোগীর কাছে অনেক গুরুত্ব বহন করেন। আর সেই ফোনটা উদ্ধার করে দিলে ভুক্তভোগীর খুশির অন্ত থাকে না। এভাবেই অসংখ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আমরা তৎপর।