সংবাদ শিরোনাম ::
শাহজাদপুরে আওয়ামীলীগের সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা বেলকুচিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ  শাহজাদপুরে অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ জন আটক ৭ নভেম্বর না আসলে বাংলাদেশ বিলীন হয়ে যেত: বাউবি উপাচার্য বেলকুচির সেন ভাঙ্গাবাড়ী বাজার মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন “জয় বাংলা” স্লোগান দেওয়ায় সাবেক পিপি-কে গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ উলিপুরে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র মেরামতের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ খাজা শাহ্ এনায়েতপুরী (রহ:) এর ১১০ তম ওরছ শরীফের দাওয়াত পত্র বিতরণ  রাজশাহীর মাঠে স্পীড স্কেটিংয়ে বগুড়ার স্কেটারদের ৩টি স্বর্ণপদক সহ ৮ পদক অর্জন এনায়েতপুরে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি উপলক্ষে আলোচনা সভা

পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলে রেলসেবা নিয়ে যাত্রীদের অসন্তোষ 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৪২:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩ ২২১ বার পড়া হয়েছে

আবুজার বাবলা, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: পর্যটননগরী শ্রীমঙ্গলে প্রতিদিন শত শত যাত্রী রেলপথে ঘুরতে এলেও যাত্রীসেবা সংকট যেন কাটছেই না। রেলপথে চলাচলকারীরা এনিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করলে নির্বিকার রেলপথ বিভাগ।

১৯১২ সালের প্রথম দিকে ব্রিটিশরা রেলগাড়ি দিয়ে চা ও বিভিন্ন পণ্য চট্টগ্রামে পরিবহন করতে শ্রীমঙ্গলে রেল স্টেশন স্থাপন করে। পরে আস্তে আস্তে এখানে ট্রেনে ভ্রমণকারী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এই স্টেশন রেলপথ বিভাগের আখাউড়া-কুলাউড়া-ছাতক রেলপথের অন্তর্ভুক্ত।

রেলের হিসাব মতে এ পথে ছয়টি  আন্তঃনগর ট্রেন শ্রীমঙ্গল স্টেশনে যাত্রাবিরতি করো। এর মধ্যে রয়েছে  ঢাকা সিলেট  রেলপথের উপবন এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ও পারাবত এক্সপ্রেস। চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথে উদয়ন এক্সপ্রেস ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস সেইসাথে দুটি লোকাল ও মেইল ট্রেন এই স্টেশনে চলাচল করে।

কিন্তু প্রতিষ্ঠার শত বছর অতিক্রম করলেও নানা সমস্যায় জর্জরিত ঐতিহ্যবাহী এই রেল স্টেশনের যাত্রীসেবা দিন দিন অসন্তোষের পর্যায়ে গেছে।

ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে প্রতিদিন ছয়টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। তবে বর্তমানে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের জালালাবাদ এক্সপ্রেস মেল ট্রেন বন্ধ রয়েছে। ভ্রমণকারীরা টিকেট সঙ্কট, অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার, পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থার অভাব, অপরিচ্ছন্ন প্ল্যাটফর্ম, দুর্বল রেল লাইন, এবং প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্ট।

এসব ঝুট ঝামেলা পেড়িয়ে একজন যাত্রী ট্রেনে সওয়ার হওয়ার পর থেকে গন্তব্য পৌঁছাতে যে অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয় তা আরো ভয়াবহ। অতিরিক্ত ষ্ট্যান্ডিং যাত্রি বহন, হিজরা, কলা, লেবু, আনারস, বাদাম, ঝালমুড়ি, পানীয়, তাবিজ, ফকির, সঙ্গীতজ্ঞ থেকে পাগল-কি নেই ট্রেন যাত্রায়! রীতিমতো গুলিস্তানের আবহ। এসব হকার আর ফেরিওয়ালাদের উৎপাত চরমে পৌঁছে। সংঘবদ্ধ হিজরাদের চাঁদাবাজি নিয়ে যাত্রীদের হাতাহাতি নিত্য ব্যাপার। এসব দেখার যেন কেউ নেই। যাদের দেখার কথা তাদের ব্যতিব্যাস্ত থাকতে দেখা যায় বিনা টিকিটের যাত্রী ও তাদের বস্তা পটুলি নিয়ে।

এদিকে রেলস্টেশনের কাউন্টার ও মোবাইল অ্যাপস- এই মাধ্যমেই আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটগুলো ভাগ করে দেয়া হলেও এর থেকে সুফল পাচ্ছে না যাত্রীরা । একশ্রেনীর টিকিট ফরিয়ারা প্রযুক্তিনির্ভর মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে বাজারে ছাড়ার সাথে সাথে টিকিট দ্রুত কেটে বাজারে উচ্চ মুল্যে বিক্রি করছে।

কম দাম, স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপদ ভ্রমন ও

পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় এই স্টেশনের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে। বেশী চাহিদার বিপোরীতে শ্রীমঙ্গলের বরাদ্দ কম। এই অল্প বরাদ্দের টিকিটের উপর আবার অলিখিত কোটা রয়েছে প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও ভিআইপিদের। ফলে সাধারণের টিকিটের চাপ সবসময় থেকেই যায়।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, শ্রীমঙ্গল-ঢাকাগামী ৪টি এবং শ্রীমঙ্গল-চট্টগ্রামগামী ২টিসহ মোট ৬টি আন্তঃনগর ট্রেন প্রতিদিন যাতাযাত করে। ট্রেনগুলো হলো- ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস ও উপবন এক্সপ্রেস।

এছাড়াও চট্টগ্রামগামী ৩টি আন্তঃনগর ট্রেন হলো পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ও উদয়ন এক্সপ্রেস।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানা গেছে, ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী এক্সপ্রেস ৭৭৪ শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা ২৩ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ান হয়। এ ট্রেনে শ্রীমঙ্গলের আসন সংখ্যা মাত্র ২৬টি। শোভন ১০টি, শোভন চেয়ার ১০টি এবং প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৬টি।

প্রতিদিন দুপুর ১টা ৩২ মিনিটে শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস শ্রীমঙ্গলের জন্য এর আসন সংখ্যা মাত্র ৩৭টি। এর মধ্যে শোভন ১০টি, শোভন চেয়ার ১৩টি, প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৫টি এবং কেবিনে রয়েছে ৯টি আসন।

ঢাকার উদ্দেশে প্রতিদিন শেষ বিকেল ৫টা ৫৮ মিনিটে শ্রীমঙ্গল ছেড়ে যায় আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস-৭১০। অন্য সবগুলো আন্তঃনগর থেকে শ্রীমঙ্গলে এর আসন অপেক্ষাকৃত একটু বেশি, মোট ৫৩টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৩০টি, এসি চেয়ার ১৫টি এবং কেবিনে রয়েছে ৮টি আসন।

প্রতিদিন মধ্যরাত অর্থাৎ, ২টা ১৫ মিনিটে শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর উপবন -৭৪০। শ্রীমঙ্গলের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৩৬টি। এর মধ্যে শোভন ১৫টি, শোভন চেয়ার ১০টি, প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৫টি এবং বাথ কেবিনে আসন রয়েছে ৬টি।

চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা-৭২০ প্রতিদিন শ্রীমঙ্গল ছেড়ে যায় দুপুর ১২টা ৩২ মিনিটে। এ ট্রেনে শ্রীমঙ্গলের জন্য বরাদ্দ মোট আসন মাত্র ২৭টি। এগুলো হলো- শোভন চেয়ার ২০টি, এসি চেয়ার ৪টি এবং এসি কেবিন ৩টি।

সবচেয়ে করুণ অবস্থা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন- ৭২৪) এক্সপ্রেস ট্রেনের। প্রতিদিন রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে শ্রীমঙ্গল ছেড়ে যায়। এখানে শ্রীমঙ্গলের জন্য বরাদ্দ আসন মাত্র ১৫টি। সবগুলোই শোভন চেয়ার।

কালনী শুক্রবার, জয়ন্তিকা বৃহস্পতিবার, পারাবত মঙ্গলবার, পাহাড়িকা শনিবার এবং উদয়ন রোববার এ আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে। 

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সুত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা এবং উদয়ন লাকসাম, কসবা ও লাঙ্গলকোট স্টেশনের জন্য শ্রীমঙ্গল থেকে কোনো টিকিট বরাদ্দ নেই। ঢাকাগামী কালনীতে শায়েস্তাগঞ্জ, আজমপুর, ভৈরব এবং নরসিংদী স্টেশনের কোনো টিকিট নেই। চট্টগ্রাম থেকে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা এক

পর্যটক জানান, শ্রীমঙ্গল স্টেশনে দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট মেলে না। যেহেতু শ্রীমঙ্গল পর্যটন নগরী তাই এখানে পর্যাপ্ত টিকিটের ব্যবস্থা রাখা দরকার।

অপর এক পর্যটক ভারতে ট্রেন ভ্রমনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, বৃটিশরা একইসাথে ভারত বর্ষে ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করলেও ভারত থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে। অথচ সরকার রেলের পেছনে প্রচুর অর্থ খরচ করছে।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার শাখাওয়াত মিয়া বলেন, শ্রীমঙ্গল-ঢাকা এবং শ্রীমঙ্গল-চট্টগ্রাম রুটে ৬টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বরাদ্দ মাত্র ৩৫০টি। শ্রীমঙ্গল পর্যটননগরী হওয়ার কারণে প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক ট্রেনের টিকেটের জন্য ভিড় করেন। বিভিন্ন পার্বন ও দীর্ঘ সরকারী ছুটির সময়গুলোতে টিকিটের চাহিদা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেলেও আমরা চাহিদামতো টিকিট তাদের দিতে পারি না।’

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলে রেলসেবা নিয়ে যাত্রীদের অসন্তোষ 

আপডেট সময় : ১২:৪২:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩

আবুজার বাবলা, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: পর্যটননগরী শ্রীমঙ্গলে প্রতিদিন শত শত যাত্রী রেলপথে ঘুরতে এলেও যাত্রীসেবা সংকট যেন কাটছেই না। রেলপথে চলাচলকারীরা এনিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করলে নির্বিকার রেলপথ বিভাগ।

১৯১২ সালের প্রথম দিকে ব্রিটিশরা রেলগাড়ি দিয়ে চা ও বিভিন্ন পণ্য চট্টগ্রামে পরিবহন করতে শ্রীমঙ্গলে রেল স্টেশন স্থাপন করে। পরে আস্তে আস্তে এখানে ট্রেনে ভ্রমণকারী মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এই স্টেশন রেলপথ বিভাগের আখাউড়া-কুলাউড়া-ছাতক রেলপথের অন্তর্ভুক্ত।

রেলের হিসাব মতে এ পথে ছয়টি  আন্তঃনগর ট্রেন শ্রীমঙ্গল স্টেশনে যাত্রাবিরতি করো। এর মধ্যে রয়েছে  ঢাকা সিলেট  রেলপথের উপবন এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ও পারাবত এক্সপ্রেস। চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথে উদয়ন এক্সপ্রেস ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস সেইসাথে দুটি লোকাল ও মেইল ট্রেন এই স্টেশনে চলাচল করে।

কিন্তু প্রতিষ্ঠার শত বছর অতিক্রম করলেও নানা সমস্যায় জর্জরিত ঐতিহ্যবাহী এই রেল স্টেশনের যাত্রীসেবা দিন দিন অসন্তোষের পর্যায়ে গেছে।

ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে প্রতিদিন ছয়টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। তবে বর্তমানে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের জালালাবাদ এক্সপ্রেস মেল ট্রেন বন্ধ রয়েছে। ভ্রমণকারীরা টিকেট সঙ্কট, অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার, পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থার অভাব, অপরিচ্ছন্ন প্ল্যাটফর্ম, দুর্বল রেল লাইন, এবং প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্ট।

এসব ঝুট ঝামেলা পেড়িয়ে একজন যাত্রী ট্রেনে সওয়ার হওয়ার পর থেকে গন্তব্য পৌঁছাতে যে অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয় তা আরো ভয়াবহ। অতিরিক্ত ষ্ট্যান্ডিং যাত্রি বহন, হিজরা, কলা, লেবু, আনারস, বাদাম, ঝালমুড়ি, পানীয়, তাবিজ, ফকির, সঙ্গীতজ্ঞ থেকে পাগল-কি নেই ট্রেন যাত্রায়! রীতিমতো গুলিস্তানের আবহ। এসব হকার আর ফেরিওয়ালাদের উৎপাত চরমে পৌঁছে। সংঘবদ্ধ হিজরাদের চাঁদাবাজি নিয়ে যাত্রীদের হাতাহাতি নিত্য ব্যাপার। এসব দেখার যেন কেউ নেই। যাদের দেখার কথা তাদের ব্যতিব্যাস্ত থাকতে দেখা যায় বিনা টিকিটের যাত্রী ও তাদের বস্তা পটুলি নিয়ে।

এদিকে রেলস্টেশনের কাউন্টার ও মোবাইল অ্যাপস- এই মাধ্যমেই আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটগুলো ভাগ করে দেয়া হলেও এর থেকে সুফল পাচ্ছে না যাত্রীরা । একশ্রেনীর টিকিট ফরিয়ারা প্রযুক্তিনির্ভর মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে বাজারে ছাড়ার সাথে সাথে টিকিট দ্রুত কেটে বাজারে উচ্চ মুল্যে বিক্রি করছে।

কম দাম, স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপদ ভ্রমন ও

পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় এই স্টেশনের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে। বেশী চাহিদার বিপোরীতে শ্রীমঙ্গলের বরাদ্দ কম। এই অল্প বরাদ্দের টিকিটের উপর আবার অলিখিত কোটা রয়েছে প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও ভিআইপিদের। ফলে সাধারণের টিকিটের চাপ সবসময় থেকেই যায়।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, শ্রীমঙ্গল-ঢাকাগামী ৪টি এবং শ্রীমঙ্গল-চট্টগ্রামগামী ২টিসহ মোট ৬টি আন্তঃনগর ট্রেন প্রতিদিন যাতাযাত করে। ট্রেনগুলো হলো- ঢাকাগামী কালনী এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস ও উপবন এক্সপ্রেস।

এছাড়াও চট্টগ্রামগামী ৩টি আন্তঃনগর ট্রেন হলো পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ও উদয়ন এক্সপ্রেস।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানা গেছে, ঢাকাগামী আন্তঃনগর কালনী এক্সপ্রেস ৭৭৪ শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা ২৩ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ান হয়। এ ট্রেনে শ্রীমঙ্গলের আসন সংখ্যা মাত্র ২৬টি। শোভন ১০টি, শোভন চেয়ার ১০টি এবং প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৬টি।

প্রতিদিন দুপুর ১টা ৩২ মিনিটে শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস শ্রীমঙ্গলের জন্য এর আসন সংখ্যা মাত্র ৩৭টি। এর মধ্যে শোভন ১০টি, শোভন চেয়ার ১৩টি, প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৫টি এবং কেবিনে রয়েছে ৯টি আসন।

ঢাকার উদ্দেশে প্রতিদিন শেষ বিকেল ৫টা ৫৮ মিনিটে শ্রীমঙ্গল ছেড়ে যায় আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস-৭১০। অন্য সবগুলো আন্তঃনগর থেকে শ্রীমঙ্গলে এর আসন অপেক্ষাকৃত একটু বেশি, মোট ৫৩টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৩০টি, এসি চেয়ার ১৫টি এবং কেবিনে রয়েছে ৮টি আসন।

প্রতিদিন মধ্যরাত অর্থাৎ, ২টা ১৫ মিনিটে শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর উপবন -৭৪০। শ্রীমঙ্গলের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৩৬টি। এর মধ্যে শোভন ১৫টি, শোভন চেয়ার ১০টি, প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৫টি এবং বাথ কেবিনে আসন রয়েছে ৬টি।

চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা-৭২০ প্রতিদিন শ্রীমঙ্গল ছেড়ে যায় দুপুর ১২টা ৩২ মিনিটে। এ ট্রেনে শ্রীমঙ্গলের জন্য বরাদ্দ মোট আসন মাত্র ২৭টি। এগুলো হলো- শোভন চেয়ার ২০টি, এসি চেয়ার ৪টি এবং এসি কেবিন ৩টি।

সবচেয়ে করুণ অবস্থা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন- ৭২৪) এক্সপ্রেস ট্রেনের। প্রতিদিন রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে শ্রীমঙ্গল ছেড়ে যায়। এখানে শ্রীমঙ্গলের জন্য বরাদ্দ আসন মাত্র ১৫টি। সবগুলোই শোভন চেয়ার।

কালনী শুক্রবার, জয়ন্তিকা বৃহস্পতিবার, পারাবত মঙ্গলবার, পাহাড়িকা শনিবার এবং উদয়ন রোববার এ আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে। 

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সুত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা এবং উদয়ন লাকসাম, কসবা ও লাঙ্গলকোট স্টেশনের জন্য শ্রীমঙ্গল থেকে কোনো টিকিট বরাদ্দ নেই। ঢাকাগামী কালনীতে শায়েস্তাগঞ্জ, আজমপুর, ভৈরব এবং নরসিংদী স্টেশনের কোনো টিকিট নেই। চট্টগ্রাম থেকে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা এক

পর্যটক জানান, শ্রীমঙ্গল স্টেশনে দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট মেলে না। যেহেতু শ্রীমঙ্গল পর্যটন নগরী তাই এখানে পর্যাপ্ত টিকিটের ব্যবস্থা রাখা দরকার।

অপর এক পর্যটক ভারতে ট্রেন ভ্রমনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, বৃটিশরা একইসাথে ভারত বর্ষে ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করলেও ভারত থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে। অথচ সরকার রেলের পেছনে প্রচুর অর্থ খরচ করছে।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার শাখাওয়াত মিয়া বলেন, শ্রীমঙ্গল-ঢাকা এবং শ্রীমঙ্গল-চট্টগ্রাম রুটে ৬টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বরাদ্দ মাত্র ৩৫০টি। শ্রীমঙ্গল পর্যটননগরী হওয়ার কারণে প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক ট্রেনের টিকেটের জন্য ভিড় করেন। বিভিন্ন পার্বন ও দীর্ঘ সরকারী ছুটির সময়গুলোতে টিকিটের চাহিদা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেলেও আমরা চাহিদামতো টিকিট তাদের দিতে পারি না।’