‘ভিসা নীতি: আওয়ামী লীগকে একলা করার কৌশল’
- আপডেট সময় : ১০:২২:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৩১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির আসল লক্ষ্য কি-এ নিয়ে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক অঙ্গনে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগকে একলা করার কৌশলেই এই ভিসা নীতি তৈরি করা হয়েছে। যার মূল লক্ষ্য হলো আওয়ামী লীগের যে পার্শ্বশক্তি গুলো আছে, যারা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের জন্য কাজ করবে, ক্ষমতাসীন দলকে জয়ী করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রভাব বিস্তার করবে তাদেরকে নিষ্ক্রিয় করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যার ফলে এটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি হয়। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এরকম কৌশল কতটা সফল হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে যে ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছে তার পরবর্তীতে এখন নতুন করে কিছু ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চাচ্ছে’।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, টানা পনেরো বছর যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আছে তার পেছনে কতগুলো পার্শ্বশক্তি রয়েছে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যেমন- (১) প্রশাসন, (২) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, (৩) ব্যবসায়ী সমাজ, (৪) গণমাধ্যম। আর এই শক্তিগুলোকে যদি নিষ্ক্রিয় করা যায়, তারা যদি সরকারের জন্য অযাচিতভাবে কাজ না করে এবং সরকারকে জেতানোর জন্য বিভিন্ন পথ এবং প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে তাহলেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের যে শক্তিগুলো আছে, যে শক্তিগুলো সহায়তায় আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে আছে সেই শক্তিগুলোকে নিষ্ক্রিয় করাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্যই ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হয়েছে। অবশ্য ভিসা নীতি প্রয়োগের পরে কোনো কোনো মহল থেকে বলা হচ্ছে যে ভিসা নীতি যথেষ্ট নয়। এই ভিসা নীতি দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে দমানো যাবে না এবং এই ভিসা নীতির মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না। আর এই কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন ভিসা নীতির বাইরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সহ আরও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। আর এসমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ হলে সরকারের পার্শ্বশক্তি গুলো নিষ্ক্রিয় হবে বলে তারা ধারণা করছে।
তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, যদি প্রশাসন ভিসা নীতির কারণে নিরপেক্ষ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে, ব্যবসায়ীরা আওয়ামী লীগের প্রতি পক্ষপাতপূর্ণ আচরণ বন্ধ করে সেক্ষেত্রে একটি নিরপেক্ষ পরিবেশ তৈরি হতে পারে। কিন্তু এই বিধি ব্যবস্থা কতটুকু কার্যকর হবে বা কিভাবে এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাই করা যাবে যে প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ হয়েছে তা বোধগম্য নয়। কারণ নাইজেরিয়া, কাম্বোডিয়া সহ বিভিন্ন দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একই রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল সেই ব্যবস্থা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। কারণ দেখা গেছে যে, যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা নির্বাচন করে ফেলেছে এবং মাটি কামড়ে থেকে সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করে একবার নির্বাচন করে ফেলার পর পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়েছে। তাছাড়া ৫ বছর আগেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে একচ্ছত্র আধিপত্য বিশ্বব্যাপী ছিল তাতে এখন ঘুন ধরেছে’। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্ব এখন বিভক্ত হয়ে গেছে। এরকম বিভক্ত বিশ্বে একটি দেশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কতটুকু চাপ দিতে পারবে এবং সেই চাপ কতটুকু কার্যকর হবে সেটি একটি বড় ইস্যু’।
















