সংবাদ শিরোনাম ::
শাহজাদপুরে আওয়ামীলীগের সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা বেলকুচিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ  শাহজাদপুরে অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ জন আটক ৭ নভেম্বর না আসলে বাংলাদেশ বিলীন হয়ে যেত: বাউবি উপাচার্য বেলকুচির সেন ভাঙ্গাবাড়ী বাজার মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন “জয় বাংলা” স্লোগান দেওয়ায় সাবেক পিপি-কে গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ উলিপুরে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র মেরামতের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ খাজা শাহ্ এনায়েতপুরী (রহ:) এর ১১০ তম ওরছ শরীফের দাওয়াত পত্র বিতরণ  রাজশাহীর মাঠে স্পীড স্কেটিংয়ে বগুড়ার স্কেটারদের ৩টি স্বর্ণপদক সহ ৮ পদক অর্জন এনায়েতপুরে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি উপলক্ষে আলোচনা সভা

এলজাব্যাথের এলিটিজম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:০৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ৫৭৫ বার পড়া হয়েছে

আমরা প্রায়শঃই ‘এলিট সমাজ’ কথাটা ব্যবহার করি। বিষয়টি খুবই বিস্ময়কর। কারণ আমরা মনে করি, একজন লোকের বিশাল একটি বাড়ি থাকলে, গুটিকতক গাড়ি থাকলে, ব্যাংক ব্যালেন্স থাকলে, উড়োজাহাজে বিজনেস ক্লাসে ওড়াউড়ি করলে, একটা ফর্সা বৌ থাকলে, কিছু ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া বাচ্চা-কাচ্চা থাকলে, লিভিং রুমটি নানা দেশ থেকে আনা শো পিসে পূর্ণ থাকলে, লোকটি গলফ খেললে, আর স্ত্রী স্পা নিতে গেলেই সে এলিট হয়ে গেলো।

এই ভুলটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সমাজকে ভীষণ ভুগিয়ে চলেছে। যে বর্ণনাটি দিলাম, এটিকে এফলুয়েন্স বলা যায়। শিল্প-বিপ্লব যেহেতু দক্ষিণ এশিয়ায় ঘটেনি, তাই দুর্নীতি-বিপ্লবোত্তর এই নব্য ধণিক সমাজটিকে বড় জোর ফিলিস্টাইন্স বলা যায়।

আবার ঢাকায়-কলকাতায় রবীন্দ্র সংগীত শুনে মাথা দোলানো, দিল্লীতে-মুম্বাইয়ে ধ্রুপদী সংগীত শুনে ঝিম মেরে থাকা বা করাচিতে জন এলিয়ার কবিতা শুনে ‘বাহ বাহ’ করা লোকজনকে অনেকেই এলিট বলে ভুল করেন। গভীর আত্মপরিচয়ের সংকটে বেংলিশ ও মিংলিশ বলা সন্তানাদি নিয়ে গর্বিত এইসব মানুষের আচার-আচরণ অনেকটা সংস্কৃতিন্তরিত এলজ্যাবেথের মতো। দক্ষিণ এশিয়ার নিজস্ব পোশাক-আশাকে আত্মবিশ্বাসী হতে না পেরে পশ্চিমা পোশাক পরে এরা এলিজাবেথ সাজতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত তাদের এলজাব্যাথ মনে হয়।

কে কোন পোশাক পরবেন, সেটি অবশ্যই ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়। কিন্তু পশ্চিমা পোশাককে কেউ যখন স্ট্যাটাস সিম্বল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টা করবেন, তখন আমরা তাকে এলজ্যাবেথই বলবো। আবার সৌদী পোশাক পরে সেটিকে কেউ যখন ‘শুদ্ধতা’র মানদণ্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবেন, আমরা তাকে সংস্কৃতিন্তরিত অপভ্রংশ মানুষই বলবো।

নিজস্ব সংস্কৃতিতে আত্মবিশ্বাসী মানুষ ছাড়া কাউকে এলিট বলে মেনে নিতে ভীষণ আপত্তি আছে। কারণ পৃথিবীর অন্যান্য এলাকার মানুষকে তখনই আমার সঙ্গে খুব আগ্রহভরে মিশতে দেখেছি, যখন নিজস্ব পোশাক পরেছি। পোশাক ব্যাপারটা এখানে প্রতীকী, আত্মবিশ্বাস আর মৌলিকত্বের প্রতীক।

এফলুয়েন্সের সঙ্গে এলিটিজমের আসলে কোনো সম্পর্কই নেই। এলিটিজমের সম্পর্ক এনলাইটেনমেন্টের সঙ্গে। এই এনলাইটেনমেন্ট খুব বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেই যে আসবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। জীবনের স্কুল থেকেই আসল এলিটিজমের উদ্ভাস ঘটে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো এফলুয়েন্স অনেক লোকের ছিলো, কিন্তু তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো এলিট হতে পারেননি। অন্তর্গত আলোকায়নের কারণে লালন এবং লেনন উভয়েই এলিট যারা পৃথিবীর সম্পূর্ণ ভিন্ন ভূগোলে জন্মেছেন। সৈয়দ মুজতবা আলীর সেই অর্থে এফলুয়েন্স ছিলো না, কিন্তু তিনি এলিট। কারণ তার মধ্যে বিশ্বদৃষ্টি তৈরী হয়েছিলো।

একবার উয়ারী-বটেশ্বরের প্রাচীন সভ্যতার খোঁজ-খবর করতে গিয়ে একটি পরিবারের দেখা পেয়েছিলাম, যাদের সেই অর্থে টাকা-পয়সা নেই, কিন্তু বাড়ি ভর্তি বই-পুস্তক; স্ব-উদ্যোগে পরিবারটি প্রত্ন গবেষণা করতো। এই পরিবারের এফলুয়েন্স নেই; কিন্তু তারা এলিট। তাদের সঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দেয়া যায়। কিন্তু কথিত এফলুয়েন্টদের সঙ্গে কী নিয়ে কথা বলবেন? দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিটি মেট্রোপলিটানে টান টান এলিট হয়ে বসে থাকা লোকজন কেবল কোন রেষ্টুরেন্টের খাবার কেমন, কোন এয়ারলাইন্স ভালো সার্ভিস দেয়, কোন দেশে থাকার কোন হোটেল ভালো, এসব গল্প ছাড়া আর কোনো বিষয়ে কথা বলতে পারে না।

এ রকম সমাজের গল্প ইউরোপের শিল্প-বিপ্লবোত্তর নব্যধণিকদের নিয়ে রচিত স্যাটায়ারে অনেক পড়েছি। সৌভাগ্যক্রমে প্রায় পুরো পৃথিবীটাই চক্কর দিয়ে ফেলায় দক্ষিণ এশিয়ার সমাজের আদিখ্যেতার গল্পগুলো বেশ বিনোদন দেয়। কারণ এরা বিস্মিত করবে কী দিয়ে?

আমাকে বরং মুগ্ধ করে মহেশ্চরচান্দার কৃষক, যিনি স্বশিক্ষিত, কৃষি গবেষণা করে গ্রামকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলেছিলেন। অথবা বাউসার পলান সরকার যিনি পায়ে হেঁটে বই বিলি করে বেড়ান, গ্রামে এনলাইটেনমেন্ট নিয়ে আসেন। এইসব প্রমিথিউসেরাই এলিট। আর যারা বুদ্ধিজীবী সেজে ঘাড় গুঁজে সেমিনারে বসে ঘুমান, কিংবা টিভি টকশোতে যে বিষয়ে কিছুই জানেন না, সে বিষয়ে ভাট বকে দর্শকদের বিরক্ত করেন, তারা বড় জোর এফলুয়েন্ট। এরচেয়ে ঈশ্বরদীর চায়ের স্টলের সহজাত টকশো’তে সাবস্ট্যান্স অনেক বেশী।

এইসব কথা উত্থাপনের অভিলক্ষ্য সেইসব তরুণেরা—যারা এফলুয়েন্সকে এলিটিজম ভেবে ভুল-এলিট হওয়ার দুর্মর চেষ্টা করে। চিন্তার জগতের আলোকায়নই এলিটিজম। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-বিশ্বাস-অবিশ্বাসের বদ্ধচিন্তার বাইরে মানবিক মুক্তভাবনাই এলিটিজম।

অমুক ভাই-তমুক আপার গাড়ী, তাদের প্রসাধন কক্ষের দামী টাইলস বা কমোড, কিংবা চার্লিদের নিয়ে বার্থডে কেক কেটে সেলফি তোলা, চুলে জেল দেয়া বড় ভাইদের জীবনটা আসলে ওই কমোডের মতো। যেটা ফ্ল্যাশ করে দিলেই নেমে যাবে তাদের উপজীবনের বর্জ্য।

কিছুদিন আগে মুম্বাইয়ের দুজন সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা হয়েছিলো। দেখা হওয়ার দ্বিতীয় দিনে উভয়েই দেখাচ্ছিলেন কে কী শপিং করেছেন। একজন কিনেছেন লন আর শো’পিস; আরেকজন কিনেছেন বই, আর বই। তৎক্ষণাত বোঝা গেলো কেন প্রথম দিন একজনের সঙ্গে অনেক গল্প হলো; আরেকজনের সঙ্গে কথা বলার বিষয় খুঁজে পেলাম না। একজন এফলুয়েন্ট এলজ্যাবেথ, আরেকজন এলিট এলিজাবেথ, এটা স্পষ্ট হলো দ্বিতীয় দিন।

মাসকাওয়াথ আহসানএ ডিটর ইন চীফ ই-সাউথ এশিয়া

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

এলজাব্যাথের এলিটিজম

আপডেট সময় : ০২:০৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

আমরা প্রায়শঃই ‘এলিট সমাজ’ কথাটা ব্যবহার করি। বিষয়টি খুবই বিস্ময়কর। কারণ আমরা মনে করি, একজন লোকের বিশাল একটি বাড়ি থাকলে, গুটিকতক গাড়ি থাকলে, ব্যাংক ব্যালেন্স থাকলে, উড়োজাহাজে বিজনেস ক্লাসে ওড়াউড়ি করলে, একটা ফর্সা বৌ থাকলে, কিছু ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া বাচ্চা-কাচ্চা থাকলে, লিভিং রুমটি নানা দেশ থেকে আনা শো পিসে পূর্ণ থাকলে, লোকটি গলফ খেললে, আর স্ত্রী স্পা নিতে গেলেই সে এলিট হয়ে গেলো।

এই ভুলটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সমাজকে ভীষণ ভুগিয়ে চলেছে। যে বর্ণনাটি দিলাম, এটিকে এফলুয়েন্স বলা যায়। শিল্প-বিপ্লব যেহেতু দক্ষিণ এশিয়ায় ঘটেনি, তাই দুর্নীতি-বিপ্লবোত্তর এই নব্য ধণিক সমাজটিকে বড় জোর ফিলিস্টাইন্স বলা যায়।

আবার ঢাকায়-কলকাতায় রবীন্দ্র সংগীত শুনে মাথা দোলানো, দিল্লীতে-মুম্বাইয়ে ধ্রুপদী সংগীত শুনে ঝিম মেরে থাকা বা করাচিতে জন এলিয়ার কবিতা শুনে ‘বাহ বাহ’ করা লোকজনকে অনেকেই এলিট বলে ভুল করেন। গভীর আত্মপরিচয়ের সংকটে বেংলিশ ও মিংলিশ বলা সন্তানাদি নিয়ে গর্বিত এইসব মানুষের আচার-আচরণ অনেকটা সংস্কৃতিন্তরিত এলজ্যাবেথের মতো। দক্ষিণ এশিয়ার নিজস্ব পোশাক-আশাকে আত্মবিশ্বাসী হতে না পেরে পশ্চিমা পোশাক পরে এরা এলিজাবেথ সাজতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত তাদের এলজাব্যাথ মনে হয়।

কে কোন পোশাক পরবেন, সেটি অবশ্যই ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়। কিন্তু পশ্চিমা পোশাককে কেউ যখন স্ট্যাটাস সিম্বল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টা করবেন, তখন আমরা তাকে এলজ্যাবেথই বলবো। আবার সৌদী পোশাক পরে সেটিকে কেউ যখন ‘শুদ্ধতা’র মানদণ্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবেন, আমরা তাকে সংস্কৃতিন্তরিত অপভ্রংশ মানুষই বলবো।

নিজস্ব সংস্কৃতিতে আত্মবিশ্বাসী মানুষ ছাড়া কাউকে এলিট বলে মেনে নিতে ভীষণ আপত্তি আছে। কারণ পৃথিবীর অন্যান্য এলাকার মানুষকে তখনই আমার সঙ্গে খুব আগ্রহভরে মিশতে দেখেছি, যখন নিজস্ব পোশাক পরেছি। পোশাক ব্যাপারটা এখানে প্রতীকী, আত্মবিশ্বাস আর মৌলিকত্বের প্রতীক।

এফলুয়েন্সের সঙ্গে এলিটিজমের আসলে কোনো সম্পর্কই নেই। এলিটিজমের সম্পর্ক এনলাইটেনমেন্টের সঙ্গে। এই এনলাইটেনমেন্ট খুব বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেই যে আসবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। জীবনের স্কুল থেকেই আসল এলিটিজমের উদ্ভাস ঘটে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো এফলুয়েন্স অনেক লোকের ছিলো, কিন্তু তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো এলিট হতে পারেননি। অন্তর্গত আলোকায়নের কারণে লালন এবং লেনন উভয়েই এলিট যারা পৃথিবীর সম্পূর্ণ ভিন্ন ভূগোলে জন্মেছেন। সৈয়দ মুজতবা আলীর সেই অর্থে এফলুয়েন্স ছিলো না, কিন্তু তিনি এলিট। কারণ তার মধ্যে বিশ্বদৃষ্টি তৈরী হয়েছিলো।

একবার উয়ারী-বটেশ্বরের প্রাচীন সভ্যতার খোঁজ-খবর করতে গিয়ে একটি পরিবারের দেখা পেয়েছিলাম, যাদের সেই অর্থে টাকা-পয়সা নেই, কিন্তু বাড়ি ভর্তি বই-পুস্তক; স্ব-উদ্যোগে পরিবারটি প্রত্ন গবেষণা করতো। এই পরিবারের এফলুয়েন্স নেই; কিন্তু তারা এলিট। তাদের সঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দেয়া যায়। কিন্তু কথিত এফলুয়েন্টদের সঙ্গে কী নিয়ে কথা বলবেন? দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিটি মেট্রোপলিটানে টান টান এলিট হয়ে বসে থাকা লোকজন কেবল কোন রেষ্টুরেন্টের খাবার কেমন, কোন এয়ারলাইন্স ভালো সার্ভিস দেয়, কোন দেশে থাকার কোন হোটেল ভালো, এসব গল্প ছাড়া আর কোনো বিষয়ে কথা বলতে পারে না।

এ রকম সমাজের গল্প ইউরোপের শিল্প-বিপ্লবোত্তর নব্যধণিকদের নিয়ে রচিত স্যাটায়ারে অনেক পড়েছি। সৌভাগ্যক্রমে প্রায় পুরো পৃথিবীটাই চক্কর দিয়ে ফেলায় দক্ষিণ এশিয়ার সমাজের আদিখ্যেতার গল্পগুলো বেশ বিনোদন দেয়। কারণ এরা বিস্মিত করবে কী দিয়ে?

আমাকে বরং মুগ্ধ করে মহেশ্চরচান্দার কৃষক, যিনি স্বশিক্ষিত, কৃষি গবেষণা করে গ্রামকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলেছিলেন। অথবা বাউসার পলান সরকার যিনি পায়ে হেঁটে বই বিলি করে বেড়ান, গ্রামে এনলাইটেনমেন্ট নিয়ে আসেন। এইসব প্রমিথিউসেরাই এলিট। আর যারা বুদ্ধিজীবী সেজে ঘাড় গুঁজে সেমিনারে বসে ঘুমান, কিংবা টিভি টকশোতে যে বিষয়ে কিছুই জানেন না, সে বিষয়ে ভাট বকে দর্শকদের বিরক্ত করেন, তারা বড় জোর এফলুয়েন্ট। এরচেয়ে ঈশ্বরদীর চায়ের স্টলের সহজাত টকশো’তে সাবস্ট্যান্স অনেক বেশী।

এইসব কথা উত্থাপনের অভিলক্ষ্য সেইসব তরুণেরা—যারা এফলুয়েন্সকে এলিটিজম ভেবে ভুল-এলিট হওয়ার দুর্মর চেষ্টা করে। চিন্তার জগতের আলোকায়নই এলিটিজম। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-বিশ্বাস-অবিশ্বাসের বদ্ধচিন্তার বাইরে মানবিক মুক্তভাবনাই এলিটিজম।

অমুক ভাই-তমুক আপার গাড়ী, তাদের প্রসাধন কক্ষের দামী টাইলস বা কমোড, কিংবা চার্লিদের নিয়ে বার্থডে কেক কেটে সেলফি তোলা, চুলে জেল দেয়া বড় ভাইদের জীবনটা আসলে ওই কমোডের মতো। যেটা ফ্ল্যাশ করে দিলেই নেমে যাবে তাদের উপজীবনের বর্জ্য।

কিছুদিন আগে মুম্বাইয়ের দুজন সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা হয়েছিলো। দেখা হওয়ার দ্বিতীয় দিনে উভয়েই দেখাচ্ছিলেন কে কী শপিং করেছেন। একজন কিনেছেন লন আর শো’পিস; আরেকজন কিনেছেন বই, আর বই। তৎক্ষণাত বোঝা গেলো কেন প্রথম দিন একজনের সঙ্গে অনেক গল্প হলো; আরেকজনের সঙ্গে কথা বলার বিষয় খুঁজে পেলাম না। একজন এফলুয়েন্ট এলজ্যাবেথ, আরেকজন এলিট এলিজাবেথ, এটা স্পষ্ট হলো দ্বিতীয় দিন।

মাসকাওয়াথ আহসানএ ডিটর ইন চীফ ই-সাউথ এশিয়া