সংবাদ শিরোনাম ::
শাহজাদপুরে আওয়ামীলীগের সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা বেলকুচিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ  শাহজাদপুরে অটোবাইক ছিনতাই চক্রের ৬ জন আটক ৭ নভেম্বর না আসলে বাংলাদেশ বিলীন হয়ে যেত: বাউবি উপাচার্য বেলকুচির সেন ভাঙ্গাবাড়ী বাজার মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন “জয় বাংলা” স্লোগান দেওয়ায় সাবেক পিপি-কে গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ উলিপুরে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র মেরামতের টাকা আত্নসাতের অভিযোগ খাজা শাহ্ এনায়েতপুরী (রহ:) এর ১১০ তম ওরছ শরীফের দাওয়াত পত্র বিতরণ  রাজশাহীর মাঠে স্পীড স্কেটিংয়ে বগুড়ার স্কেটারদের ৩টি স্বর্ণপদক সহ ৮ পদক অর্জন এনায়েতপুরে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি উপলক্ষে আলোচনা সভা

শূন্য কি আসলেই সংখ্যা’

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪০ বার পড়া হয়েছে

বাংলা পোর্টাল: শূন্য (০) আসলে কী? কোনো শব্দ বা বর্ণ? ফুল বা ফল? অণু-পরমাণু? এর কোনোটিই নয়। সে ক্ষেত্রে শূন্যকে সংখ্যা বলাই যায়। কিন্তু কোন ধরনের সংখ্যা? পৃথিবীতে কি এর অস্তিত্ব আছে? প্রশ্নটা একটু অন্যভাবে চিন্তা করতে পারেন। যেমন আপনি বললেন, আমার কাছে তিনটা ডিম আছে’। কিন্তু যদি আপনার কাছে কোনো ডিম না থাকে, তাহলে কী বলবেন? আমার কাছে কোনো ডিম নেই। আমরা কিন্তু বলি না, আমার কাছে শূন্যটা ডিম আছে। কারণ কোনো কিছু না থাকা বলতেই শূন্য বোঝায়। আসলে, বাস্তবে শূন্যের কোনো অস্তিত্ব নেই।

বাস্তবে শূন্যের অস্তিত্ব না থাকলে, শূন্য আবিষ্কৃত হলো কেন? এককথায় বললে, গণনার প্রয়োজনে। আসলে শূন্য আবিষ্কারের আগেও ব্যাবিলন, রোম কিংবা মায়া সভ্যতায় নির্দিষ্ট চিহ্ন ব্যবহৃত হতো গণনার জন্য। তবে এতে অনেক বড় সংখ্যা লিখতে বেশ ঝামেলায় পড়তে হতো। প্রাচীন ভারতীয়রা সে জন্য শূন্যের ব্যবহার শুরু করেন। অর্থাৎ বাস্তবে শূন্যের প্রয়োগ বা ব্যবহার না থাকলেও সংখ্যা পদ্ধতির জন্য এর ভূমিকা অপরিসীম।

কে শূন্য আবিষ্কার করেছেন, তা নিয়ে অবশ্য মতভেদ রয়েছে। কারো মতে শূন্যের উদ্ভাবক ব্রহ্মগুপ্ত, আবার কেউ কেউ বলেন আর্যভট্ট। তবে শূন্য যেই আবিষ্কার করুন না কেন, তিনি ভারতীয়ই ছিলেন। কাহিনিটা অনেক বড়, তাই সেটা অন্য কোনো লেখার জন্য তোলা থাকুক। প্রসঙ্গে ফিরি।

ধরুন, আপনার কাছে তিনটি কমলা আছে। সেখান থেকে একটি সরিয়ে ফেললাম। এখন আপনার কাছে কয়টি কমলা আছে? আপনি বলবেন, দুটি। আপনার উত্তর হ্যাঁ-বোধক। এবারে আমি আরও একটি কমলা সরিয়ে ফেললাম। এখন কয়টি আছে? আপনি বলবেন, একটি। এখনও আপনার উত্তর হ্যাঁ-বোধক। এরপর যদি আমি আরও একটি সরিয়ে ফেলি? এবার কী বলবেন? কয়টি কমলা আছে? বলবেন একটিও নেই। অর্থাৎ, আপনার উত্তর এখন আর হ্যাঁ-বোধক নয়। উত্তরে না-বোধক শব্দ চলে এসেছে।’

যুক্তির খাতিরে হয়তো বলতে পারেন, আমার কাছে শূন্যটি কমলা আছে। কিন্তু এভাবে আমরা কখনো বলি না। কারণ শূন্য মানে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। তাহলে শূন্যকে কোন ধরনের সংখ্যা বলবেন? ধনাত্মক, নাকি ঋণাত্মক?

ধরুন, শূন্য (০) ধনাত্মক সংখ্যা। এখন চিন্তা করুন, আপনার কাছে পাঁচটি মুরগি আছে। কীভাবে গুনবেন? ১, ২, ৩, ৪ ও ৫। কেউ নিশ্চয়ই ০, ১, ২, ৩, ৪ ও ৫-এভাবে গুনবে না। তাহলে শূন্যকে কীভাবে ধনাত্মক সংখ্যা বলি?

যেহেতু শূন্য ধনাত্মক সংখ্যা নয়, সেহেতু নিশ্চয়ই ঋণাত্মক সংখ্যা। কারণ পূর্ণসংখ্যাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা ও ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা। একটা না হলে অন্যটা হওয়ার কথা। এই যুক্তিতে বলতে পারি, শূন্য ঋণাত্মক সংখ্যা। কিন্তু সেটাও আসলে সম্ভব নয়। কারণ বাস্তবে ঋণাত্মক সংখ্যার কোনো অস্তিত্ব নেই। নিশ্চয়ই বলবেন না, আমার কাছে মাইনাস ৫টি মুরগি আছে। এটা থাকা তো সম্ভব নয়। কারণ বাস্তব জগতে ঋণাত্মক সংখ্যারও কোনো অস্তিত্ব নেই। তাই শূন্য ধনাত্মক যেমন নয়, তেমনি ঋণাত্মক সংখ্যাও নয়। তাহলে?

শূন্যকে যদি কোনো সংখ্যাই না ধরি? শূন্য যদি বাদ দিয়ে দিই গাণিতিক হিসাব-নিকাশ থেকে? সেটাও সম্ভব নয়। শূন্য আসলে একটা জায়গা দখল করে থাকে। শূন্যের বাঁয়ে সব ঋণাত্মক সংখ্যা এবং ডানে ধনাত্মক সংখ্যা। ধনাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যাকে আলাদা করে রেখেছে শূন্য। আবার শূন্য মানে কিছু নেই। তাহলে শূন্য আসলে কোন ধরনের সংখ্যা? স্বাভাবিক সংখ্যা হতে পারে?

এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে কিছুটা মতভেদ আছে। স্বাভাবিক সংখ্যার সংজ্ঞা দুটি। প্রথমত, ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যাকে স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। প্রশ্ন আসে, ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা কী? শূন্যের চেয়ে বড় পূর্ণসংখ্যাকে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা বলে। যেমন ১, ২, ৩…ইত্যাদি। এখানে কিন্তু শূন্যের জায়গা নেই। কারণ শূন্যের চেয়ে বড় সংখ্যা হতে হবে। দ্বিতীয়ত, অঋণাত্মক সংখ্যাকেও স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। যেমন, ০, ১, ২, ৩…ইত্যাদি। অঋণাত্মক মানে যে সংখ্যা ঋণাত্মক নয়, সেটা। তাহলে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয় সংজ্ঞানুসারে শূন্যকে স্বাভাবিক পূর্ণসংখ্যা বলা যায়।

কিন্তু একটু ভাবুন, আপনি ৫টি টি-শার্ট কিনবেন। কীভাবে গুনবেন? ০টা, ১টা, ২টা…এভাবে নিশ্চয়ই গুনবেন না। ১, ২, ৩…এভাবে গুনবেন। খাতাকলমে শূন্যকে তাই স্বাভাবিক পূর্ণাসংখ্যা বলা গেলেও বাস্তব জীবনে এর ব্যবহার নেই। তাহলে শূন্য কি কোনো সংখ্যা নয়?

হ্যাঁ, শূন্য নিজেই একটি সংখ্যা, বিশেষ সংখ্যা বলতে পারেন। যার নাম শূন্য। মানে, বাস্তব সংখ্যাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। ধণাত্মক সংখ্যা, ঋণাত্মক সংখ্যা ও শূন্য। অর্থাৎ, শূন্য নিজেই একটি সংখ্যা, নিরপেক্ষ সংখ্যা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

শূন্য কি আসলেই সংখ্যা’

আপডেট সময় : ০৮:০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

বাংলা পোর্টাল: শূন্য (০) আসলে কী? কোনো শব্দ বা বর্ণ? ফুল বা ফল? অণু-পরমাণু? এর কোনোটিই নয়। সে ক্ষেত্রে শূন্যকে সংখ্যা বলাই যায়। কিন্তু কোন ধরনের সংখ্যা? পৃথিবীতে কি এর অস্তিত্ব আছে? প্রশ্নটা একটু অন্যভাবে চিন্তা করতে পারেন। যেমন আপনি বললেন, আমার কাছে তিনটা ডিম আছে’। কিন্তু যদি আপনার কাছে কোনো ডিম না থাকে, তাহলে কী বলবেন? আমার কাছে কোনো ডিম নেই। আমরা কিন্তু বলি না, আমার কাছে শূন্যটা ডিম আছে। কারণ কোনো কিছু না থাকা বলতেই শূন্য বোঝায়। আসলে, বাস্তবে শূন্যের কোনো অস্তিত্ব নেই।

বাস্তবে শূন্যের অস্তিত্ব না থাকলে, শূন্য আবিষ্কৃত হলো কেন? এককথায় বললে, গণনার প্রয়োজনে। আসলে শূন্য আবিষ্কারের আগেও ব্যাবিলন, রোম কিংবা মায়া সভ্যতায় নির্দিষ্ট চিহ্ন ব্যবহৃত হতো গণনার জন্য। তবে এতে অনেক বড় সংখ্যা লিখতে বেশ ঝামেলায় পড়তে হতো। প্রাচীন ভারতীয়রা সে জন্য শূন্যের ব্যবহার শুরু করেন। অর্থাৎ বাস্তবে শূন্যের প্রয়োগ বা ব্যবহার না থাকলেও সংখ্যা পদ্ধতির জন্য এর ভূমিকা অপরিসীম।

কে শূন্য আবিষ্কার করেছেন, তা নিয়ে অবশ্য মতভেদ রয়েছে। কারো মতে শূন্যের উদ্ভাবক ব্রহ্মগুপ্ত, আবার কেউ কেউ বলেন আর্যভট্ট। তবে শূন্য যেই আবিষ্কার করুন না কেন, তিনি ভারতীয়ই ছিলেন। কাহিনিটা অনেক বড়, তাই সেটা অন্য কোনো লেখার জন্য তোলা থাকুক। প্রসঙ্গে ফিরি।

ধরুন, আপনার কাছে তিনটি কমলা আছে। সেখান থেকে একটি সরিয়ে ফেললাম। এখন আপনার কাছে কয়টি কমলা আছে? আপনি বলবেন, দুটি। আপনার উত্তর হ্যাঁ-বোধক। এবারে আমি আরও একটি কমলা সরিয়ে ফেললাম। এখন কয়টি আছে? আপনি বলবেন, একটি। এখনও আপনার উত্তর হ্যাঁ-বোধক। এরপর যদি আমি আরও একটি সরিয়ে ফেলি? এবার কী বলবেন? কয়টি কমলা আছে? বলবেন একটিও নেই। অর্থাৎ, আপনার উত্তর এখন আর হ্যাঁ-বোধক নয়। উত্তরে না-বোধক শব্দ চলে এসেছে।’

যুক্তির খাতিরে হয়তো বলতে পারেন, আমার কাছে শূন্যটি কমলা আছে। কিন্তু এভাবে আমরা কখনো বলি না। কারণ শূন্য মানে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। তাহলে শূন্যকে কোন ধরনের সংখ্যা বলবেন? ধনাত্মক, নাকি ঋণাত্মক?

ধরুন, শূন্য (০) ধনাত্মক সংখ্যা। এখন চিন্তা করুন, আপনার কাছে পাঁচটি মুরগি আছে। কীভাবে গুনবেন? ১, ২, ৩, ৪ ও ৫। কেউ নিশ্চয়ই ০, ১, ২, ৩, ৪ ও ৫-এভাবে গুনবে না। তাহলে শূন্যকে কীভাবে ধনাত্মক সংখ্যা বলি?

যেহেতু শূন্য ধনাত্মক সংখ্যা নয়, সেহেতু নিশ্চয়ই ঋণাত্মক সংখ্যা। কারণ পূর্ণসংখ্যাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা ও ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা। একটা না হলে অন্যটা হওয়ার কথা। এই যুক্তিতে বলতে পারি, শূন্য ঋণাত্মক সংখ্যা। কিন্তু সেটাও আসলে সম্ভব নয়। কারণ বাস্তবে ঋণাত্মক সংখ্যার কোনো অস্তিত্ব নেই। নিশ্চয়ই বলবেন না, আমার কাছে মাইনাস ৫টি মুরগি আছে। এটা থাকা তো সম্ভব নয়। কারণ বাস্তব জগতে ঋণাত্মক সংখ্যারও কোনো অস্তিত্ব নেই। তাই শূন্য ধনাত্মক যেমন নয়, তেমনি ঋণাত্মক সংখ্যাও নয়। তাহলে?

শূন্যকে যদি কোনো সংখ্যাই না ধরি? শূন্য যদি বাদ দিয়ে দিই গাণিতিক হিসাব-নিকাশ থেকে? সেটাও সম্ভব নয়। শূন্য আসলে একটা জায়গা দখল করে থাকে। শূন্যের বাঁয়ে সব ঋণাত্মক সংখ্যা এবং ডানে ধনাত্মক সংখ্যা। ধনাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যাকে আলাদা করে রেখেছে শূন্য। আবার শূন্য মানে কিছু নেই। তাহলে শূন্য আসলে কোন ধরনের সংখ্যা? স্বাভাবিক সংখ্যা হতে পারে?

এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে কিছুটা মতভেদ আছে। স্বাভাবিক সংখ্যার সংজ্ঞা দুটি। প্রথমত, ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যাকে স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। প্রশ্ন আসে, ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা কী? শূন্যের চেয়ে বড় পূর্ণসংখ্যাকে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা বলে। যেমন ১, ২, ৩…ইত্যাদি। এখানে কিন্তু শূন্যের জায়গা নেই। কারণ শূন্যের চেয়ে বড় সংখ্যা হতে হবে। দ্বিতীয়ত, অঋণাত্মক সংখ্যাকেও স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। যেমন, ০, ১, ২, ৩…ইত্যাদি। অঋণাত্মক মানে যে সংখ্যা ঋণাত্মক নয়, সেটা। তাহলে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয় সংজ্ঞানুসারে শূন্যকে স্বাভাবিক পূর্ণসংখ্যা বলা যায়।

কিন্তু একটু ভাবুন, আপনি ৫টি টি-শার্ট কিনবেন। কীভাবে গুনবেন? ০টা, ১টা, ২টা…এভাবে নিশ্চয়ই গুনবেন না। ১, ২, ৩…এভাবে গুনবেন। খাতাকলমে শূন্যকে তাই স্বাভাবিক পূর্ণাসংখ্যা বলা গেলেও বাস্তব জীবনে এর ব্যবহার নেই। তাহলে শূন্য কি কোনো সংখ্যা নয়?

হ্যাঁ, শূন্য নিজেই একটি সংখ্যা, বিশেষ সংখ্যা বলতে পারেন। যার নাম শূন্য। মানে, বাস্তব সংখ্যাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। ধণাত্মক সংখ্যা, ঋণাত্মক সংখ্যা ও শূন্য। অর্থাৎ, শূন্য নিজেই একটি সংখ্যা, নিরপেক্ষ সংখ্যা।