ধান শুকানো ছাড়া কাজে আসে না ৬ কোটির সেতু
- আপডেট সময় : ১১:২৩:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪ ২৭ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক: জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় ছয় কোটি টাকা ব্যয় করে সেতু হয়েছে। কিন্তু সেতুটির একপাশে সংযোগ সড়ক থাকলেও অন্য পাশে নেই। ফলে দুই উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষের চলাচলের সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। গত এক বছর ধরে কৃষকের ধান ও খড় শুকানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে সেতুটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইসলামপুর সদরের পচাবহলা থেকে চিনাডুলী ইউনিয়নের ডেবরাইপেচ এলাকার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুর পূর্ব পাশে পাকা সড়ক থাকলেও পশ্চিম পাশে কোনো সড়ক নেই। সেতুটি পার হয়ে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। পশ্চিম পাশে সড়ক নির্মাণ করা হলে ইসলামপুর ও মেলান্দহ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন হবে। এ সড়কের অভাবে দুই উপজেলার প্রায় ত্রিশটি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর পশ্চিম পাশের সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন পথচারী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের পচাবহলা থেকে চিনাডুলী ইউনিয়নের ডেবরাইপেচ সড়কের ফটকের খালের ওপর ৯৬ মিটার একটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি’) দরপত্র আহ্বান করে। সেতুটি নির্মাণের জন্য ৭ কোটি ২ লাখ ৩ হাজার ৫১২ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৫ কোটি ৬৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬৫ টাকা চুক্তি মূল্যে সেতুটি নির্মাণ করেন। নির্মাণকাজ শেষে সড়ক ছাড়াই ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি সেতুটি উদ্বোধন করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির পূর্ব পাশে পাকা সড়ক রয়েছে। কিন্তু পশ্চিম পাশে কোনো সড়ক নেই। পায়ে হেঁটে চলাচল করছে মানুষ। সেতুর ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ধান ও খড়। কয়েকজন নারী-পুরুষ ধান ও খড়ের কাজ করছেন। সেতুর ওপর কেউ ধান ও খড় শুকাচ্ছেন, কেউ ধান পরিষ্কার করছেন।’
পচাবহলা এলাকার আব্দুর রাজ্জাক বলেন,সড়ক ছাড়া সেতু নির্মাণ করে কোনো লাভ হয়নি। সড়ক না থাকায় এত বড় সেতু আমাদের কোনো কাজেই আসছে না। সড়কের অভাবে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সেতুটি নির্মাণের আগে পশ্চিম পাশে সড়ক নির্মাণ করার দরকার ছিল।’
ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, অটো নিয়ে সেতুর ওপর পর্যন্ত আসা যায়। সড়ক না থাকায় যাত্রীদের সেতুর ওপর নামিয়ে দিতে হয়। যদি যাত্রীদের গন্তব্য পৌঁছে দেওয়া যেত তাহলে আমাদের উপার্জন আরও বাড়ত।’
সেতু ওপর ধানের কাজ করছিলেন কৃষক আনছার আলী। তিনি বলেন, ‘সড়ক নাই, গাড়ি যাতায়াত করে না। তাই আমরা ধানের কাজ করছি।’
ইসলামপুর উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুল হক বলেন, ‘সড়ক নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের কাজ শুরু করা হবে।’