চীনের মধ্যস্থতায় মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতি
- আপডেট সময় : ০৮:৪২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪ ২৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলা পোর্টাল: নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকেই শুরু হয় প্রতিরোধ আন্দোলন।
গেল কয়েক বছরে মিয়ানমারের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে দেশটির জাতিগত বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপ। তবে সম্প্রতি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপের একটি শক্তিশালী জোট। বলা হচ্ছে, বিরোধ মেটাতে চীনের আহ্বানের পরই তাঁরা এমন সমঝোতায় পৌঁছায়।
বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমানা রয়েছে। তাই দেশটিতে কোনো কিছু ঘটলে তার রেশও এসে পড়ে বাংলাদেশে। মিয়ানমারের সঙ্গে চীনেরও সীমানা রয়েছে। আবার মিয়ানমারে চীনের ব্যবসা রয়েছে।
এ ছাড়া চীনের রোড অ্যান্ড বেল্ট ইনিশিয়েটিভের গুরুত্বপূর্ণ রুট হচ্ছে মিয়ানমার। সব মিলিয়ে মিয়ানমার অশান্ত থাকলে আখেরে চীনই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তাই গেল শুক্রবার মিয়ানমারের প্রায় ২৫০ মাইল উত্তর-পূর্বে চীনের প্রাদেশিক রাজধানী কুনমিংয়ে সমঝোতা হয় সেনাবাহিনী ও মিয়ানমারের ৩টি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে।
চীনের সীমানাঘেঁষা শান রাজ্যে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। সেখানে চীনের স্বার্থ এবং বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
যদিও যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া সশস্ত্র একটি গ্রুপ জানায়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী চুক্তি ভঙ্গ করেছে। তারা শুক্র ও শনিবার শান রাজ্যের বিভিন্ন অবস্থানে হামলা চালিয়েছে।
গেল মাসেও একবার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল লড়াইরত গ্রুপগুলো। তবে সেটি টেকেনি। এই যুদ্ধবিরতিও টিকবে না বলে বিশ্বাস কিছু পর্যবেক্ষকের।
এদিকে উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যসহ সীমান্ত এলাকায় তথাকথিত ‘পিগ বুচারিং’ নিয়ে চীনের উদ্বেগ বাড়ছে। এই রাজ্যে চীনের অপরাধী সংগঠনগুলো অবৈধ ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড চালায়।
তারা চীনা কর্মীদের টার্গেট করে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মিয়ানমার, কম্বোডিয়া বা লাওসে দাস-দাসী হিসেবে বিক্রি করে দেয়। এমনকি বিশ্বের অন্য দেশের মানুষকে সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ লুটে নেয়। তাই শান রাজ্যের এসব কার্যক্রম বন্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং সশস্ত্র গ্রুপদের চাপ দিয়ে যাচ্ছে চীন।’
সশস্ত্র গ্রুপগুলোর জন্য শান রাজ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রাজ্যটি চীনের লাগোয়া হওয়ায় অস্ত্র, মেডিকেল কেয়ার ও অর্থের জোগান নিশ্চিত করতে পারে সশস্ত্র গ্রুপগুলো।
চীনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বাণিজ্যিক এই পয়েন্টের নিয়ন্ত্রণ এখনো মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে। তবে প্রতিরোধ বাহিনী সেনাবাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে।
এই রাজ্য ঘিরে চীনের আগ্রহের বড় একটি কারণ হচ্ছে এখানে শত শত কোটি ডলারের পাইপলাইন বসাচ্ছে বেইজিং। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে পাইপের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস পৌঁছানোর জন্য শানের বিকল্প নেই।
এশিয়ার বিভিন্ন দেশ, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট রুট মালাক্কা প্রণালির অভিগম্যতার জন্য চীন মিয়ানমারের ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে চীনের জ্বালানি সরবরাহের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজের স্বার্থ রক্ষায় কারও না কারও ওপর ভরসা করতেই হবে চীনকে।’