ঢাকা ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এনায়েতপুরে শহীদদের স্মরণে ২নং স্থল ইউনিয়নে দোয়া ও আলোচনা সভা  সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন সাজাপ্রাপ্ত সেই প্রধান শিক্ষক আফছার আলী দূর্গা পূজাকে ঘিরে ব্যস্ত রাউজানের প্রতিমা শিল্পীরা  নারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার গোপন কক্ষটি গোপন ছিল না দায়িত্ব গ্রহণের আড়াই ঘন্টা পর রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ প্রেমিকার টাকা স্বর্ণলংকার হাতিয়ে নিয়ে ফ্লাইওভার থেকে ফেলে হত্যা  এনায়েতপুরে আগামী ২১শে সেপ্টেম্বর বিএনপির স্মরণ সভাকে সফল করতে প্রস্তুতিমূলক সভা  সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য হলেন ২৫ গণমাধ্যম কর্মী রাজনৈতিক দলের সাথে মামলায় জড়িয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি না করার আহবান

ভূঞাপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলায় পরীক্ষা দিতে পারেনি ২২ পরীক্ষার্থী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:০৮:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪ ৪৭ বার পড়া হয়েছে

জহুরুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও এক শিক্ষকের প্রতারণার কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি ২২জন পরীক্ষার্থী।

রবিবার (৩০ জুন) সকালের পরীক্ষা শুরুর আগে নিকরাইল শমশের ফকির ডিগ্রী কলেজের ২২জন পরীক্ষার্থী বিক্ষুব্ধ হয়ে নিকরাইলের পলশিয়া রানী দীনমনি উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে গিয়ে আন্দোলন ও ভাঙচুর করতে থাকে। পরে পুলিশের সাথে পরীক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিনা কারণে পুলিশের সদস্যরা পরীক্ষার্থীদের মারপিট করেছে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় কেন্দ্রের বাইরে গেটে দাড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় অভিভাবকরাও কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থীদের শান্তনা দিচ্ছেন আর দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবী জানাচ্ছেন।

জানা গেছে, উপজেলার নিকরাইল শমসের ফকির ডিগ্রী কলেজ কর্তৃপক্ষ এইচএসসি পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত টাকার চেয়ে বাড়তি টাকা দাবী করে। এতে অনেক শিক্ষার্থী বাড়তি টাকা দিতে অস্বীকার করে। পরে পরীক্ষার্থীরা ওই কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেন এই সুযোগে ২২জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩হাজার টাকা নেয় ফরম পূরণের জন্য। কিন্তু পরবর্তিতে ওই শিক্ষার্থীদের বোর্ড থেকে কোন রেজিস্ট্রেশন কার্ড বা প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি শিক্ষার্থীদের। গতকাল শনিবার (২৯জুন) ২২জন পরীক্ষার্থী কলেজে গিয়ে প্রবেশপত্র নিতে গেলে তাদের ফরম পূরণ হয়নি বলে জানিয়ে দেয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক লোকমান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি।

শমসের পরীক্ষা ডিগ্রী কলেজ থেকে নিয়মিত ও অনিয়মিত মিলিয়ে এই পলশিয়া রানী দীনমনি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষায় ১৭১ জন অংশগ্রহণ করেছে।

এঘটনায় প্রবেশপত্র বাতিল হওয়া পরীক্ষার্থীরা সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রে গিয়ে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করে। পরে কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সাথে পরীক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি প্রশাসনের আশ্বাসের পর পরীক্ষার্থীরা আন্দোলন শেষ করে কেন্দ্র ত্যাগ করে।

পরীক্ষার্থীরা জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবীকৃত ৮ হাজার টাকা দিতে না পারায় ফরম পূরণ করেনি। পরে কলেজের বাংলা প্রভাষক লোকমানের মাধ্যমে ফরম পূরণ করে জালিয়াতির শিকার হয়েছি। টাকা দিয়েও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারলাম না। আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকের প্রতারণার কারণে। আমরা যেকোন মূল্যে পরীক্ষা দিতে চাই।

শমসের ফকির ডিগ্রী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেন বলেন, ওই ২২জন শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ হয়েছে। সকল প্রমাণপত্র আমার কাছে রয়েছে। কিন্তু গতকাল রাতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বোর্ডে ফোন করে ২২জন পরীক্ষার্থীর ফরম বাতিল করেছেন। তবে শমসের ফকির ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আক্তারুজাজামান জানান, পরীক্ষার্থীরা কলেজে কোন যোগাযোগ করেনি। অনেক শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ফরম পূরণ করা হয়েছে। বাড়তি ফি নেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সত্য না।

ভুঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, পরীক্ষা দিতে না পারা শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কেন্দ্রে আন্দোলন

করে। পরে কেন্দ্র অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ জানান, ২২জন পরীক্ষার্থী কলেজ কর্তৃপক্ষের অগোচরে এবং অবৈধভাবে এইচএসসি ফরম পূরণ করা হয়েছে বলে কলেজ অধ্যক্ষ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে বোর্ড কর্তৃপক্ষ ওই ২২জন পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ বাতিল করায় তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ভূঞাপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলায় পরীক্ষা দিতে পারেনি ২২ পরীক্ষার্থী

আপডেট সময় : ০৮:০৮:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

জহুরুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও এক শিক্ষকের প্রতারণার কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি ২২জন পরীক্ষার্থী।

রবিবার (৩০ জুন) সকালের পরীক্ষা শুরুর আগে নিকরাইল শমশের ফকির ডিগ্রী কলেজের ২২জন পরীক্ষার্থী বিক্ষুব্ধ হয়ে নিকরাইলের পলশিয়া রানী দীনমনি উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে গিয়ে আন্দোলন ও ভাঙচুর করতে থাকে। পরে পুলিশের সাথে পরীক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিনা কারণে পুলিশের সদস্যরা পরীক্ষার্থীদের মারপিট করেছে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় কেন্দ্রের বাইরে গেটে দাড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় অভিভাবকরাও কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থীদের শান্তনা দিচ্ছেন আর দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবী জানাচ্ছেন।

জানা গেছে, উপজেলার নিকরাইল শমসের ফকির ডিগ্রী কলেজ কর্তৃপক্ষ এইচএসসি পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত টাকার চেয়ে বাড়তি টাকা দাবী করে। এতে অনেক শিক্ষার্থী বাড়তি টাকা দিতে অস্বীকার করে। পরে পরীক্ষার্থীরা ওই কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেন এই সুযোগে ২২জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩হাজার টাকা নেয় ফরম পূরণের জন্য। কিন্তু পরবর্তিতে ওই শিক্ষার্থীদের বোর্ড থেকে কোন রেজিস্ট্রেশন কার্ড বা প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি শিক্ষার্থীদের। গতকাল শনিবার (২৯জুন) ২২জন পরীক্ষার্থী কলেজে গিয়ে প্রবেশপত্র নিতে গেলে তাদের ফরম পূরণ হয়নি বলে জানিয়ে দেয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক লোকমান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি।

শমসের পরীক্ষা ডিগ্রী কলেজ থেকে নিয়মিত ও অনিয়মিত মিলিয়ে এই পলশিয়া রানী দীনমনি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষায় ১৭১ জন অংশগ্রহণ করেছে।

এঘটনায় প্রবেশপত্র বাতিল হওয়া পরীক্ষার্থীরা সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রে গিয়ে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করে। পরে কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সাথে পরীক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি প্রশাসনের আশ্বাসের পর পরীক্ষার্থীরা আন্দোলন শেষ করে কেন্দ্র ত্যাগ করে।

পরীক্ষার্থীরা জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবীকৃত ৮ হাজার টাকা দিতে না পারায় ফরম পূরণ করেনি। পরে কলেজের বাংলা প্রভাষক লোকমানের মাধ্যমে ফরম পূরণ করে জালিয়াতির শিকার হয়েছি। টাকা দিয়েও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারলাম না। আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকের প্রতারণার কারণে। আমরা যেকোন মূল্যে পরীক্ষা দিতে চাই।

শমসের ফকির ডিগ্রী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেন বলেন, ওই ২২জন শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ হয়েছে। সকল প্রমাণপত্র আমার কাছে রয়েছে। কিন্তু গতকাল রাতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বোর্ডে ফোন করে ২২জন পরীক্ষার্থীর ফরম বাতিল করেছেন। তবে শমসের ফকির ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আক্তারুজাজামান জানান, পরীক্ষার্থীরা কলেজে কোন যোগাযোগ করেনি। অনেক শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ফরম পূরণ করা হয়েছে। বাড়তি ফি নেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সত্য না।

ভুঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, পরীক্ষা দিতে না পারা শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কেন্দ্রে আন্দোলন

করে। পরে কেন্দ্র অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ জানান, ২২জন পরীক্ষার্থী কলেজ কর্তৃপক্ষের অগোচরে এবং অবৈধভাবে এইচএসসি ফরম পূরণ করা হয়েছে বলে কলেজ অধ্যক্ষ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে বোর্ড কর্তৃপক্ষ ওই ২২জন পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ বাতিল করায় তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।