টেকনাফের দমদমিয়াতে নব্য সিন্ডিকেটের বেপরোয়া চোরাচালান : মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসছে নতুন রোহিঙ্গা
- আপডেট সময় : ০৮:৩৪:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪ ৫৭৭ বার পড়া হয়েছে
কক্সবাজার প্রতিনিধি।
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাচালান ও মাদক ও পাচার চক্রের নব্য সিন্ডিকেট। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সীমান্তে চোরাচালান চক্রের শক্তিশালী বলয় গড়ে তুলেছে তারা। মিয়ানমারে চলছে অভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধ যার কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতিনিয়ত মিয়ানমার থেকে টাকার বিনিময়ে নৌকা করে নিয়ে আসছেন রোহিঙ্গা, ইয়াবা, অস্ত্র, স্বর্ণ, ইত্যাদি। এমনকি প্রতিজন রোহিঙ্গার কাছ থেকে বিনিময়ে নিচ্ছে ১১ হাজার টাকা করে।
সম্প্রতি এমন একটি যুব সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে
উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নে দমদমিয়া এলাকায় তারা হলেন- আব্দু মালেকের ছেলে ফয়সাল, সোনা মিয়ার ছেলে জসিম, নুরুল আলমের ৩ ছেলে আমির খাঁন, রায়হান, রুবেল সহ ১০/১২ একটি বিশাল যৌব সিন্ডিকেট। তারা প্রতিদিন সন্ধ্যার পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সালামত উল্লাহ, কেবায়ত উল্লাহ ও মুক্তারকে দিয়ে মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসে রোহিঙ্গা ও মাদক। এবং দমদমিয়া এলাকার হোসেন আহমদে বাড়ির পিছন থেকে মিয়ানমারে যাতায়াত করে নৌকা যুগে।
উক্ত চোরা কারবারিদের হাতে অবৈধ অস্ত্র ও দা কিরিচ নিয়ে বিভিন্ন মুদির দোকান ও তেলের পেট্রোল পাম্প হয়তে ডাম্পার, নোহা, মাইক্রো, সিএনজি, অটোরিকশা যোগে খাদ্য পণ্য ও মালামাল বহন করে অবৈধ অস্ত্রের পাহারায় তাদের গন্তব্য নিয়ে যাই, এবং সেখান থেকে তাদের নিজস্ব নৌকা যোগে মিয়ানমারে পাচার করেন।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক দমদমিয়ার স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন- তারা প্রতিরাতে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা, মাদক ও বাংলাদেশ থেকে খাদ্যপণ্য পাচার করে। এলাকায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস করেনা। এমনিতে আমাদের দেশে চলছে খাদ্যের সংকট। নতুন করে আবার যদি তারা গুটিকয়েকজন সিন্ডিকেট রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আমাদের দেশের আরো ক্ষতি হবে। তাই দ্রুত সময়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল ও আমির খাঁন সহ অভিযুক্তদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগগুলো তারা অস্বীকার করেন এবং সত্য নয় বলে জানান।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’এন্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী বলেন, যে সমস্ত পাচারকারীরা আছে তাদেরকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যখনই যেখানে সংবাদ পাচ্ছি তখনই তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান- সীমান্তে মাদক, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বিজিবি। সঠিক তথ্য দিলে সহযোগিতা করুন আমরা তাদের বিরুদ্ধে নানক ব্যবস্থা নেব।
এদিকে তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, টেকনাফ উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে নৌকা ও ট্রলারের মাধ্যমে পাচার করা হচ্ছে ভোগ্যপণ্য সামগ্রী। নিয়মিত পাচার কার্যক্রমের পয়েন্ট গুলো হচ্ছে- টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন বাহারছড়া ইউনিয়নের শাপলাপুর, কচ্ছপিয়া, জাহাজপুরা, শীলখালী, নোয়াখালী, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লম্বরী, তুলাতলি, রাজার ছড়া, মিঠাপানির ছড়া, মহেষখালীয়াপাড়া, বরই তলী, কেরুন তলী, সাবরাং ইউপির কাটাবুনিয়া, খুরেরমুখ, হারিয়াখালী, শাহপরীরদ্বীপের উত্তর পাড়া, মাঝের পাড়া, পশ্চিম পাড়া, মিস্ত্রী পাড়া, ঘোলা পাড়া জালিয়া পাড়া। পাশাপাশি নাফনদীর উপকুল সংলগ্ন হ্নীলা, জাদিমুড়া, মোছনী, দমদমিয়া, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়া পাড়া,নাইট্যং পাড়া সহ পয়েন্ট দিয়ে মাদক ও মানব পাচারে জড়িত সিন্ডিকেটের সদস্যরা বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।###